ধারাবাহিক উপন্যাস – প্রতি বৃহস্পতিবার ।
পর্ব-- ১৩
Autumn turns windy,huge,
A clear
vase of dry leaves vibrating on and on.
We sit
watching. When I next speak
Love
buries itself in me,up to the hilt.
অক্টোপাস আষ্টে পৃষ্টে বেঁধে ফেলছে--একটা বিশাল অজগর পাকে পাকে
জড়িয়ে ফেলছে--আর মুখের সামনে,লাল
ঠোঁটের সামনে লকলক করছে সেই মদ্দ অজগরের
লোভী লালাঝরা জিভ! তলপেট থেকে শ্রোণিদেশ পর্যন্ত কে যেন ধারালো
ছুরি অথবা তরোয়াল দিয়ে মসৃণ করে চিরে দিয়েছে! ভয়ংকর এবং তীব্র
ব্যথার তরঙ্গ যেমন সমুদ্রের ঢেউ এর
মতো আসছে আর মিলিয়ে যাচ্ছে--নিঃশ্বাস, প্রশ্বাস বন্ধ
হয়ে আসছে! চোখের সামনে যেন
অমানিশার ছোপ ছোপ কালো জমাট অন্ধকার।
সেই অন্ধকারের মধ্যে এক দাঁতাল শুয়োর--না না এক রাক্ষস চুষে চুষে খাচ্ছিল নারী মাংস! আর টেবিলের উপর
রাখা পান পাত্র থেকে পান করছিল বিলায়েতি
শরাব।
--মিঠিয়া
বাঈ ঠকায় নি। বহুত বড়িয়া মাল আছে।"
--"এ,লেড়কি নখরা মত কর্। নথ খুলওনা কে লিয়ে সত্তর হাজার
দিয়া হ্যায় ম্যায়নে।"
লোকটির নাম দুবে। দুবেজী বলেই ডাকছিল সবাই।
সরোজ চুপ করে গেল। যেন ওর সমস্ত কথাবলার
শক্তি ই হারিয়ে গেছে।
--মনুদেব
আম্রপালীকে সম্মানের সহিত বৈশালীর --"নগর-বধূ" হিসেবে ঘোষণা করিলেন। শুধু
মাত্র ঘোষণাই করিলেন না আম্রপালীকে সর্বজন সমক্ষে সাত
বছরের জন্য বৈশালী গণরাজ্যের সর্বশ্রেষ্ঠ
সম্মান--"বৈশালী জনপদ কল্যাণী" সম্মানে ভূষিত করিলেন।"
বাভ্রবির মুখ থেকে আচমকাই বেরিয়ে গেল--"বাহ্। এটা তো অভিনব!"
আম্রপালী আবার সেই
কাঁচ চূর্ণ হাসিতে ভাঙ্গিয়া
পড়িল। হাসির দমকে আম্রপালীর
শরীর দুমড়াইয়া মুচড়াইয়া উঠিল। অনেকক্ষণ পর যখন আম্রপালী শান্ত হইল,তখন
তাঁহার পদ্ম পলাশ আঁখিতে জলবিন্দু
টলটল করিয়া উঠিল। আম্রপালী জল বিন্দু
রেশমি রুমাল দ্বারা মুছিয়া বলিল,কোমল সুরে
বাভ্রবির কানে কানে বলিল--"হলা,বাভ্রবি,পিয়ে--"বাভ্রবির সমস্ত
শরীর শিহরিত হইয়া উঠিল।
সাতবছরের জন্য
নগর-বধূ, জনপদ কল্যাণী নির্বাচিত হইবার
পর,আম্রপালীর
জন্য নতুন বাসভবন নির্মিত হইল। দাসী,সখী সমাগম
হইল।
আম্রপালীর স্বাধীন স্বচ্ছ তোয়া চলার
দিক পরিবর্তন ঘটিল।দাঁড়ের
ময়না পাখীর মত,ভবন শিখীর
মত আম্রপালীরও পদযুগল স্বর্ণ শিকল দ্বারা
শৃঙ্খলিত হইল। নব বিধান অনুসারে আম্রপালীর স্বাধীনতা রহিল নিজের পছন্দ
অনুযায়ী এক/ দুই রাত্রির
সঙ্গী নির্বাচনের। কিন্তু--
--"কিন্তু?"
আম্রপালীর রক্ত
বিম্বাধরোষ্ঠে আবার সেই
বিষণ্ণ হাসি প্রস্ফুটিত হইল। কিন্তু
আম্রপালীর স্বাধীনতা রহিল না কোনও একজন
পুরুষকে চিরজীবন ভালবাসিয়া
সেই পুরুষের সঙ্গে ঘরবসত
করিবার। নগর-বধূর সেই স্বাধীনতা থাকে না।
নগর-বধূ ঘোষিত হওয়ার
পর আম্রপালীর জীবনের প্রথম
পুরুষ কে? কে হরণ
করিলেন তাঁর কুমারী জীবনের লাজ বস্ত্র? আম্রপালীর নব নির্মিত
ভবনের প্রথম অতিথি রাজা মনুদেব। সেই রাত্রির
অন্ধকারে নগর-বধূ আম্রপালীর
শয়ন কক্ষ সজ্জিত হইল সহস্র
দীপালোকে। আম্রপালীর রক্ত দুকুল আর স্বর্ণ কাঁচুলির
লাজ বস্ত্র পতিত হইল স্বর্ণ পালঙ্কে। ভবনশিখীর পায়ের মল রজ্জুর
ন্যায় বাজিয়া উঠিল। দাঁড়ের ময়না
দুই চক্ষু মুদ্রিত করিল। নগর-বধূ
আম্রপালীর কৃষ্ণ চক্ষু পল্লব হইতে মুক্তার
ন্যায় অশ্রুবিন্দু টলটল করিয়া
উঠিল। নিহত পুষ্প কুমারের অনাবিল মুখ চন্দ্রিমা ধ্যান করিতে করিতে আম্রপালী রাজা মনুদেব কর্তৃক ধর্ষিত
হইতে লাগিল।
বাভ্রবির একদিকে সরোজ-আর
অন্যদিকে বৈশালী গণরাজ্যের আম্রপালী--সময়
সরণি যেন স্তম্ভিত! স্তব্ধ।
ক্রমশ …………
১৪তম পর্ব পড়ুন আগামী বৃহস্পতিবার
লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন ।
লেখিকার পরিচিতি
–
জন্ম-কলকাতায় । আসামের বরাক উপত্যকায় বড় হয়ে ওঠা ।
প্রকাশিত
গ্রন্থ
১--সাপ শিশির
খায় (গল্প গ্রন্থ)
২--দেবী দহন--(কবিতা গ্রন্থ)
ভারতবর্ষ ও
বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ।