Advt

Advt

iha-kanch-nagari-story-upanyas-galpo-2ndpart-by-krishna-mishra-bhattacharya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-ইহ-কাঁচ-নগরী-উপন্যাস-কৃষ্ণা-মিশ্র-ভট্টাচার্য

ধারাবাহিক উপন্যাস প্রতি বৃহস্পতিবার ।

iha-kanch-nagari-story-upanyas-galpo-2ndpart-by-krishna-mishra-bhattacharya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-ইহ-কাঁচ-নগরী-উপন্যাস-কৃষ্ণা-মিশ্র-ভট্টাচার্য

পর্ব--

Let high noon enter-

The hour of the ghosts.

Once the Romans believed

The noon was the ghost hour.

 

আকাশ আগুনবৃষ্টি রছিল। টপ ফ্লোরের কোয়ার্টার,তপ্ত  যেন  উনুন! সারা দুপুর  শীতল পাটি বিছিয়ে  বাভ্রবি "দেশগুলো পড়তে কখন যেন  ঘুমিয়ে  পড়েছিল। যুধাজিৎ ডিপার্টমেন্টে। ক্যাম্পাস লাইফ, দুপুরের  খাওয়া তাই বাড়িতেই। রোজই  একবার  করে যুধাজিৎ বলে--"এবার  একদিন  গিয়ে ডেসার্ট কুলারটা কিনে আনতে হবে।"

এপাশ ওপাশ করতে করতে কখন যেন একটা বৃষ্টির দেশে হাঁটছিল  বাভ্রবি--একলা ভিজে ভিজে  যাচ্ছিল--বৃষ্টিস্নাত গাছগুলোর  শরীর বেয়ে করুণাধারার মতো বৃষ্টিরা  নেমে আসছিল--ছড়িয়ে  পড়ছিল--একাকী অরণ্য নিসর্গে  হারিয়ে  যেতে যেতে হঠাৎই  থমকে দাঁড়িয়েছিল।

অদূরে  বয়ে চলেছে শিপ্রা-নদী--উপচে  পড়া  ঘোলা জল মাঝে মাঝেই  চমকে উঠছে,উছলে  উঠছে  বিদ্যুৎ দাম রেখায়--এক উল্লাস মুখর  কবি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে  ভিজে যাচ্ছেন। কাঁধের উত্তরীয়  একপাশে ভিজে ন্যাতার মত জড়িয়ে আছে--অবিরাম  জলধারা চুঁইয়ে পড়ছে  মাথা থেকে চিবুক,চিবুক থেকে খোলা বুক  এবং বুক থেকে কটিতটে---

বাভ্রবি তাড়াতাড়ি  কাছে গিয়ে  বলল--"আপনি যে অনেকটা ভিজে  গেছেন কবি।"

কবি উল্লসিত  সুরে বললেন--"সুচরিতে,আজ অসাধারণ  একটি কান্ড হলো।"

--"বলুন কবি--"

সুচরিতে,আজ আমি মেঘদূতম কাব্য  লেখা শুরু  করতেই  আকাশ ভেঙ্গে  মেঘের  দামামা  বেজে উঠল--শিপ্রা নদীর  বুক হিল্লোলিত,

কল্লোলিত

উচ্ছ্বসিত  হইতে লাগিল--"

বাভ্রবির  সমস্ত  শরীর  রোমাঞ্চিত  হয়ে উঠল। দুহাত  জোড় করে  বলল--"নমস্তে ত্বম মহাকবিম--"

দরজার অধীর  কড়ানাড়ার শব্দে ধড়মড়িয়ে  উঠল বাভ্রবি--। মাত্র চারটে বাজে। কর্কশ  নীল আকাশে অকৃপণ  সূর্য রশ্মি।

--"কৌন?"

--"বিবিজি, মেঁ-প্রেমমতী।"

--"ইতনা জলদি আ গিয়া?"

--"দরওয়াজা খোলিয়ে তো।"

বাভ্রবি একটু বিরক্ত  হলো--অসময়ে দিবানিদ্রা চটে গেল। হয়ত বিকেলে কোথাও  বেড়াতে টেরাতে যাবে-তাই সাত তাড়াতাড়ি--

দরজা খুলে দিতেই  হুড়মুড়িয়ে ঘরের  ভেতর  ঢুকেই  মেঝেতে থেবড়ে  বসে পড়ল প্রেমমতী।

--"বিবিজি মেরা পতিনে মেরি বেটি কো বেচ্ দিয়া!"

--"হোয়াট?"

বাভ্রবি সোফা  ছেড়ে  উঠে  দাঁড়িয়ে  পড়ল!

"বেচ্ দিয়া?মতলব?

বাভ্রবির  চোখের  সামনে যে মধ্য যুগীয়  কোনও  দৃশ্য  অভিনীত হচ্ছিল--অথবা একটা গল্পের  পাতা যেন উড়ে  এলো--

প্রেমমতী নামের  একটি কৃষক পরিবারের  কিশোরীর বিয়ে  হয় দিল্লির  যোগেশ নামের  এক সাফাই কর্মচারীর সাথে। প্রেমমতীর বয়স ১৫,আর যোগেশর বয়স ২৭। বাল্য বিবাহে প্রেমমতীর  কোনও  আপত্তি তো ছিল ই না,বরং ওর সৌন্দর্য  দেখে বিনা পণে  শাদী  করেছিল  যোগেশ--তাই প্রেমমতীর  পরিবার ও ছিল  খুশী খুশী। কিন্ত  সমস্যাটা বাধল  বিয়ের  তিনবছরের  মাথায় মাথায়  কন্যা সন্তানের  জন্ম  হবার  পর। যোগেশ এবং যোগেশর  মা সাফ ভাষায় জানিয়ে দিল--"আগলি বার লেড়কা চাহিয়ে। "প্রেমমতীর  ফুটা কিসমত! লেড়কি ই হুয়ি।

--"তারপর?"

প্রেমমতী কপালের  ঘাম মুছে বলল--"যোগেশ নে মুঝে  ত্যাগ দিয়া।"

--:ফির?"

--"মা,বাবার  বাড়িতে কোনরকম  দুই  মেয়ে নিয়ে চলছিল। তারপর তুলারামের  পছন্দ  হয়ে গেল প্রেমমতীকে।

--"তুলারাম?"যো ইনস্টিটিউট  মেঁ পিওন হ্যাঁয়?

--"হা ওহি। ওহি মেরা দুসরা পতি হ্যাঁয়!

তারপর  হঠাৎই  ধড়মড়িয়ে উঠে দাঁড়াল  প্রেমমতী।

--:"বিবিজি,টাইম কিতনা হুয়া?

--"সাড়ে পাঁচ।"

--:"বাপরে। অব জানা  চাহিয়ে।"

--"কাঁহা "

"পুলিশ  ষ্টেশন।"

"হামারা কাটোরিয়া সরাই  হৌজখাস  থানে  মেঁ হ্যাঁয়  না বিবিজি?"

--"হাঁ।"

-"তো উহা যাকে কমপ্লেন লিখানা হ্যাঁয়। "বাভ্রবি একটু সময় চুপ করে থেকে বলল--"তুম,তুমহারা  হাজব্যান্ড কে খিলাপ কমপ্লেন  দর্জ  করোগে?"

প্রেমমতী ফুঁসে  উঠল--"তো? উসনে মেরি বেটি কো বেচ  দিয়া--ইয়ে  অপরাধ নেহিঁ হ্যাঁয়?"

বাভ্রবির ঠোঁটের  কোণায় তেতো  হাসি। এই  সামান্য  কাজ করে খাওয়া মেয়েটির  যে সাহস আছে অনেক  তথাকথিত  লেখাপড়া জানা মহিলাদের  তা নেই।

বাভ্রবি তাড়াতাড়ি  শাড়ি পাল্টে প্রেমমতীর  কাছে এসে বলল--"চলো। আমিও  যাব তোমার  সাথে।"

প্রেমমতীর  চোখের  কোণ  হেসে উঠল।

--"সচ  বিবিজি? আপ  চলোগে  মেরি  সাথ?"

বাভ্রবি যুধাজিৎ এর জন্য  একটি ছোট্ট  নোট লিখে নিজের পার্স নিয়ে ঘরে তালা লাগিয়ে সিঁড়ি  দিয়ে  নাবতে নাবতে বলল--"চলো। গেট সে এক অটো লে লেঙ্গে। আর যেতে যেতে পুরো ঘটনাটা তোমার  কাছ থেকে ভাল  করে শুনে নেবো।"

ওরা দুজন দ্রুত  পায়ে  সিঁড়ি  ভাঙ্গতে  থাকে। আকাশ তখনও  কর্কশ  ভাবে আলো  বিকিরণ  করে চলেছে।

 লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন । 

লেখিকার পরিচিতি –

জন্ম-কলকাতায়  আসামের বরাক উপত্যকায় বড় হয়ে ওঠা 

প্রকাশিত গ্রন্থ

১--সাপ শিশির খায় (গল্প গ্রন্থ)
২--দেবী দহন--(কবিতা গ্রন্থ)

ভারতবর্ষ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত

ক্রমশ …………

৩য় পর্ব পড়ুন আগামী বৃহস্পতিবার