Advt

Advt

ek-manda-meyer-kahini-galpo-story-7thpart-by-nityaranjan-debnath-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-এক-মন্দ-মেয়ের-কাহিনি

ধারাবাহিক উপন্যাস

ek-manda-meyer-kahini-galpo-story-7thpart-by-nityaranjan-debnath-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-এক-মন্দ-মেয়ের-কাহিনি
৭ম পর্ব

(  সাত। )

সেদিন বিকেলেই অলোকা রেস্টুরেন্টে অলকেশকে আসতে বলল। বিকেলের টিউশনিতেও গেল না। ব্যাপারটা যতক্ষণ না ফাইনাল হচ্ছে কোনও দিকেই মন বসানো সম্ভব না। ঠিক পাঁচটায় অলকেশ এল অন্য বেশে।  জম্পেশ পায়জামা-পাঞ্জাবিতে দারুন লাগছিল। প্যান্ট- শার্ট পরাতেই দেখে এসেছে এতদিন। নায়কের চেহারা, যা পরবে তাতেই দুর্দান্ত

---তোমাকে কিন্তু দারুন লাগছে। মনে হচ্ছে আজই বিয়ে করতে যাচ্ছ?

----- আরে, আজ না হয় কাল, বিয়ে তো করবোই। তার আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে না? বল, তোমার খবর বল।

মেয়েটি সোজাসুজি অলকেশকে বাড়ির কথাটা জানাল। ক্ষনিকের মধ্যেই মুখের অবয়ব অন্যরকম। হাসি খুশি ভাবটাই উধাও। কেমন গম্ভীর হয়ে গেল। কয়েক মিনিট কথাই বলল না। তাতেই মেয়েটির মন বিগড়ে গেলযাই করুক আত্মসম্মান বিকিয়ে দিয়ে বিয়ে করতে সে রাজি নয়। ওকে ছেড়ে থাকতে একটু কষ্ট হবে তবু মান-মর্যাদা আগে। অলকেশের কী পাওনা-গন্ডার আশা ছিল? না হলে থমকে গেল কেন? তার যে বাবা-মা নেই, জ্যাঠা-কাকাদের কাছে মানুষ সে কথা আগেই জানিয়েছিল। অবজ্ঞা,অবহেলার মধ্যে যে বড় হয়েছে সে কথা ইচ্ছে করেই গোপন রেখেছে। এমন কি আলাদা থাকে, রান্না করে খায়, টিউশনি করে খরচ চালাতে হয়--- সেকথাও বলার প্রয়োজন বোধ করে নি। তাহলে কী মানুষ চিনতে ভুল করলো? এরমধ্যে আট-দশ মিনিট অতিক্রান্ত। দুজনেই বোবা। কতক্ষণ মৌন বসে থাকা যায়। মেয়েটিই জিজ্ঞেস করল,

" কি হলো? তুমি কেমন মনমরা হয়ে গেলে মনে হচ্ছে?"

অলকেশ বলল," না না, মনমরা নয়। একটু চিন্তা তো হলই। তাহলে আমাকে একটা বিয়েবাড়ি ভাড়া করতে হবে। আমি অবশ্য ফুলশয্যার জন্য একটা হোটেল বুকিং করে রেখেছি। ভাবছি একদিনেই সব সেরে ফেলব।"

মেয়েটির যেন প্রাণ ফিরে এল। কয়েক মিনিটের মধ্যে কতকিছু ভেবে ফেলেছে। ছি ছি ! ভাগ্যিস প্রকাশ করে নি। আসলে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে ঠোক্কর খেয়ে খেয়ে বড় হয়েছে। তাই নেগেটিভ ভাবনাটাই আগে আসে। তার দৃঢ়চেতা মন বলছে অলকেশ এমন করতে পারে না, পরক্ষণে সেই মন অন্য কথা আওড়াচ্ছে। লজ্জা ! লজ্জা !

মেয়েটি বলল," অত জাঁকজমক করার কি কোনও মানে আছে? ছোটখাটো একটা অনুষ্ঠান করলেই তো হয়।"

"তুমি যদি বল তাই হবেকর্ত্রীর  ইচ্ছায় কর্ম। একজন পুরুত ডেকে চার-পাঁচজন বন্ধু মিলে শুভ কাজটা হয়ে যাক। পরে না হয় বড়সড় একটা পার্টি দেওয়া যাবে। কি বলো? দিনটা কবে ঠিক করবো বল?"

" সে তুমিই ঠিক করোঅফিসে ছুটি নেওয়ার ব্যাপার আছে। অন্তত সাত দিনের লিভ তো নিতেই হবে।"

"সে তুমি ভেবোনা। বিয়ে বলে কথা। ছুটি গ্র্যান্ট হবেই। ভাবছি এক মাসের ছুটি নিয়ে নেব। হানিমুন সেরে অফিস জয়েন। কি বলো? খারাপ বললাম?"

"তাহলে তো খুবই ভালো হয়। তাই করো। এক মাস ছুটি নিয়ে নাও।"

 রেস্টুরেন্টে ওরা কষা মাংস, তন্দুরি রুটি ও সব শেষে একটি করে কোল্ড ড্রিংকস খেয়ে বেরিয়ে এল।  রেস্টুরেন্টে  বসেই পুরোহিতের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে জেনে নিল আগামী বুধবার সন্ধে ছ'টা থেকে সাতটার মধ্যে একটা ভালো সময় আছে। সেই সময়টাকেই কাজে লাগাবে। সিদ্ধান্ত ফাইনাল করে যে যার বাড়ির দিকে পা বাড়াল।

রাতে শুয়ে শুয়েও মেয়েটির ঘুম আসছিল না। কি নিয়ে ভাবছে বলা মুশকিল। বিক্ষিপ্ত ভাবনা। যা  না ভাবলেও চলে। তবু এসে যায়। মাকে তো বেশি করে মনে পড়ে, এছাড়া এই বাড়ির কথাও ভাবছে। বরকে সঙ্গে নিয়ে কোনোদিনই এই বাড়িতে আসতে পারবে না। বরকে অপমান করলে কি করে সইবে? তবু বাড়ির অধিকার কোনো মতেই ছাড়বে না। ভদ্র, শিক্ষিত, রুচিশীল কোনো ব্যক্তিকেই এই বাড়িতে আনা যায় না। অবাক হয়ে শুধু ভাববে তুমি এই পরিবেশে থাকো কি করে? ক'দিন ধরেই এই চলছে। নানা রাজ্যের কথা ভাবতে ভাবতে শেষ রাতের দিকে ঘুমটা আসে। ফলে সকালের টিউশনিগুলো যথারীতি কামাই। অবশ্য গিয়েই আর কি হবে?

বিয়েটা নির্বিঘ্নে হয়ে গেল। জাঁকজমকের দিকেই যায়নি তারা। নামমাত্র অনুষ্ঠান । একটি হোটেলে পাঁচ বন্ধু, বোন ইলা এবং পুরোহিত। সাত জনের উপস্থিতিতে জীবনের স্মরণীয় শুভকাজটি সম্পন্ন হয়ে গেল। সকলেই অলকেশের আন্তরিক বন্ধু। মজাদার, সুন্দর ব্যবহার। সর্বোপরি অলকেশের হিতাকাঙ্খী। একে অপরের জন্য জান দিতে প্রস্তুত---এতটাই বন্ধুত্বের অটুট বন্ধন। মালা বদল, সিঁদুর দান এবং সংক্ষিপ্ত মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে বিয়ের কাজ শেষ হয়। সামাজিক লৌকিকতা নিয়ে এরা কেউ ভাবিত নয়। মনের মিলই আসল।

মেয়েটির কাছে এসব যেন স্বপ্ন। ছোট বেলায় খুব স্বপ্ন দেখতো। আকাশে উড়ে উড়ে বেড়াবে। একটু বড় হয়ে সেসব ইচ্ছেকে দমন করেছে। গরিবের ঘোড়া রোগ ভালো নয়। এখন যেন সেই বাল্যকালের স্বপ্নগুলো বাস্তবে পরিণত হতে চলেছে। বন্ধুরাই হানিমুনের টিকিট কেটে দিল। ভাবা যায়। বিয়ের তিন দিন পর দমদম বিমান বন্দর থেকে প্লেনে করে প্রথম গেল দিল্লি। উড়ে উড়ে চলে এল। স্বপ্ন নয় বাস্তব। দিল্লির এক রাজকীয় হোটেলে তিন দিন কাটাল। তারপর গেল দেরাদুন। সে আর অলকেশ। স্বপ্নের রাজা যেমন পেয়ে গেছে তেমনি স্বপ্নের দেশ।তার মত সুখী কে আছে পৃথিবীতে?  দেরাদুনে দু'দিন কাটিয়ে চলে এল আগ্রার তাজমহল দেখতে। যা এতকাল বইতেই পড়েছে। নিজের চোখে দেখবে কল্পনা করেছিল কি?  যার নিজের জেলা থেকে পাশের জেলায় যাওয়ার সুযোগ হয় নি তার কাছে কেমন লাগবে সহজেই অনুমেয়। মেয়েটি স্বামীর সঙ্গে যেন রূপকথার দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

ek-manda-meyer-kahini-galpo-story-7thpart-by-nityaranjan-debnath-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-এক-মন্দ-মেয়ের-কাহিনি


আগ্রায় ওরা একটি বিলাসবহুল হোটেলে উঠেছিল। দ্বিতীয় দিনে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে গেল। অকল্পনীয় ঘটনা। মেয়েটি জীবনে কোনোদিন ওয়াইন অর্থাৎ মদ বস্তুটি কি চোখেও দেখে নি। শুনেছে নেশার জিনিস--ঐটুকুই। এবার হানিমুনে এসে চাক্ষুস দেখা শুধু নয় তার স্বাদও পেয়ে গেছে। ভালোবাসার মানুষটি যদি আদর করে খাওয়াতে চায় প্রত্যাখ্যান করে কি করে? রোজই এক পেগ, দু'পেগ করে করে তিন-চার পেগ করে খেয়ে নিচ্ছে। খেতে বিস্বাদ হলেও ডোজ বাড়তে বাড়তে কপোত-কপোতির আদর, চুম্বনের মাত্রাও সমান তালে বাড়ছে। ভালোবাসার ভেলায় ভাসছে। এর মধ্যেই এক রাতে অলকেশের বন্ধু এসে হাজির। অবাঙালি। ততক্ষণে তাদের চার পেগ ফিনিস। নেশার ঘোরে ঢুলছে। বন্ধুটি এল রাত নটা নাগাদ। সেও আসরে যোগ দিল। তারপর কি করে যে কি হলো মেয়েটি কিছুই মেলাতে পারছে না।

নেশার ঘোরে বেহুশ। ভোর চারটের সময় ঘুম ভাঙতেই মেয়েটি হতভম্ব ! দুটি নগ্ন নর-নারী জড়াজড়ি করে বিছানায় শুয়ে আছে। মেয়েটি কখন স্বামীর বন্ধুটিকে আঁকড়ে ধরেছে, ভাবতেই সারা শরীর কেঁপে উঠছে। এ কী করে সম্ভব? দ্রুত নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে নাইটি পরে নিল। আরো আশ্চর্য অলকেশ ঘরের মধ্যে নেই। অজানা এক ভয়ে শরীরের শক্তি যেন নিঃশেষ। ঠিকমত দাঁড়াতে পর্যন্ত পারছে না। কোথায় গেল অলকেশ ! বাথরুমে দেখল,নেই। এদিকে অপরিচিত এক পুরুষ সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় বিছানায় শুয়ে আছে। ঘুমের ঘোরে অচৈতন্য। এ দৃশ্য দেখা যায় না। মেয়েটি একটি চাদর দিয়ে মানুষটাকে ঢেকে দিল।আতঙ্কে চলতেই কষ্ট হচ্ছে। তখনই খেয়াল হল,পাশেই আরেকটি রুম আছে। হ্যাঁ ঠিক তাই। পাশের ঘরে অলকেশ দিব্যি ঘুমোচ্ছে। জোর ধাক্কা দিল।

"কি ব্যাপার? তুমি এখানে একা একা ঘুমোচ্ছ?"

অলকেশ ঘুম চোখে বলল,"  কি করবো? তুমি দেখছি ওর সঙ্গে সেক্স করতে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। আমি কি করে থাকি বলো? নিজের স্ত্রী অন্যের সঙ্গে যদি এমন করে দেখা সম্ভব? তাই এই ঘরে এসে শুয়ে পড়লাম।"

"একদম বাজে কথা বলবে না। যাকে চিনি না জানি না তাকে নিয়ে এমন কথা বলতে পারলে?"

