Advt

Advt

bangkok-travel-vromon-feature-by-dipanwita-bandopadhaya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-ব্যাঙ্কক-ভ্রমণ-দীপাণ্বিতা-বন্দ্যোপাধ্যায়

bangkok-travel-vromon-feature-by-dipanwita-bandopadhaya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-ব্যাঙ্কক-ভ্রমণ-দীপাণ্বিতা-বন্দ্যোপাধ্যায়

 

       কোলকাতা থেকে রাত দুটোয় আকাশযানে চেপে চলে যাই ব্যাঙ্কক । আকাশপথে ছিলাম মাত্র আড়াই ঘণ্টা কিন্তু ব্যাঙ্ককের ঘড়ির সময় আমাদের ভারতবর্ষ থেকে আড়াই ঘণ্টা এগিয়ে । তাই আমরা ব্যাঙ্ককের মাটি স্পর্শ করি সকাল সাড়ে ছটায় । থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক মধ্য থাইল্যান্ডের চাও ফ্রেয়া নদীর বদ্বীপে অবস্থিত । থাইল্যান্ড ভ্রমণ করতে হলে প্রথম যা প্রয়োজন , যা প্রয়োজন তা হলো , তাদের মুদ্রা - বাট । আমরা এখান থেকে যাবার আগেই টাকা পরিবর্তন করে ' বাট ' করিয়ে নিয়েছিলাম । ব্যাঙ্ককে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়েই দেখতে পাই ঝাঁ চকচকে শহর ।

bangkok-travel-vromon-feature-by-dipanwita-bandopadhaya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-ব্যাঙ্কক-ভ্রমণ-দীপাণ্বিতা-বন্দ্যোপাধ্যায়


      হোটেলে পৌঁছে প্রাতরাশ সেরে আমরা পায়ে পায়ে বেড়িয়ে পড়ি শহর ভ্রমণে । জমজমাট শহরের রাস্তায় যাত্রী নিয়ে ছুটে চলেছে একাধিক টুকটুক বা অটোরিকশা । আমরা স্বাধীনভাবে টুকটুক চেপে শহরে ঘুরে বেড়াই । দূর থেকে দেখি , ব্যাঙ্ককের প্রধান দ্রষ্টব্য ' চাও ফ্রেয়া নদীর পশ্চিম তীরে না ফ্রা লারন রোডের ওপর প্রায় এক বর্গ মাইল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত প্রাচীন রাজপ্রাসাদ । হোটেলে তাড়াতাড়ি ফিরে আসি সুইমিং পুলের নেশায় ।

         বিকেলে ছটার সময় আমরা ' চাও ফ্রেয়া ' নদী বক্ষে ভাসমান ক্রুজের উদ্দেশ্যে যাত্রা করি । সকাল থেকেই শুনেছিলাম , সন্ধ্যায় আমাদের গন্তব্য হবে  " evening dinner cruise by Chao phraya princess" ইতিপূর্বে না দেখা জিনিষ দেখতে পাবার আশায় মনে মনে একটা আগ্রহ ছিল । যখন সুসজ্জিত জেটিতে এসে উপস্থিত হলাম এবং নদীতীরে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্তের শোভা দেখলাম তখন মনটা আনন্দে ভরে উঠছিলো । আস্তে আস্তে সূর্যদেব অস্ত গেলেন এবং নদীতীর আলোক মালায় উজ্জ্বল হয়ে উঠল । নদী বক্ষে ভাসমান ক্রুজগুলিও আলোক শোভিত । আকাশ থেকে আনন্দ ধারা বর্ষণ হতে থাকলো । মাথায় ছাদ থাকায় আমরা নদীর জলে ঝরে পড়া ধারা বর্ষণের সৌন্দর্য উপলব্ধি করি বর্ষণ সিক্ত না হয়েই । ক্রুজে ওঠার পর স্থানীয় সুসজ্জিত নর - নারীরা আমাদের অভ্যর্থনা জানায় তাদের নাচ গানের মাধ্যমে । সেখানে দেখলাম , দেশ বিদেশের হরেক রকমের খাবার আমাদের অপেক্ষা য় রয়েছে । ক্রুজের ছাদ থেকে আলোকমালা শোভিত ব্যাঙ্ককের রাজবাড়ী দেখে মুগ্ধ হলাম । নদী বক্ষে আমরা দুঘন্টা ভ্রমণ করলাম । সমস্ত রকম আলোর প্রতিচ্ছবি পড়ে নদীর জল ঝিকমিক করছে । সারা সন্ধ্যাটা আমরা এক অনাবিল আনন্দ উপভোগ করি ।

bangkok-travel-vromon-feature-by-dipanwita-bandopadhaya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-ব্যাঙ্কক-ভ্রমণ-দীপাণ্বিতা-বন্দ্যোপাধ্যায়

            পরের দিন সকাল সাড়ে আটটায় আমরা হোটেল থেকে বেরিয়ে পড়ি " সাফারি ওয়ার্ল্ড এবং মেরিন পার্ক টুর " এর উদ্দেশ্যে । এখানে এসে আমরা বিভিন্ন শো দেখি __ হাতি , ডলফিন , সীল মাছেরা খেলা দেখায় । ডলফিনের নাচ আমাদের মুগ্ধ করে । তারপর একটি গাড়ি আমাদের নিয়ে বিশাল এলাকা জুড়ে ঘুরে ঘুরে অনেক প্রাণীদের দেখায় । উন্মুক্ত জঙ্গলের ভেতর ঘুরে বেড়ানো বাঘ , সিংহ , ভল্লুক , হরিণ , গন্ডার , জলহস্তী  দেখে আমরা উত্তেজিত হয়ে উঠি । আমরা অনায়াসেই সেই সব প্রাণীদের লেন্সবন্দী করে ফেলি । অনেক রকম পাখি ___ বিভিন্ন রংয়ের ময়ূর , মরাল , সারস দেখে চোখ জুড়িয়ে যায় । ইচ্ছা না থাকলেও অবশেষে সেখান থেকে চলে আসতে হয় পূর্ব নির্ধারিত " বাফেট লাঞ্চে " এই সাফারি ওয়ার্ল্ডের ভেতরে । হরেক রকম সুস্বাদু খাবারের সম্ভার সাজিয়ে অন্তত হাজার হাজার জনের একসাথে খাবার ব্যবস্থা করে রেখেছিল তারা । সারাদিন সেখানে আমরা আনন্দ করে ঘুরে বেড়াই । হোটেলে ফিরে রাত আটটার সময় বেড়িয়ে পড়ি রাতের শহর দেখবার জন্য । হোটেলের কাছাকাছি " খাওসান রোডের " রাতের জীবন অদ্ভুত । সেখানকার পরিবেশ আমাদের বেমানান হওয়ায় আমরা চট জলদি হোটেলে ফিরে এসে বিশ্রাম নি । 

bangkok-travel-vromon-feature-by-dipanwita-bandopadhaya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-ব্যাঙ্কক-ভ্রমণ-দীপাণ্বিতা-বন্দ্যোপাধ্যায়

             পরের দিন আমরা ব্যাঙ্ককের একটি বিখ্যাত বৌদ্ধ মনেষ্ট্রি দর্শনে যাই । বিশালাকার মনেষ্ট্রিতে শায়িত রয়েছে বড় গোল্ডেন বুদ্ধ মূর্তি । সেখানে আমরা কিছুক্ষন ভগবান বুদ্ধদেবের পদতলে আমাদের মনের আশা জানিয়ে আসি । সমস্ত মনেষ্ট্রি বিভিন্ন গাছ ও ফুলে সাজানো রয়েছে ।

           ইচ্ছা না থাকলেও মাঝে মাঝে উপায় থাকে না । তাই বাধ্য হয়ে তাড়াতাড়ি হোটেলে ফিরে আসি । কারণ সেদিন রাতে আমাদের কোলকাতার উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে হয় । ব্যাঙ্কক শহর বহুদিন আমাদের মনের মণিকোঠায় সঞ্চিত থাকবে ।

লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

লেখিকার পরিচিতি –

শিক্ষকতা ও সংসার সমুদ্রে ভাসতে ভাসতে সাহিত্য চর্চার সময়ে টান পড়েছিল এক সময়ে। মনের সুপ্ত বাসনা মনেই লুকিয়ে ছিল । সময় পেলেই খাতা, কলম নিয়ে বসে যান লিখতে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখেন। মনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা অনুভূতিগুলো বেড়িয়ে আসে কবিতা হয়ে। কবিতাকে ভালবেসে ফেলেছেন।