আকাশনীল ও
সবুজকুমার দুই বন্ধু একই পাড়ায় থাকে এবং দুজনে একই শ্রেণীতে পড়াশুনা করে। একদিন
সবুজ কুমার আকাশ নিলের বাড়ী এসে বলে তুই তোর ক্যালকুলেটর-টা আমাকে একটু দিবি?
- নীল উত্তর দিল ক্যালকুলেটর?
- সবুজ বলল হ্যাঁ, আমি
কয়েকটা অংক করে কালকে তোকে দিয়ে যাব।
- নীল বলল না, আমি আমার
কেলকুলেটর কাউকে দিই না । নীলের মা ওদের দুই জনার কথা শুনছিল, তখন
নীলের মা নীলকে বলল, তুমি তোমার ক্যালকুলেটর-টা সবুজকে
দাও । কেউ যদি দরকারে কোন জিনিস চায় আর তা যদি আমাদের কাছে থাকে তাহলে সেটা আমাদের
দেওয়া উচিৎ।
- নীল বলল কেন দেওয়া উচিৎ? তখন
নীলের মা নীল ও সবুজকে নিজের দুদিকে বসিয়ে বলল আয় তোদের আজ আমি একটা গল্প বলি
-
একবার একটা পিঁপড়ে পাহাড়ের গা ঘেঁষে যাচ্ছিল
যেতে যেতে পিছলে পাহাড়ের নিচে বয়ে যাওয়া নদীতে গিয়ে পড়ল, অনেকক্ষণ
ধরে বাইরে বেরনোর চেষ্টা করতে লাগল কিন্তু
কিছুতেই পারছিল না । ঠিক সেই সময় পাহাড়ের গায়ে একটি গাছে বসে একটা বুলবুলি পাখি সব
দেখছিল তখন সে গাছ থেকে নিজের ঠোটে একটি পাতা তুলে সেটাকে নিয়ে ঐ পিঁপড়ের সামনে
রেখে দিল, তারপর পিঁপড়েটা পাতাটার উপর উঠে পড়ল ও ভাসতে
ভাসতে নদীর তীরে গিয়ে উঠল ও বুলবুলি পাখিটা কে মনে মনে ধন্যবাদ জানাল । কিছুদিন
পরে পিঁপড়েটা দেখল সেই বুলবুলি পাখিটা একটা গাছে বসে ঘুমোচ্ছে তখন একটি ছেলে
পাখিটাকে মারার জন্য হাতে গুলতি দিয়ে নিশানা লাগাচ্ছে, তখন
সে আস্তে আস্তে ছেলেটির কাছে গিয়ে ছেলেটির পায়ে জোরে কামড়ে দিল। হঠাৎ পিঁপড়ের
কামড়ে ছেলেটি ওরে বাবা রে বলল আর সঙ্গে সঙ্গে তার হাত থেকে গুলতিও পড়ে গেল, ছেলেটির
আওয়াজ শুনতে পেয়ে বুলবুলি পাখিটিও গাছ থেকে উড়ে গেল আর এইভাবে পাখিটাকে ছেলেটির
হাত থেকে বাঁচাল। তারপর নীলের মা হেঁসে বলল এবার বুঝলি তো – অন্যের উপকার কেন করা
উচিৎ ! ওরা দুজনেই একসঙ্গে বলল হ্যাঁ, হ্যাঁ
বুঝেছি । তারপর নীল নিজের কেলকুল্যাটারটা সবুজ কুমার কে দিল, সেটা
নিয়ে সবুজ কুমার খুশী হয়ে বাড়ী ফিরল ।
লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন ।
লেখিকার পরিচিতি ঃ-
জন্ম বিহারের কিশানগঞ্জ । প্রাথমিক থেকে স্নাতকোত্তর কিশানগঞ্জেই । আঞ্চলিক
বার্ষিক পত্রিকা, উত্তরবঙ্গ সংবাদে অনুগল্প, ছোট গল্প লেখালেখি করেন । সঙ্গীত, বই পড়া, ভ্রমণ ও আধ্যাত্মিকতায় রুচিশীল এবং কুসংস্কার বিরোধী ।