"বিশ্বাস হচ্ছে না তো? এই দেখো, তুমি নিজে চোখেই দেখো" বলেই অলকেশ মোবাইলের ভিডিও করা ছবি চোখের সম্মুখে মেলে ধরল।

ek-manda-meyer-kahini-galpo-story-7thpart-by-nityaranjan-debnath-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-এক-মন্দ-মেয়ের-কাহিনি


মেয়েটি হতবাক! অবাক বিস্ময়ে অলকেশের দিকে কয়েক মুহূর্ত তাকাল। তারপরেই ফুঁপিয়ে কান্না। সে কান্না যেন থামতেই চায় না।

অলকেশ বলল," ওভাবে কাঁদে নাকি বোকা মেয়ে ! নেশার ঘোরে করে ফেলেছ, শান্ত হওআমি কিছু মনে করিনি।"

তখনই মেয়েটি উঠে দাঁড়াল। প্রতিশোধস্পৃহায় সারা শরীর কাঁপছে। বোঝাপড়া করবে প্রথমে ওই লোকটার সঙ্গে। তার সঙ্গে শ্লীলতাহানি ! অত সহজ! গট গট করে চলে এল তার ঘরে। এসেই দেখে বিছানা ফাঁকা। একী করে সম্ভব। বাথরুমে গেল? না নেই। দরজার ছিটকিনি খোলা। অর্থাৎ বেরিয়ে গেছে। মাথায় হাত দিয়ে বিছানায় বসে পড়ল মেয়েটি। ভাবতে লাগল কি ভাবে ঘটল ব্যাপার টা। কোনো স্বামী কী এই ভাবে নিজের স্ত্রীর ছবি তুলতে পারে !

সারাদিন মেয়েটি হোটেলের ঘরেই থেকে গেল। অলকেশের শত অনুরোধেও নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকল। সন্ধে নাগাদ অলকেশ একাই বের হল। মেয়েটি এবার ফিরে যেতে চায়। যা ঘটে গেল , এরপর কোনো মেয়ের পক্ষেই হানিমুনের আনন্দ উপভোগ করা যায় না।

রাত তখন আটটা বেজে কয়েক মিনিট। কলিং বেল বেজে উঠল। অলকেশ ফিরে এসেছে ভেবে দরজা খুলতে গিয়ে দেখে অলকেশ নয়, বছর চল্লিশের এক অপরিচিত লোক।

"কাকে চাই?"

লোকটি হিন্দিতে বলল," আমি অলকেশের বন্ধু। ও আসছে, আমাকে ঘরে একটু বসতে বলল।"

মেয়েটি বলল," আপনি নীচে অপেক্ষা করুন। অলকেশ এলেই আসবেন"

লোকটি মেয়েটির কথার তোয়াক্কা না করে ঘরে ঢুকে একটি চেয়ারে বসে পড়ল।

"একী? আপনাকে যে বললাম বাইরে গিয়ে অপেক্ষা করুন। যান, বেরিয়ে যান বলছি।"

লোকটি চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে মেয়েটির হাতটা টেনে ধরে বলল," রাগ করছো কেন ডার্লিং। আমি তো একটু ফুর্তি করেই চলে যাব।"

গায়ের জোরে কষে  গালে একটা চড় মারল মেয়েটি। "ইতর ! ছোটলোক ! বেরিয়ে যান বলছি।

লোকটা হতবাক ! মার খেয়েও ভেবলুর মত হাঁ করে তাকিয়ে রইল। আর মেয়েটি ঘর থেকে বেরিয়ে হন হন করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে একেবারে রিসেপশনের সম্মুখে এসে চিৎকার শুরু করল।

" আপনারা পেয়েছেন কি?  যখন তখন এর ওর ঘরে উটকো লোক ঢুকে যাচ্ছে? কোনো নিরাপত্তা নেই কেন? আমি কিন্তু থানায় রিপোর্ট করবো, হোটেলের নামে অবৈধ ব্যবসা চালাচ্ছেন। আপনাদের ম্যানেজার কে আছেন? ডাকুন তাকে, আজ এর একটা হেস্তনেস্ত করে ছাড়বো।"

মেয়েটির বাংলা কথা অর্ধেক লোক বুঝতে পারে নি। তবে একটি সুন্দরী মেয়ের চিৎকার চেঁচামেচিতে লোকজন জড়ো হয়েছে কম নয়। বেশির ভাগ অবাঙালি বলে ব্যাপারটা তেমন রাষ্ট্র হতে পারে নি। তবে ম্যানেজার ভদ্রলোকটি বাঙালি।তিনি কাছেই ছিলেন।সব কথাই তিনি শুনেছেন। তিনি এগিয়ে গিয়ে বললেন," কি হয়েছে ম্যাডাম? আমিই ম্যানেজার,আসুন আমার চেম্বারে।"

"আপনি ম্যানেজার? এসব কি হচ্ছে আপনার হোটেলে? সিকিউরিটি কোথায়? চলুন।"

সমস্ত কথা শুনে ম্যানেজার স্তম্ভিত ! তাঁদের হোটেলের যথেষ্ট সুনাম।ভি ভি আই পিরা প্রায়ই এই হোটেলে ওঠেন। এখনো কয়েকজন আছেন। বদনাম হলে চাকরি যাবে শুধু তাই নয়, শাস্তিও হতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে সি সি টি ভির ছবিগুলো দেখতে শুরু করলেন। ভোর চারটের সময় যে এক যুবক ওই ঘর থেকে বেরিয়ে গেল তা স্পষ্ট ছবিতে দেখা যাচ্ছে। লোকটাকে ঠিক চেনা গেল না। এত সাহস হয় কি করে?

ম্যানেজার বললেন," আমরা ব্যাপারটা দেখছি ম্যাডাম। কি করে উটকো লোক ঢুকেছে তদন্ত করে দেখছি। আমাদের হোটেলের যথেষ্ট গুড উইল আছে। বহু বিখ্যাত লোকেরা এখানে এসে থাকেনএমনটা হওয়ার কথা নয়। আপনি রুমে যান। আমাদের সিকিউরিটি নজর রাখবে। আশাকরি এমনটা আর হবে না।"

মেয়েটি রুমে ফিরে এসে দেখে অলকেশ মদের গ্লাস নিয়ে বসেছে। সঙ্গে ভ্যারাইটিস খাবার-দাবার। মাছ মাংস সবই আছে।

মেয়েটি বলল," তোমার অনুপস্থিতিতে রুমে লোক আসতে বলেছ কেন? তোমার উদ্দেশ্য কি বলতো?"

"কে এসেছিল? আমি তো কাউকে আসতে বলিনি? "

"সে যে বলল,তুমিই তাকে ঘরে এসে বসতে বলেছ? সত্যি কথা বলছো? কাউকে বলো নি?"

"কি পাগলের মত কথা বলছ? আমি কেন আসতে বলব? ঢুকতে দাও নি তো? ভালো করেছ, আমি না থাকলে কাউকে ঢুকতে দেবে না। নাও এবার খেয়ে নাও।"

"জোর করে ঢুকেছিল। কষে মেরেছি গালে এক থাপ্পড়। তারপর ম্যানেজারের কাছে কমপ্লেইন করে এলাম।"

"মেরেছ? কেন গায়ে হাত দিতে গেলে? বিদেশ-বিভুঁইয়ে চেনা নেই জানা নেই কি থেকে কি হয়ে যায় তার ঠিক আছে?  খুব অন্যায় কাজ করেছ।"

"কোনো অন্যায় করিনি। ম্যানেজারকে বলে এসেছি দ্রুত স্টেপ নিতে। সিটিটিভি তে লোকটাকে দেখেছে। পুলিশ ঠিক খুঁজে বার করবেই। আর শোনো, কালকেই আমরা এখান থেকে চলে যাব। আমি আর একদিনও থাকতে চাই না। তাড়াতাড়ি টিকিট কাটার ব্যবস্থা করো। প্রয়োজনে হোটেলের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে পারো। ওরাও নাকি টিকিটের ব্যবস্থা করে দেয়।"

                                                               ক্রমশ ……

৮ম পর্ব পড়ুন আগামী শনিবার

লেখকের অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

লেখক পরিচিতি -

নিত্যরঞ্জন দেবনাথ পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার পানুহাটে ১৯৫৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন।কাটোয়া কলেজ থেকে বাণিজ্যে স্নাতক। বর্তমানে থাকেন হুগলির চুঁচুড়ায়। পেশায় কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী ছিলেন।অ্যাকাউন্টেন্ট জেনারেল-এর অধীন ডিভিশনাল অ্যাকাউন্টস অফিসার পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তাঁর প্রথম গল্প " চেতনা " ছোটদের পত্রিকা শুকতারায় ১৯৯৬ - এর এপ্রিলে প্রকাশিত হয়। এরপর দেশ, শিলাদিত্য, কালি ও কলম,মাতৃশক্তি, তথ্যকেন্দ্র, কলেজস্ট্রিট, কথাসাহিত্য, দৈনিক স্টেটসম্যান, যুগশঙ্খ, একদিন,,সুখবর ইত্যাদি এবং বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিনে নিয়মিত তাঁর সাহিত্যকীর্তি অব্যাহত। ইতিমধ্যে পাঁচটি গল্প সংকলন ও চারটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক "শতানীক " পত্রিকাটি দীর্ঘদিন ধরে সম্পাদনা করে আসছেন।