ধারাবাহিক উপন্যাস – প্রতি বৃহস্পতিবার ।
পর্ব-- ৪২
I hear as
in a dream
The
conversation of the old wives
Speaking of Womanhood.
I
remember that I heard nothing myself.
I was
alone.
I waited
like a target.
রূপালী আর সপ্তর্ষি। হাত ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছিল শীত
উৎসবে। রূপালী আর সপ্তর্ষি-একে অন্যকে খাইয়ে দিচ্ছিল জন্ম দিনের কেক। রূপালী আর সপ্তর্ষি একসাথে দুর্গাপুজোর ধুনুচি
নৃত্যে নাচছিল ঢাকের তালে তালে। রূপালী
আর সপ্তর্ষি ছেলেকে রেসিডেন্সিয়াল স্কুলে
ছাড়তে গেল সিমলা--লং ড্রাইভে। রূপালী আর সপ্তর্ষি ২০ তম বিবাহবার্ষিকীতে বিশাল
পার্টি থ্রো করলো--। রূপালীর সাউথ দিল্লির বুটিকের
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নারকেল
ভেঙ্গে মন্ত্র উচ্চারণ করল সপ্তর্ষি।
রূপালী!
আবার মুঠোফোন বেজে উঠল। বাভ্রবি গাড়ি ড্রাইভ করার সময়
কল এটেন্ড করে না। সুতরাং তুলল না।
রাস্তায় যানজট। এরই মধ্যে অনেকে এলবোয়িং
করে ঢোকার চেষ্টা করছে। হাসি পেলো
বাভ্রবির। কোন এক বিখ্যাত লেখক,খুব
সম্ভবত রাস্কিন বন্ড
কোথায় যেন মজা করে লিখেছিলেন-"ডেলহি ইজ দ্য সিটি অব
এলবোয়িং।" পেছন থেকে এক
মহিলা -হাতে সিগারেট, অনবরত হংকিং করছেন--আশ্চর্য। সিগনাল রেড! তা সত্ত্বেও এতো জোরে জোরে
হংকিং। বিদেশের যাবতীয় আচার,ভাষা
অনুকরণ করে যারা,তারা
বিদেশের এই আচরণটা জানে না যে অযথা হংকিং কোন ও
সভ্য দেশের মটোরিষ্টরা করেনা। রেড সিগনাল গ্রীন
হতেই যেন পড়ি মরি করে সবার যাত্রা শুরু।--"কেবা আগে প্রাণ করিবেন দান-"
--"ডিসগাষ্টিং।"
সত্যি!দিল্লিতে গাড়ি চালাতে গেলে মন মেজাজ
ঠিক রাখাই মুশকিল।!
এটুকুই পথ। তবু যেন শেষ হতেই চায় না।
রূপালী আর সপ্তর্ষির ভালবেসে বিয়ে। বিয়ের পর পরই দুজনে দীর্ঘ দিন কাটিয়েছে রাশিয়ায়।
--:রাশিয়া?"
বাভ্রবি একটু অবাকই হয়েছিল।
--"হ্যাঁ
বৌদি,মস্কো তে ছিলাম। তখন তো সোভিয়েত
ইউনিয়ন।
বাভ্রবি আবার আনমনা। আবার
রেড লাইট! একগুচ্ছ বই হাতে কিশোর
মুখ গাড়ির বন্ধ কাঁচের
জানালায়!
--"ম্যাডামজী
এক কিতাব লে লো না!"
পলকেই কিশোর
মুখটি যেন রূপান্তরিত
রামদীনের মুখে।
--"ম্যাডাম জী--"ততক্ষণে
রেড গ্রীনে পরিণত। পেছনে হংকিং--বাভ্রবি এক্সিলেটারে পা রাখে--
রূপালী এবং সপ্তর্ষি। এই দুই
মনোরম জুটির সঙ্গে বাভ্রবির আরও একটি দৃঢ়তম বন্ধন--বাভ্রবির মত ওদের
ও শৈশব, কৈশোর এবং যৌবনের শুরুটা কেটেছে শৈল শহর শিলং এ।
-"জানেন তো
বৌদি আমাদের একদম পাশাপাশি বাড়ি
ছিল।"
--"শিলং-এর কোথায় রে?:
--"লাইটু
মুখরা-"
--"তোমাদের প্রেম পর্বের
সূচনা কোথায় এবং কিভাবে?"
বাভ্রবির গুরুগম্ভীর
প্রশ্ন শুনে খিলখিল হেসে উঠেছিল রূপালী।
--"কে প্রথম
ভালবেসেছে?"
সপ্তর্ষি দীর্ঘ শ্বাস চেপে গম্ভীর গলায় বলেছে
--"আর কে
বৌদি? রূপালী নামের একটি ১৫ বছরের কিশোরী--বলে কিনা-এই তুই আমাকে ভালবাসবি কিনা বল-নইলে
এই আমি আমার হাতের শিরা কেটে সুইসাইড করছি আর চিঠিতে তোর নাম লিখে রাখছি। তারপর আর পড়াশোনা করতে হবে
না--জেলে পচে মরবি!"
--"তবে রে
মিথ্যুক। এই কথাগুলো আমি বলেছিলাম না তুই
বলেছিলি?" হাতের মুঠো পাকিয়ে তেড়ে
গিয়েছিল রূপালী--আর দুটি ক্রৌঞ্চ মিথুনের
ভালবাসা দেখতে দেখতে মুগ্ধ হয়েছিল
বাভ্রবি।
--"তোমরা কি
পালিয়ে বিয়ে করেছিলে?"
কৌতুক চোখে তাকিয়ে
প্রশ্ন করেছিল বাভ্রবি। গল্প হচ্ছিল
রূপালী আর সপ্তর্ষিদের আবাসিক বাড়ির বাগান বারান্দায়। বাগান বারান্দা নামটি বাভ্রবিই বলেছিল মজা করে। এতো
সুন্দর করে বারান্দায় বাগান করেছে রূপালী--
সপ্তর্ষি
বলেছিল--"আমার মত বিনেপয়সার মালী
পেয়েছিল তাই--!"
--"আহা! সব
প্লান তো আমার। শুধু এই খুরপি--"
কৃত্রিম দীর্ঘশ্বাস
ফেলে সপ্তর্ষি বলেছিল
--"মালকিনের হুকুম তামিল
করতে মালীকে তো খুরপি ধরতেই
হয়।"
রূপালী ভেংচি কেটে-"আহা! কত আমার হুকুম তালিম করেন এই মালী--"
বাভ্রবি হাসতে হাসতে
বলেছিল--"তা কেন,সপ্তর্ষি,তুমি
রূপালীর সামনে নতজানু হয়ে বলবে--'আমি তব
মালঞ্চের হব মালাকর।"
সম্মিলিত হাসিতে ভরে উঠেছিল সেই সন্ধ্যারাগে
সজ্জিত বাগান-বারান্দা!
ক্রমশ …………
৪৩তম পর্ব পড়ুন আগামী বৃহস্পতিবার
লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন ।
লেখিকার পরিচিতি
–
জন্ম-কলকাতায় । আসামের বরাক উপত্যকায় বড় হয়ে ওঠা ।
প্রকাশিত
গ্রন্থ
১--সাপ শিশির
খায় (গল্প গ্রন্থ)
২--দেবী দহন--(কবিতা গ্রন্থ)
ভারতবর্ষ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ।