ধারাবাহিক উপন্যাস – প্রতি বৃহস্পতিবার ।
পর্ব-- ১৪
Another evening we sprawled about discussing
Appearances. And it was the consensus
That
while uncommon physical good looks, continued to launch one, as before in life—
লোকটার নাম প্রশান্ত
দুবে--লোকটার কর্কশ গলার স্বর সরোজকে ভীত ,সন্ত্রস্ত করে রাখত। লোকটা রোজ রাতে ঐ অন্ধকার নরকে আসত;আকণ্ঠ মদ গিলে চুরচুর। সরোজ কোনও দিন ওর মুখ দেখেনি। একদিন রাতে প্রশান্ত দুবে এসেই সরোজ কে হুকুম করল--"এ লেড়কি তেরা সামান
সারে প্যাক কর লেনা। তুঝে মেরা সাথ
চলনে পড়েগা।"
সরোজ ভীত কণ্ঠে প্রশ্ন
করেছিল--কব্?
--"বোলা না
আভি।"
--"কাঁহা
যানা হ্যায়?"
--"এ জ্যাদা
মত্ বোল। মেঁ যাহা লে যায়ূঙ্গী--উহাই
তেরা ঘর।"
সরোজ চুপ করে।
--"তারপর?"
--"ঠিক সে
ইয়াদ নেহি। রাতো রাত হম নিকাল
পড়ে।"
সেই বিবর থেকে প্রথম মুক্তি! সরোজ কে শাড়ি পরিয়ে
দীর্ঘ ঘোমটা টেনে দিয়েছিল দুবের
লোকেরা। মাঝরাতে গাড়ি চলতে শুরু
করেছিল,ভোর ভোর একটা ধাবায় দুবে
ওকে বলে নেমে এসে নাস্তা করতে।
সরোজের ঘুমের চটকা ভেঙ্গে গিয়েছিল। ধাবায় রুটি তরকারি খেতে খেতে সে ঘোমটার আড়াল
থেকে আড়চোখে তাকিয়ে
সাইনবোর্ড দেখে বুঝতে পারছিল ওরা
রাজস্থানের কোথাও আছে। ধাবার
খাবার পরিবেশন করছিল যে বাচ্চা ছেলেটি -ওর কথার টানে
রাজস্থানের দেহাতি টান । সরোজ ভাবছিল ওকে কিছু জিজ্ঞেস করবে--কিন্তু
দুবের কড়া নজর ওর উপর। টয়লেট
যাবার সময় ও দুবে দূর থেকে নজর
রাখছিল। দুপুর নাগাদ সরোজ
এসে পৌঁছল দুবের মডার্ন খামার বাড়িতে। দিনের বেলা হাড়ভাঙ্গা খাটুনি--
--"কি ধরণের
কাজ তোমাকে দিয়ে করানো হতো?"
সরোজ প্রেসের সাংবাদিক
মেয়েটির প্রশ্নে এক-পলক থমকে থাকল।
সারারাত আধাবুড়ো রাক্ষসটা সরোজের
উপর অকথ্য শারীরিক
অত্যাচার করার পর নাক ডাকিয়ে
ঘুমিয়ে পড়তো। সরোজের দুচোখের পাতায় ক্লান্তিতে ঘুম নেমে আসতে না আসতেই ভোর ভোর
লোকটা ওকে উঠিয়ে বলত--"উঠ যা--চায় নাস্তা রেডি কর। মুঝে
নিকালনা হ্যাঁয়। "চা,রুটি সবজি
বানিয়ে,নিজে কোনোরকম একটু খেয়েই খামার
বাড়িতে কাজ করতে পাঠিয়ে দিত দুবে। সেখানে আরও অনেক মহিলারাই
কাজ করত। সরোজকেও ওদের সাথে কাজ
করতে হতো। বুড়ি আম্মা-ওদের সবার উপর খবরদারি
করত এবং নজরও রাখত।
--"কেন? নজর রাখতো কেন?"
--"আগর কৌই
ভাগ যানে কা কোশিস করে তো--"
-"তো?"
সরোজ উদাস
চোখে তাকিয়ে জবাব দেয়
--"তো পয়লে
উসকো হাথ পেড় রশিসে বান্ধকে এক কালি কোঠরি মেঁ ডাল দেতে। ইসকে বাদ আগর্ ওহ্ সুধার
যায় তো সহি হ্যাঁয়--নেহি তো--
--"নেহি তো
উসকো গলা কাটকে পানি মেঁ ফেক দেতে থে।"
--"ওহ মাই
গড।"
কিছুক্ষণ সবাই
চুপ চাপ। বাভ্রবি মনে মনে এক অন্ধ রাগে ফুঁসছিল। এই কি স্বাধীন
ভারতের ছবি? স্বাধীন ভারতবর্ষে সাধারণ মানুষের,বিশেষ করে
মেয়েদের স্থানটা যে কোথায়--বাভ্রবি ভেবে ভেবে কুল কিনারা পাচ্ছিল না।--
--"তুমনে
ভাগ্ যানে কা কোশিস কিয়া হ্যাঁয় কভি?"
সরোজ মাথা নেড়ে
বলল--"নেহি! মুঝে মালুম থা কোঈ ফায়দা
নেহি হ্যাঁয়। ও বুড্ডি আওরৎ পহেলে
দুবে কি রাখওয়ালী থি--। ও হর বখত্
হাম পর নজর রাখতি থী।"
বাভ্রবি দীর্ঘ শ্বাস ফেলল! এভাবেই
মেয়েদেরকে দিয়ে মেয়েদের উপর
অত্যাচারের প্রথা পুরুষ তন্ত্রের এক পুরনো
চাল! কোঠি বাড়ির মৌসি,এই বুড্ডি
রক্ষিতা--আর প্রতিটি গৃহে শাস-শাশুড়ি,ননদ
দ্বারা বধূর উপর
অত্যাচার আর এতে কোনও ক্লাস ডিসক্রিমিনেশন নেই। প্রচুর পয়সাওয়ালা
আর একেবারেই সাধারণ গরীব
গুর্বোর ঘরের দৃশ্য প্রায় একই।
দুবের পরিবার থাকে পাটনায়। একবার এসেছিল। সরোজ কে দিয়ে পা টিপিয়েছেন সেই পৃথুলা মহিলা। মাথা আর কপাল ভর্তি সিঁদুর--সারা গা ভর্তি সোনার গয়না।
--"মিসেস
দুবে কি জানতেন ওনার স্বামীর
এই জঘন্য চরিত্র?"
সরোজ ম্লান হেসে
বলল--"বোধহয় জানতেন। সাধারণ
গ্রামের মহিলা--স্বামীর বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার
মত ক্ষমতাই ছিল না।"
--"হু! তারপর?"
সরোজ আস্তে আস্তে বলল--"আমি তো আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম এভাবেই
আমার পুরো জীবনটা কেটে যাবে। কিন্তু একদিন
আশার কিরণ দেখা দিল--"
--"কিভাবে?"
--"শুনলাম
দুবে আমাকে দুবাই বেঁচে দেবার প্ল্যান করছে। তাই
একদিন আমাকে নিয়ে আবার দিল্লি চলে এলো। সেখানে একটি বিউটি পার্লারে
আমাকে আরও অনেকের সাথে প্যাডিকিওর, ম্যানিকিওর ইত্যাদি
করতে হতো। কিন্তু ওগুলো ছিল
লোকদেখানো। আসল রোজগার হতো বডি
ম্যাসাজ এবং রাতে বিশেষ বিশেষ লোকের
সঙ্গে হোটেলে রাত কাটানো থেকে। আমার
পাসপোর্ট,ভিসার জন্য
চেষ্টা চলছিল--আর অন্য দিকে বডি মাসাজ
আর হোটেল--একদিন এই হোটেল থেকেই
আমার মুক্তির দরজা খুলে গেল---
ক্রমশ …………
১৫তম পর্ব পড়ুন আগামী বৃহস্পতিবার
লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন ।
লেখিকার পরিচিতি
–
জন্ম-কলকাতায় । আসামের বরাক উপত্যকায় বড় হয়ে ওঠা ।
প্রকাশিত
গ্রন্থ
১--সাপ শিশির
খায় (গল্প গ্রন্থ)
২--দেবী দহন--(কবিতা গ্রন্থ)
ভারতবর্ষ ও
বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ।