Advt

Advt

ek-manda-meyer-kahini-galpo-story-by-nityaranjan-debnath-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-এক-মন্দ-মেয়ের-কাহিনি-নিত্যরঞ্জন-দেবনাথ

ধারাবাহিক  উপন্যাস

ek-manda-meyer-kahini-galpo-story-by-nityaranjan-debnath-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-এক-মন্দ-মেয়ের-কাহিনি-নিত্যরঞ্জন-দেবনাথ
১ম পর্ব

নকনে শীতের রাত। রাস্তাঘাট সুনসান। ঘড়িতে দু'টোর কাটা ছুঁইছুঁই। এই  গভীর রাতে  এদিক-ওদিক কয়েকটি নেড়ি কুকুর কুঁকড়ে শুয়ে থাকা  ছাড়া মানুষজনের চিহ্ন নেই।এর মধ্যেই মেয়েটি বেপোরোয়া ছুটছে। কোনোদিকে হুশ নেই। পরণের পোশাক অবিন্যস্ত। মাথার চুল উস্কোখুস্কো। দেখতে রূপসী হলেও এই মুহূর্তে বিকৃত মস্তিষ্কের বলেই ভ্রম হয়। ছুটতে ছুটতে একটি  থানার ভেতর প্রবেশ করল। একেবারে ওসির ঘরে।মেয়েটি হাঁপাচ্ছে। হাঁপাতে হাঁপাতেই বলল,"স্যার, আমি স্বামীকে খুন করে এসেছি। আমাকে যা শাস্তি দেওয়ার দিন।"

ওসি অর্থাৎ বড়বাবুর চেম্বারে প্রবেশ করতে গেলে অনুমতির প্রয়োজন হয়। আচমকা মেয়েটিকে দেখে অনেকেই হতবাক।থানার বড়বাবু বিচক্ষণ ব্যক্তি। বহু কেসের অভিজ্ঞতা তাঁর ঝুলিতে। একটি আঠারো-কুড়ি বছর বয়সের যুবতী কোন কোন পরিস্থিতিতে স্বামীকে খুন করতে পারে তাঁর অজানা নয়। তিনি বললেন," আপনি আগে বসুন,তারপর শুনছি আপনার কথা।"

মেয়েটি ধপ করে চেয়ারগুলোর একটিতে বসে পড়ল। বসেও হাঁপাচ্ছে।

বড়বাবু বললেন,"কোথায় বাড়ি আপনার?"

"নেতাজি নগর নিবেদিতা গার্লস হাই স্কুলের পাশে।"

"স্বামীর নাম কি? বডি কি ওখানেই পড়ে আছে?"

মেয়েটি কাচুমাচু করে ঘাড় নাড়ল। স্বামীর নাম বলল।

বড়বাবু একজন পুলিশকে ডেকে নির্দেশ দিলেন, এক্ষুনি মেয়েটি নিয়ে কয়েকজন ফোর্স সহ স্পটে যেতে। তার আগে ডিটেলস নিয়ে যেন সই করিয়ে নেয়।

মেয়েটি জানে তার ফাঁসি হবে, নিদেন পক্ষে যাবজ্জীবন হবেই তাতে সন্দেহ নেই। এই বয়সেই জীবনের প্রতি সে বীতশ্রদ্ধ। মৃত্যুকে সে ভয় পায় না। বরং বেঁচে থাকার থেকে পরম শান্তি। বড়বাবুকে দেখে সহানুভূতিশীল বলে মনে হয়েছে তার। তাই শাস্তির আগে জীবনের ঘটনা অকপটে বলে যেতে চায় সে। কেন তার এই পরিণতি ! এর জন্য কে দায়ী? তার কী সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকার নেই?

ইতিমধ্যে বেশ তৎপরতার সঙ্গে মেয়েটির সংক্ষিপ্ত বয়ান নোট করে চার জন পুলিশ জিপ গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেল। মেয়েটিকে কেন সঙ্গে নিল না বোঝা গেল না। অথচ বড়বাবুর সেই রকমই নির্দেশ ছিল। হয়তো কোনও কারণে সিদ্ধান্ত বদল করে। মেয়েটি ভাবছে অন্য কথা। বড়বাবুকে সমস্ত ঘটনা বলতেই হবে। সম্ভব হলে আজই। কোথা থেকে শুরু করা যায় ভাবছে।

এটাকে লকাপ বলে কিনা মেয়েটি জানে না। তিনদিকে দেওয়াল থাকলেও সম্মুখে মোটা লোহার রড দিয়ে খাঁচার মত করে ঘেরা অর্থাৎ থানার সব কিছুই দেখা যায়।মেঝেতে বসে পড়ল সে। কয়েকজন পুলিশের তৎপরতা চোখে পড়ার মত। বার বার বড়বাবুর চেম্বারে ঢুকছে আবার ফিরেই রেজিস্টারে কি সব নোট করছে। খুনি বলে কথা। তাকে নিয়ে একটু ব্যতিব্যস্ত থাকাই স্বাভাবিক। তার অবশ্য কোনও হেলদোল নেই। সে শুধু বড়বাবুর সঙ্গে একান্তে কিছুক্ষণ কথা বলতে চায়। তারপর মৃত্যু হলেও ক্ষতি নেই। কিন্তু কিভাবে কোথা থেকে কথা শুরু করবে ভাবছে।

মেয়েটির যখন বাবা মারা যায় তখন সে মায়ের গর্ভে। অর্থাৎ জীবিত অবস্থায় বাবাকে সে দেখেই নি। পৃথিবীর আলোতে এসে সে শুধু মাকেই চেনে। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আরও বহু মানুষের সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছে। ভালোবাসা আদর পায়নি বললে সত্যের অপলাপ করা হবে।  সঙ্গে যে স্বার্থ জড়িয়ে থাকে বুঝতে অসুবিধা হতো না।মা ভিন্ন স্বার্থ ব্যতীত মানুষ যে চলে না সেটা ছোট থেকেই উপলব্ধি হয়ে গেছে। এসব কাউকে শেখাতে হয় না। নিজস্ব বোধজ্ঞান থেকেই শিখে যায়।তবু মিশত।এক প্রকার বাধ্যও ছিল। যৌথ পরিবারে সে বড় হয়েছে। দাদু, ঠাকুমা, জ্যাঠা জেঠি, কাকা কাকি এবং তুতো দাদা দিদিদের মধ্যে থেকেই মানুষ। তাদের টুকিটাকি ফাইফরমাস খাটতে হতই। প্রথমটা ধারণা না থাকাতে কাকা জ্যাঠাদের কাছে অনেক আবদার করতো, বায়না করতো। পরে বুঝেছে, অর্থের মানদন্ডে জগৎ চলে। সংসারেই বা তা বাদ যাবে কেন? যেহেতু বাবা নেই, রোজগারও নেই, তুমি খেতে-পড়তে পারছো,এটাই তোমার সাত জন্মের ভাগ্য। জ্ঞান হওয়া থেকে দেখে আসছে, মা রান্নার দায়িত্বে। যৌথ পরিবারটির সমস্ত রান্না মা করেন। বিনিময়ে ভরণ পোষণ।  মাও যে তুতো ভাইবোনদের কারো জেঠি, কাকি, সেই সম্পর্কটিও বাড়িতে সবাই ভুলে গিয়েছে। রান্নার লোক বলেই চিহ্নিত। বড়রা সম্পর্কের মান্যতা দিলেও রাঁধুনি বলেই ভাবেন। রাঁধুনীর মেয়ে হয়ে  সেই বা বেশি কিছু আশা করে কি করে? পড়ালেখার অনুমতি পেয়েছে, স্কুলে যেতে পারছে এই ঢের। বই খাতা এক কথায় যে  কিনে দিত তা কিন্তু নয়। জনে জনে আবদার করা ছাড়া উপায় ছিল না। ছোট থেকেই বুঝে গিয়েছিল, তার অধিকার নেই বায়না করার। তাই ফাইফরমাস খেটে আদায় করা ছাড়া উপায় কি? মায়ের খুব আশা মেয়েটি লেখাপড়া শিখে বড় হবে , চাকরি করবে। মেয়েটিও তেমনই পোষণ করে। কারণ পড়াশুনায় সে আকাট নয়। ফার্স্ট না হলেও প্রথম পাঁচ জনের মধ্যে থাকে। কোনও প্রাইভেট টিউশন ছাড়াই মাধ্যমিকে স্টার মার্কস পেয়ে পাশ করেছে। স্কুলের স্যারদের ভরসাতেই মনে মনে অনেক কিছু কল্পনা করে। একদিন সে বড় হবে, মানুষের মত মানুষ হবে। চাকরি পেয়েই মায়ের দুঃখ-কষ্ট মোচন করবে।

থানার ঘড়িতে রাত তিনটে। এখনও কেন ফিরছে না মাথায় ঢুকছে না। মৃতদেহ কি থানায় নিয়ে আসবে? নাকি সরাসরি মর্গে পাঠিয়ে দেবে? তার অবশ্য জানা নেই। মর্গ কোথায় তাও জানে না।কাউকে জিজ্ঞেস করবে কি?  একজন পুলিশ চেয়ারে বসে ঘাড় নিচু করে টেবিলে মাথা রেখে ঘুমোচ্ছে। থানায় ঢোকার মুখে একজন বন্দুকধারী সোজা দাঁড়িয়ে আছে। নড়ছেও না চড়ছেও না। আর সব কোথায় গেল কে জানে। ইচ্ছে ছিল বড়বাবুর চেম্বারে ঢুকে যাবে। উপায় নেই । বাইরে দিয়ে ইয়া বড় এক তালা  লাগিয়ে বন্ধ করে দিয়ে গেছে। রডের ফাঁক  দিয়েই সব দেখতে হচ্ছে। কিন্তু ধারেকাছে কেউ নেই। ঠান্ডাটা জাঁকিয়ে পড়লেও তার তেমন শীত বোধ নেই। কোণের দিকে একটি নোংরা কম্বল পড়ে আছে। ইচ্ছে করলে টেনে নিতেই পারে। মৃত্যু পথযাত্রীর অত আরামের কী দরকার? সেসব আরাম প্রিয়দের চাই। যারা সোনার চামচ নিয়ে জন্মেছে। দুর্ভাগাদের তা সহ্য হবে না। বরং কষ্টের মধ্যেই আরামে থাকে। নিজের মাকেই যে একটু শান্তি দিতে পারল না সে কখনো আরামে থাকতে পারে? মায়ের কথা ভাবলেই সারা শরীরে কেমন এক শিহরণ জেগে ওঠে।

মাধ্যমিকের পর উচ্চ মাধ্যমিকেও ভালো রেজাল্ট করল। বাড়ির সকলের কথা অমান্য করে শত প্রতিকূলতার মধ্যেও সে কলেজে ভর্তি হয়ে গেল। মাধ্যমিক পাশ করার পর থেকেই টিউশনি শুরু করে। পড়ার খরচটা অন্তত নিজে চালিয়ে নিতে পারছে। টিউশনিই তখন বল ভরসা। কিন্তু ভাগ্য কখনোই সহায় ছিল না। তুতো দাদা-দিদিরা স্কুল-কলেজের পাশের খবর এলেই বাড়িতে মিষ্টি খাওয়ার ধুম পড়ে। অথচ সে যখন ভালো রেজাল্ট করে, মিষ্টি দূরে থাক,হাসি মুখে দু'টি কথা বলতেও দেখেনি কখনো। বরং ফাইফরমাস বেড়ে যায়। রাঁধুনির মেয়েকে নিয়ে তাঁদের কোনও মাথা ব্যাথা নেই যে। ফলে মেয়েটি ভেতরে ভেতরে একটু জেদি হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত অভিমান থেকে তাকে যেমন ক্রমশ সাহসী করে তুলেছে তেমনি কখনো কখনো অস্থির,দিশেহারা হয়েও পড়ত। ভালো-মন্দ নিয়ে সৎ পরামর্শ দেওয়ার কেউ নেই যে। মাধ্যমিক পাশের পর অনায়েসেই সাইন্স নিয়ে ইলেভেন ক্লাসে ভর্তি হতে পারত। ইচ্ছেও ছিল খুব। হয়নি একমাত্র খরচ চালনার ভয়ে। সাইন্সের জন্য প্রাইভেট টিউটরের সাহায্য না নিলে রেজাল্ট ভালো করা মুশকিল। কাকা-জ্যাঠা পরামর্শ দেওয়াতো দূর অস্ত, পড়া বন্ধ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন।  বাধ্য হয়ে মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে এগিয়ে চলার সিদ্ধান্ত নিল।কলেজে পড়তে গিয়েও নিজের বিবেচনায় হিস্ট্রিতে অনার্স নিয়ে পড়া শুরু করল। যেনতেন প্রকারেন রেজাল্ট ভালো করাটাই তার মুখ্য লক্ষ্য। তাই শত বাধাতেও পড়াশুনাতে ফাঁকি দেয় নি কখনো।

এর মধ্যেই এক দুর্ঘটনা ঘটে গেল। পার্ট ওয়ান পরীক্ষার ঠিক দুদিন আগে মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। রান্না ঘরে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। তড়িঘড়ি হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হল। কিন্তু জ্ঞান আর ফেরে নি। অপুষ্টি, রক্তাল্পতা নানা রোগে ভুগছিলেন। কোনও কিছুই তাকে জানতে দেয় নি। সবই চেপে গেছেন। সাত দিনের দিন মা না ফেরার দেশে চলে গেলেন। তখন যে কী মানসিক অবস্থা, কাকপক্ষীও জানে না। পৃথিবীটাই যেন হুড়মুড় করে ভেঙে গেল চক্ষের নিমেষে। মাঝে মাঝে ভাবে তার জীবনেই এমনটা কেন ঘটে? কি পাপ করেছিল সে?  মা বলতেন," জন্মের আগেই তোর বাবা চলে গেল। দুর্ভাগ্যের কপাল তো হবেই। একমাত্র তুই পারিস ভাগ্য ফেরাতে। তোর আশাতেই তো বেঁচে আছি মা। দেখবি একদিন সুদিন আসবেই। তুই মন শক্ত করে পড়ালেখাটা করে যা। ঈশ্বর ঠিক আমাদের সহায় হবেন।" সেই ঈশ্বরও দূরে চলে গেলেন।

শ্মশানে কাকা-জ্যাঠা, তুতো দাদারা অনেক আশ্বাস বাণী শোনাচ্ছিলেন। সে তখন মায়ের ওপর হুমড়ি খেয়ে অনবরত কেঁদে চলেছে। বেলা তখন বিকেল চারটে। আকাশ গোমড়া, সূর্যের দেখা নেই। এদিক ওদিক মেঘ জমেছে বিস্তর।ঝির ঝির করে বৃষ্টিও পড়ছিল। হয়তো ঝম ঝম করে শুরু হয়ে যাবে। পুরোহিত তাকে দিয়ে সারা শরীরে ঘি মাখালেন। সকলে চাইছে দ্রুত দাহকার্য সম্পন্ন করে ফিরে যাবে। কাকা তাকে জোর করে মায়ের কাছ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। মাকে যে তারাই খাটিয়ে খাটিয়ে মেরে ফেলেছে তা কী কখনো ভুলতে পারবে? এই মানুষগুলোর সঙ্গেই তাকে থাকতে হবে ভাবতেই শরীর কেঁপে কেঁপে উঠছে। এছাড়া আর উপায় কী তার?

মাকে ইলেকট্রিক চুল্লিতে ঢুকিয়ে দিল। মেয়েটি অপলক সেদিকেই তাকিয়েছিল। এক সময় হাউ মাউ করে কেঁদে উঠল। সব শেষ হয়ে গেল। ছোট্ট থেকে তিল তিল করে বড় হয়ে আঠারো বছর বয়স অবধি যার ছত্রছায়ায় আদর,ভালোবাসা পেয়ে বড় হয়েছে সেই আজ নেই হয়ে গেল। জগৎ থেকেই মুছে গেল।  তখনও ভাবতে পারছে না কী ঘটে গেল তার জীবনে।মা নেই !কার কাছে মনের কথা বলবে? দুঃখে-কষ্টে কাকে জড়িয়ে ধরে বলবে?  তার জীবনের আর কি মূল্য আছে? বেঁচে থেকেই বা কী লাভ? কার জন্য বাঁচবে? কে আছে  পৃথিবীতে?

মেয়েটির জীবনে শ্মশানে প্রথম পদার্পণ। আগে কোনোদিন শ্মশান দেখেনি।তাই কিছু কিছু দৃশ্য দেখে সে হতবাক! জ্যাঠা টাকা দিলেন, মিষ্টি নিয়ে আয়। রসগোল্লা, সিঙ্গারা সবাই আয়েশ করে খাচ্ছে। জানে তার মায়ের জন্য কারো শোকতাপ নেই। তাই বলে কী আনন্দ করতে পারে ! খোশমেজাজে মুখরোচক যে সব বুলি আওড়াচ্ছেন, তার কাছে অকল্পনীয়। এরা যেন খুশির জোয়ারে ভাসছে। দেখে মনে হয় আজ তাদের বড় আনন্দের দিন। পরিণত বয়সে বা অনেক বয়সে যাঁদের মৃত্যু হয় তাঁদের ক্ষেত্রে সাধারণত শোকতাপ থাকে না। মায়ের তো মাত্র বেয়াল্লিশ বছর। কি করে এমনটা পারে সে ভেবে পাচ্ছে না। ঘোর শত্রুর মৃত্যু হলেও এমনটা হওয়া সম্ভব কিনা তার জানা নেই। আরও স্তম্ভিত হয়ে গেল জ্যাঠার বিবেচনা বোধ দেখে। পাড়া প্রতিবেশী এক কাকাকে দিয়ে মদের বোতল আনালেন।ভাবা যায় ! শ্মশানের বাইরে যে বট গাছটা আছে তার নিচের বেদীটার ওপর বড়রা কয়েকজন সারি সারি বসে পড়ল। তার মধ্যে কাকা জ্যাঠাও হাজির। মেয়েটি এসব দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছে। মানুষের মৃত্যুতে এমন ভাবে ফুর্তিফার্তা করে কেউ? মায়ের মৃত্যুতে এত খুশি হয়েছে তারা ! সে আর ভাবতে পারছে না। শ্মশানের এক কোণে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ল সে। পৃথিবীতে এতটাই অবজ্ঞার পাত্র তারা? অর্থ বল না থাকলে জীবনের কী কোনও মূল্য নেই ! এভাবে দয়া-ভিক্ষা করে বেঁচে থাকা না থাকারই সামিল। কী করবে সে এখন?

ক্রমশ ……

২য় পর্ব পড়ুন আগামী শনিবার

লেখকের অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

লেখক পরিচিতি -

নিত্যরঞ্জন দেবনাথ পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার পানুহাটে ১৯৫৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন।কাটোয়া কলেজ থেকে বাণিজ্যে স্নাতক। বর্তমানে থাকেন হুগলির চুঁচুড়ায়। পেশায় কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী ছিলেন।অ্যাকাউন্টেন্ট জেনারেল-এর অধীন ডিভিশনাল অ্যাকাউন্টস অফিসার পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তাঁর প্রথম গল্প " চেতনা " ছোটদের পত্রিকা শুকতারায় ১৯৯৬ - এর এপ্রিলে প্রকাশিত হয়। এরপর দেশ, শিলাদিত্য, কালি ও কলম,মাতৃশক্তি, তথ্যকেন্দ্র, কলেজস্ট্রিট, কথাসাহিত্য, দৈনিক স্টেটসম্যান, যুগশঙ্খ, একদিন,,সুখবর ইত্যাদি এবং বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিনে নিয়মিত তাঁর সাহিত্যকীর্তি অব্যাহত। ইতিমধ্যে পাঁচটি গল্প সংকলন ও চারটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক "শতানীক " পত্রিকাটি দীর্ঘদিন ধরে সম্পাদনা করে আসছেন।