Advt

Advt

iha-kanch-nagari-story-upanyas-galpo-10th-part-by-krishna-mishra-bhattacharya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-ইহ-কাঁচ-নগরী-উপন্যাস-কৃষ্ণা-মিশ্র-ভট্টাচার্য

ধারাবাহিক উপন্যাস প্রতি বৃহস্পতিবার ।

iha-kanch-nagari-story-upanyas-galpo-10th-part-by-krishna-mishra-bhattacharya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-ইহ-কাঁচ-নগরী-উপন্যাস-কৃষ্ণা-মিশ্র-ভট্টাচার্য

পর্ব-- ১০

Or, write  my story down  for people. Use my name.

And may it bring you all the wealth  and fame

It hasn't bought  its bearer.Here, let's drink  our wine!

Who could have imagined  such a life as mine?

--"পাপা,হাম কাঁহা যা রহে?"

--"কিউ? তেরি মাম্মি নে নেহি বঁতায়ি?"

--"হাঁ।চাচী কী ঘর--লেকিন হম ইস বাস স্টপ  পে কিউ খাড়ি হ্যাঁয়? ইয়ে তো পুরানি  দিল্লি ওয়ালি  বাসস্টপ  হ্যাঁয়--চাচী কী ঘর--!"

--"আরে সরোজ  তু চুপ হো যা। বহুত  হি  জ্যাদা বলতি হ্যাঁয় তু!"

সরোজ কে চুপ  করিয়ে তুলারাম  একটা বিড়ি  ধরায়।বিড়ির  ধোঁয়া ছেড়ে বলে--"তু বিলকুল তেরি  মাম্মি পর গয়ি।ইসিলিয়ে লোগ লেড়কি লোগোঁকো স্কুল  নেহি ভেজতে।"সরোজ  কোনও  উত্তর  না দিয়ে  চুপ করে থাকে। ইতিমধ্যেই  অনেক গুলো  বাস এলো,চলেও গেল।তুলারামের  কোনও  ভ্রুক্ষেপ নেই। হঠাৎই  যেন  ধূমকেতুর মত উল্টো দিকের ফুটপাথ  থেকে একটা লোক নেমে এলো--তুলারাম  তাকে দেখেই  আহ্লাদে  গদগদ হয়ে,দুহাত  জোড় করে --"নমস্তে সাব" বলতেই  সরোজ দেখল লোকটার গলায় সোনার  চেন আছে,হাতে দামী ঘড়ি এবং লোকটাকে দেখতে  ধূর্ত  মতন--কেমন ঘড়িয়ালের মত মুখ। এটুকু বলে সরোজ থামতেই প্রেসের ক্যামেরা  প্রেমমতীর  ঘর গেরস্থালী  ফোকাস  করে--।সাংবাদিক  মেয়েটি প্রশ্ন  করে--"তারপর?"সরোজ এবার  ডুকরে কেঁদে ওঠে।

তুলারাম  আর ঐ লোকটা সরোজ কে নিয়ে এবার  একটা রোড সাইড  টী স্টল কে ঢোকে।

--"পাপা ইহা ক্যা করনা হ্যাঁয়?"তুলারাম  দাঁত বের করে হাসে-।

--"আরে বহুত  দূর যানা  হ্যাঁয় না--থোড়া চায় পানি লে লেতে--"

সরোজের  অনিচ্ছা সত্ত্বেও  ওরা তিনজনের  জন্য  চা আর ব্রেড  পকোড়ার  অর্ডার করে।পেপার  কাপে চা আর পেপার  প্লেটে  ব্রেড পকোড়া নিয়ে ওরা তিনজন রাস্তায় নামে।চায়ে দু চুমুক  দিতেই  সরোজের  মাথা ঘুরতে থাকে--চোখে ঝাপসা  দেখতে শুরু করে---

--"তারপর।"

সরোজ দু হাঁটুর  মাঝখানে  মুখ লুকিয়ে বলে

--"ইসকে  বাদ  মুঝে  কুছ  ইয়াদ  নেহি  হ্যাঁয়!"

সবাই  চুপ।কিছুক্ষণ  পর সরোজ নিজেই  চোখ মুছে কড়িকাঠের  দিকে চোখ তুলে ধীরে ধীরে  বলতে শুরু করে। শুনতে শুনতে কখনও  শিউরে ওঠে,কখনও  রাগে ভিসুভিয়াস  আবার  কখনও  চোখ ফেটে জল আসে বাভ্রবির;সাংবাদিক  মেয়েটি সরোজের  কাহিনী রেকর্ড বদ্ধ  করতে করতে নিজের  মনেই  বলে ওঠে--'Truth is stranger  than fiction!"

একটা পর্দা ঘেরা অন্ধকারের ঘরে ঘুম ভাঙ্গল সরোজের।সকাল না বিকেল কিছুই  ভাল  করে বুঝতে  পারছিল  না।

--"মেঁ কাঁহা হুঁ?"

সরোজের  গলার  সুরে পাশের  খাটে বসা একটি মেয়ে--সরোজের  ই বয়সী মনে হল--ওর হাতে হাত রেখে বলল--"অব্ ক্যায়সি হো তু?দো দিন হো গিয়া তেরা নিঁদ  নেহি টুটি।"

--"তুম কৌন হো?"

এ এক অন্ধকার  রৌরব।এখানে  দিন শুরু হয় দুপুর বেলা থেকে--রাতের মহফিল  চলে ভোর তক্ !মোতিয়া, মালা,কাজরি, আর  ঘুঙুরের  বোল--।না,সময়ের  সাথে সাথে পাল্টেছে রূপটান।

এ এক আদিম,মাংসল, ব্যবসা!মানুষ--না মানুষীদের  দেহকে  ক্যাপিটাল  বানিয়ে ব্যবসা র এই  পদ্ধতি  কত পুরনো?

--"মেঁ নীনা।"

সরোজ  এর সামনে নীনা  তার মা,বাবার  গল্প  বলে--সুদূর নেপাল  থেকে ওকে নিয়ে এসেছে ওরই গ্রামের  একটি ছেলে--ধনরাজ।নীলা ধনরাজ কে ভালবেসেছিল--একদিন  রাতে এক কাপড়ে  ওর সাথে  নিজের  পরিবার, বাড়ি ছেড়ে  বেরিয়ে এসেছিল।

নীনার চোখে জল ছিল  না। সরোজ কাঁদছিল।

--"মেঁ মর জায়ুঙ্গী--ইয়ে গন্ধা কাম  মুঝসে  নেহি হোগা।"

নীনা হেসেছিল।বলেছিল কোনও  লাভ নেই। না খেয়ে থাকলে ওরা আরও  অত্যাচার  করবে--অনেক  টাকা দিয়ে কিনেছে--টাকা গুলো উসুল হলে তারপর--

--"তারপর?"

নীনা খুব  বিষণ্ণ  হেসে বলেছিল--"তারপর আবার  কোথাও  বেচে দেবে--অথবা দুবাই পাঠিয়ে  দেবে।"

সরোজ উঠে বসেছিল।অন্ধকার  ঘরে ওর জন্য  সুস্বাদু  খাবার  এসেছিল!সুন্দর  চমকদার খাটো পোশাক।মৌসি  ওকে বিউটি পার্লারে  নিয়ে গিয়েছিল।আগা পাশতলা মেরামত  হয়েছিল  ওর।ওয়াক্সিং,প্যাডিকিওর, ফেসিয়াল!আয়নার  সামনে দাঁড়িয়ে  নিজেকে দেখে নিজেই  চমকে উঠেছিল  সরোজ।মৌসি ওর নতুন  নামকরণ  করেছিল--"চামেলি।"

--"বুঝলি,তোর ঐ সরোজ নাম বাপু এখানে চলবে না। এটা রঙ্গিন  দুনিয়া। লোক এখানে সংসার  ভুলতে আসে--মস্তি  করতে আসে--তাই--যত চটকদার  নাম হবে-যত রং দেখাবে ততই  তোর কদর বাড়বে!"

সরোজ ওরফে  চামেলি  ভার্জিন। অর্থাৎ কুমারী। মৌসি  ওকে জিজ্ঞেস  করেছিল--"কোই বয় ফ্রেন্ড কে সাথ লাফড়া তো নেহি  কিয়া  না?"

কান্না চেপে মাথা নেড়েছিল  সরোজ

--"নেহি।"তবু ওদের  কোঠি বাড়ির মহিলা ডাক্তার  দেখিয়ে  সরোজের  ভার্জিনিটি  টেস্ট  করিয়ে তবেই  নিশ্চিন্ত  হয়েছিল  মৌসি। অনেক  টাকায় নথ খোলানোর আয়োজন---

বাভ্রবির  মনে আবার  সেই  প্রশ্ন--এই  মেয়েমানুষের দেহকে মূলধন বানিয়ে ব্যবসা কবে--কখন--

হঠাৎই  নূপুর এর সুরে চমকে তাকায় বাভ্রবি--প্রেমমতীর  বাড়ি একটি সুন্দর  আম্রকুঞ্জে পরিণত--আর সেখানে একটি পালিত ময়ূরকে  আদর করতে করতে এক নারী --অপরূপ  তাম্বূল রঞ্জিত  ওষ্ঠাধর--গাঢ় রক্ত বর্ণের কাঁচুলি--আর নীলাভ দুকুল--

--"আপনি?"

আম্বপালী! বৈশালীর শ্রেষ্ঠ  গণিকা। রাজ নর্তকী।"

বাভ্রবির  সামনে এক রূপকথার  দেশ—

ক্রমশ ………… 

১০ম পর্ব পড়ুন আগামী বৃহস্পতিবার

 

লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন । 

লেখিকার পরিচিতি –        

জন্ম-কলকাতায়  আসামের বরাক উপত্যকায় বড় হয়ে ওঠা 

প্রকাশিত গ্রন্থ

১--সাপ শিশির খায় (গল্প গ্রন্থ)
২--দেবী দহন--(কবিতা গ্রন্থ)

ভারতবর্ষ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত