ধারাবাহিক উপন্যাস – প্রতি বৃহস্পতিবার ।
Somewhere the enterprise continues,not-
Yellow the sun lies on the baby's blouse-
I
suppose the word would be,we must submit
Later.
I hang , and
I will not be part of it.
--:তারপর?
কহিল অশ্বত্থ ধীরে--
তারপর -কি শুনতে চাও তুমি
বাভ্রবি?
বাভ্রবি পাতাল গাড়ি
পার্কিং-এর দিকে হাঁটতে হাঁটতে বলল
--"না,মানে,আম্রপালির গল্প
তো শেষ হয় নি।"
এক দমকা হাওয়া বয়ে গেল। সেই হাওয়ায় ভেসে এলো এলোমেলো কয়েকটি ইতিহাসের
পাতা।
আম্রপালি,নগর-বধূ আম্রপালির
ছেলে আম্রপালির মতই বড় হয়ে উঠল। ধীর, স্থির, শান্ত। নগরীর কানাঘুষো
থেকে সে জানতে পারল তার পিতৃ-পরিচয়। একদিন মার কাছে আর্জি নিয়ে উপস্থিত
--"মহারাজ বিম্বিসার
আমার পিতা,অজাতশত্রু আমার দাদা। তাহলে আমরা পাটলিপুত্রের
রাজবাড়িতে কেন যাবনা? কেন আমরা বিচ্ছিন্ন হয়ে আছি?"
দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে আম্রপালি জবাব দিল
--"পুত্র বিমল! রাজবাড়ির জাঁক,জমক
আমাদের চাই না। আমার
অর্থ প্রাচুর্যের অভাব
নেই। কিন্তু এই দিয়ে সুখলাভ হয়
না পুত্র!"
শান্ত চোখ তুলে বিমল জিজ্ঞেস করল--
"তাহলে সুখ
লাভ কিসে হয় জননী?"
আম্রপালি বাতায়নে দাঁড়িয়ে
দেখল দূরে আম্র-কুঞ্জের পাশ দিয়ে চলে
যাচ্ছেন এক বৌদ্ধ ভিক্ষু--হাতে তাঁর ভিক্ষাপাত্র। আম্রপালি তরুণ পুত্র কে ডেকে নিলো--বাতায়ন থেকে ঐ সৌম্য বেশী বৌদ্ধ
ভিক্ষুর প্রতি আঙ্গুল দেখিয়ে বলল
--"এঁদের শরণাগত
হলেই সুখলাভ হয় পুত্র।"
--"তাহলে
আমরা কেন সংঘের শরণাগত হচ্ছি না
জননী।"
আম্রপালি অস্ফুটে জবাব
দিল
--"প্রতীক্ষা
করছি পুত্র।"
--"কার"
"প্রভু
বোধিসত্ত্বের।" বিমল মার দিকে নীল চোখ
তুলে বলল -
--"প্রভু বোধিসত্ত্বের? তিনি কি
তোমার কাছে আসবেন?"
আম্রপালি দৃঢ় সুরে জবাব
দিল
--"আসবেন,পুত্র! অবশ্যই
আসবেন। শুধু মন প্রাণ দিয়ে তাঁর প্রতীক্ষা
করতে হবে। অন্তর থেকে তাঁকে ডাক
পাঠাতে হবে।"
--"বিম্বিসারকে
তো অজাতশত্রু বন্দী করে রেখেছিল?"
--"হ্যাঁ। কোশলা
দেবী ছোটবেলা থেকেই নৃপতি বিম্বিসারের প্রতি তাঁর
পুত্র অজাতশত্রুর অন্তর
বিষিয়ে তুলেছিলেন। বৈশালী রাজ্যের
সঙ্গে মগধের ছিল চির শত্রুতা। এদিকে
বিম্বিসার যখন প্রভু বুদ্ধের শরণাপন্ন
হলেন তখন অজাতশত্রু পিতাকে নজরবন্দী করে মগধের
সিংহাসনে বসে ব্রাহ্মণ্য ধর্মকেই
রাজধর্ম রূপে ঘোষণা করে ফরমান জারি করলেন--"বেদ,ব্রাহ্মণ আর রাজাই
একমাত্র পূজনীয়।"
বৈশালী গণরাজ্যে বুদ্ধের পীঠস্থান স্বরূপ। তীব্র আক্রোশ
নিয়ে অজাতশত্রু বৈশালী আক্রমণ করলে হাজার
হাজার লোক নিহত হলো অথবা কারারুদ্ধ হলো। কিংবদন্তী বলে আম্রপালিও স্বেচ্ছায়
তাঁর পুত্র সহ কারাবরণ করেছিল। অজাতশত্রু ওর পিতার মতই
আম্রপালির রূপ এবং গুণে মুগ্ধ হয়ে আম্রপালিকে কারামুক্ত করে দিল এবং
আম্রপালির সঙ্গে দেখা করতে আম্রপালির
প্রাসাদোপম কোঠিতে এলো!
--"আম্রপালি,তুমি
নগর-বধূ! তোমার অলোকসামান্য রূপ এবং
গুণ মগধের নরপতি অজাতশত্রুকে মুগ্ধ করেছে! যুদ্ধ ক্লান্ত এক নরপতি
একরাতের জন্য তোমার
আপ্যায়ন চায়।"
আম্রপালির ঠোঁটের
কোণে মৃদু মধুর হাসির
রেখা। নতজানু হয়ে বলল--"এ তো
আমার পরম সৌভাগ্য,সম্রাট। তবে
আমার দু একটা প্রশ্ন আছে পরাক্রমশালী মগধ নরপতির কাছে।"
কৌতূহল ভরে অজাতশত্রু বলল
--"বল নগর-বধূ,তোমার কি
প্রশ্ন আছে।"
--"সম্রাট, এই পৃথিবীতে তৃপ্তি কিসে?"
অজাতশত্রু দম্ভ ভরে
জবাব দিল
--"কেন? পৃথিবী
জয় করে দ্বিগ্বিজয়ী সম্রাট হলেই পরম পরিতৃপ্তি।"
আম্রপালি মৃদু অথচ দৃঢ় স্বরে বলল--"না মহারাজ তৃপ্তি দানে।"
অজাতশত্রুর যুগল ভুরু
কুঞ্চিত হয়ে উঠল।
--"নগর-বধূর মুখে
এই কথা মানায় না। বিশেষ করে যে নগর-বধূর
একরাতের মূল্য ৫০ কার্ষাপণ।"
--"যথার্থ বলেছেন
সম্রাট। আসুন আমার শয়ন কক্ষে।"
রেশম ঝালর সরিয়ে
আম্রপালির বিলাস বহুল শয়ন কক্ষে ঢুকেই একটি কাপড় আবৃত তৈলচিত্রের
প্রতি দৃষ্টি পড়ল অজাতশত্রুর!
তাকিয়ায় হেলান দিয়ে অজাতশত্রু বলল
--"ঐ রেশম
বস্ত্র আবৃত তৈলচিত্র
কার? আমার দেখার
ইচ্ছে হচ্ছে।"
--"অবশ্যই,দেখবেন মহারাজ।" আস্তে আস্তে তৈলচিত্রের আবরণ উন্মোচন
করল আম্রপালি। অজাতশত্রুর সামনে
অভয়,বরাভয় মুদ্রায় শাক্যমুনি বোধিসত্ত্ব।
আম্রপালির দুটি
হাত অঞ্জলি বদ্ধ।
--"বুদ্ধং
শরণং গচ্ছামি।
ধম্মম শরণং গচ্ছামি।
সংঘং শরণং গচ্ছামি।।
আম্রপালির পদ্মপলাশ
আঁখি থেকে বৃষ্টি বিন্দুর মত জল--
অজাতশত্রু গম্ভীর পা ফেলে আম্রপালির শয়ন কক্ষ থেকে বেরিয়ে গেল--বৈশালী অবরোধ মুক্ত বলে ঘোষণা করেন সম্রাট
অজাতশত্রু।কিন্তু ততদিনে
বৈশালীর এক তৃতীয়াংশ মানুষের
মৃত্যু হয়েছে।
ক্রমশ …………
২০তম পর্ব পড়ুন আগামী বৃহস্পতিবার
লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন ।
লেখিকার পরিচিতি
–
জন্ম-কলকাতায় । আসামের বরাক উপত্যকায় বড় হয়ে ওঠা ।
প্রকাশিত
গ্রন্থ
১--সাপ শিশির
খায় (গল্প গ্রন্থ)
২--দেবী দহন--(কবিতা গ্রন্থ)
ভারতবর্ষ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত