Advt

Advt

beriye-asun-shankarda-potka-in-jharkhand-travel-vramon-by-biswajit-chakraborty-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-শঙ্করদা-পোটকা-ভ্রমণ-বিশ্বজিৎ-চক্রবর্তী

beriye-asun-shankarda-potka-in-jharkhand-travel-vramon-by-biswajit-chakraborty-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-শঙ্করদা-পোটকা-ভ্রমণ-বিশ্বজিৎ-চক্রবর্তী


সুন্দরের খোঁজে যখন আমরা দেশ থেকে দেশান্তরে ছুটে বেড়াই, তখন আমরা ভুলে যাই যে আমাদের বাড়ির পাশেই রয়েছে এমন কিছু অপূর্ব সুন্দর স্থান, যার খোঁজ আমরা রাখিনা। রীতিমত উপেক্ষিতই থেকে যায় সেই সব অচেনা অজানা সুন্দরীরা। যেমন শঙ্করদা পোটকা। নামের মধ্যেই রয়েছে এক আদিবাসী সারল্যের গন্ধ।

পশ্চিমবঙ্গের একদম নিকটতম প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ড। এই ঝাড়খণ্ডেরই এক অসাধারণ সুন্দর স্থান হল এই শঙ্করদা পোটকা (Shankarda Potka ) বাঙালির অত্যন্ত প্রিয় পর্যটনকেন্দ্র ঘাটশিলা আর শিল্প নগরী টাটা - র মাঝখানে অবস্থান এই শঙ্করদা - র। এখানে নেই শহরের কোলাহল , যন্ত্র দানবের দৌড়াত্ব আর দূষণ। বর্তমান সময়ের আধুনিক সভ্যতা যেন এখানে মুখ থুবড়ে পড়েছে। এখানে আদি - অন্ত শুধুই অনাবিল প্রকৃতির স্নিগ্ধ হাতছানি। তার মন প্রাণ ভুলিয়ে দেওয়া নৈসর্গিক সৌন্দর্যের ডালি। এখানে দাঁড়িয়ে দূরের ঢেউ খেলানো পাহাড়ের সারি দেখতে দেখতে যে কোনও প্রকৃতি প্রেমিক পর্যটকের হৃদয় ভালো লাগার  অনুভূতি এনে দিতে পারে ।

beriye-asun-shankarda-potka-in-jharkhand-travel-vramon-by-biswajit-chakraborty-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-শঙ্করদা-পোটকা-ভ্রমণ-বিশ্বজিৎ-চক্রবর্তী


শঙ্করদা থেকে প্রায় তিন -- সাড়ে তিন কিমি দূরে আর এক অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে  ভরপুর স্থান হল পাহাড়ভাঙা। এখান দিয়েই বয়ে চলেছে সুবর্ণরেখা নদী। নদীর বুকে জেগে থাকা পাথরের গায় ধাক্কা খেতে খেতে আদিবাসী কিশোরীর উচ্ছলতায় আপন খেয়ালে বয়ে চলেছে সে। আশেপাশে পাহাড়ের সারি , ইতস্তত বিক্ষিপ্ত শাল, মহুয়া, পলাশের জঙ্গল । বসন্তে যখন এই সমগ্র অঞ্চল জুড়ে ফুটে থাকে লাল পলাশ , তখন যেন মনে হয় সম্পূর্ণ অঞ্চলে আগুন লেগেছে । তখন যেন এই শঙ্করদা পোটকা শিল্পীর ক্যানভাসে আঁকা ছবি। স্থানীয় মানুষজনের কাছে এই পাহাড়ভাঙা বর্তমানে এক প্রিয় বেড়ানোর এবং পিকনিক করার জায়গা হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। শঙ্করদা থেকে মাত্র ৮ কিমি দূরে ঝাড়খণ্ডের অন্যতম জনপ্রিয় এবং পবিত্র মন্দির রঙ্কিণী দেবীর মন্দির । যদুগোড়ার পথে অবস্থিত এই রঙ্কিণী দেবীকে স্থানীয় মানুষেরা অত্যন্ত জাগ্রত বলে মনে করেন।কেউ কেউ এই দেবী মা কে আদিবাসী সম্প্রদায়ের দেবী বলে মনে করেন। আবার অনেকেই মনে করেন এই দেবী ধলভুমগড়ের রাজাদের গৃহদেবতা। পাহাড়ের গুহায় এই মন্দির। মন্দিরের উল্টো দিকেই গভীর খাদ। এই খাদে নামার জন্য সিঁড়ি করা আছে । এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও অসাধারণ । প্রাচীন এই মন্দিরটি প্রথমে নির্মিত হয়েছিল ঘাটশিলায়। পরে এটি স্থানান্তরিত করা হয় এই পাহাড়ের গুহায়। তবে ঘাটশিলা ষ্টেশনের কাছে এখনও রয়েছে সেই প্রাচীন মন্দির । শতাধিক বছরের প্রাচীন এই মন্দিরে একসময় নরবলি প্রথা চালু ছিল । ব্রিটিশ শাসকদের হস্তক্ষেপে সেই জঘন্য প্রথা বন্ধ হয়। আবার ইচ্ছে হলে বা হাতে সময় থাকলে ঘুরে নেওয়া যায় শঙ্করদা টোটকা থেকে প্রায় ৩০ কিমি দূরে আর এক সুন্দর স্পট রাত-মোহনা থেকেও।

শঙ্করদা পোটকা যাওয়ার জন্য হাওড়া থেকে আসতে হবে টাটা নগর । যাচ্ছে স্টিল এক্সপ্রেস , ইস্পাত এক্সপ্রেস প্রভৃতি ট্রেন। টাটা থেকে শঙ্করদা পোটকা প্রায় ১৭ -- ১৮ কিমি পথ যেতে হবে গাড়িতে। আর রাত-মোহনা থেকে শঙ্করদার দূরত্ব ৩০ কিমি। যেতে হবে গাড়িতে।

থাকা -- খাওয়া ---- শঙ্করদাতে আছে রিসোর্ট উইক এন্ড। এখানে রয়েছে সুন্দর, জানা অজানা বহু গাছ নিয়ে তৈরি এক সুন্দর বাগান , বাচ্চাদের খেলার জায়গা , একটি সুন্দর পুকুর। আছে খাওয়ায় ব্যবস্থা এবং ট্রাভেল ডেস্ক । ফোন -- ০৯২৩৪৬৪৩৫৪০ , ০৮৭৫৭৭৮০৯১০ ।

আর রাতমোহনায় আছে রিসোর্ট রাত-মোহনা ইন । একদম সুবর্ণরেখা নদীর তীরে অবস্থিত এই রিসোর্টটিতেও আছে খাবার ব্যবস্থা এবং ট্রাভেল ডেস্ক। তবে রাত-মোহনা থেকে শঙ্করদা যেতে হলে ওই একই টাটা-গামী ট্রেনে এসে নামতে হবে ঘাটশিলা ষ্টেশনে। ঘাটশিলা থেকে অটো বা গাড়িতে যেতে হবে রাত-মোহনা

 লেখক পরিচিতি -

জন্ম কলকাতায়। দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতা। সাপ্তাহিক বর্তমানে ভ্রমণ নিয়ে নিয়মিত লেখেন। বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে এবং তথ্য সংগ্রহে আনন্দ পান ।