Advt

Advt

chhay-minter-ghume-smaran-shakti-bare-O-bish-jader-jiban-bachay-jana-ajana-o-sahitya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-জানা-অজানা

chhay-minter-ghume-smaran-shakti-bare-O-bish-jader-jiban-bachay-jana-ajana-o-sahitya-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-জানা-অজানা

ছয় মিনিটের ঘুমে স্মরণশক্তি বাড়ে

'ঘুম' জীব জগতের অতি পরিচিত এক অনুষঙ্গ। প্রাণী বিজ্ঞানীদের মতে ঘুম দিয়েই জীবনের সূচনা। আবার গভীর ঘুম দিয়েই জীবনের অবসান। জীবনের শুরু ও শেষের মাঝামাঝি সময়টাও ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে শরীর সুস্থতার জন্য ঘুম অতি দরকারি উপাদান। ব্যত্যয় ঘটলে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা এমনকি মানসিক বিকৃতিও ঘটতে পারে বলে অভিজ্ঞ মহলের অভিমত।

ঘুম নিয়ে তাই সবাই কম-বেশি চিন্তিত। বেশি ঘুম হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এ নিয়ে খুব একটা কথা বাড়ান না। কিন্তু সমস্যা হলো নির্ঘুম দলকে নিয়ে। শরীর বৃত্তীয় নানা জটিলতায় ঘুমের রাজ্য সীমিত হতে পারে। এজন্য নেপথ্য কারণ খুঁজে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। অথচ কেউ কেউ ঘুম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে গিয়ে বাড়তি নির্ঘুম পরিস্থিতি ডেকে আনেন। যা কোনভাবেই কাম্য নয়। তাই এসব ব্যাপারে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া, হালকা ব্যায়াম ও সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে খুব ভাল ফল পাওয়া যায়।  মোটকথা ঘুম নিয়ে এ পর্যন্ত বহু গবেষণা হয়েছে এবং আজও হচ্ছে। গবেষকেরা একটি মজার তথ্য জানিয়েছেন। তাদের মতে, মাত্র ছয় মিনিটের 'বিড়াল ঘুম' বা তন্দ্রাভাব স্মৃতি পরীক্ষায় ব্রেণকে যথেষ্ট কার্যকর অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে।

ইউনিভার্সিটি অব ডাসেলডর্ফ-এর একদল গবেষক সম্প্রতি নিউ সায়েন্টিস্ট সাময়িকীতে প্রকাশিত এক রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন, কিছু সংখ্যক ছাত্রের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন। তারা জানান, এক সেট শব্দ মুখস্ত বলার জন্য কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীকে বাছাই করা হয়। এদের দুই দলে বিভক্ত করে প্রথম দলকে পরীক্ষা নেয়ার আগে ছয় মিনিট চোখ বন্ধ রেখে সংক্ষিপ্ত 'বিড়াল ঘুম'-এর সুযোগ দেয়া হয়। বাকিদের দেয়া হয় দীর্ঘ ঘুমের সুযোগ। ঘুম শেষে পরীক্ষা নিয়ে দেখা গেছে স্মৃতি পরীক্ষায় ভাল করেছে প্রথম দল। এতে গবেষক দল এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, মাত্র ছয় মিনিট চোখ বন্ধ রেখে সংক্ষিপ্ত ঘুম বা তার একটি পর্যায়ে ব্রেণের সেল বা কোষগুলো অধিক কর্মক্ষম হয়। তাতে স্মৃতিশক্তি প্রখরতা লাভ করে আশ্চর্য গতিতে। অবশ্য এতে দ্বিমত পোষণ করেছেন ব্রিটেনের একজন।

প্রখ্যাত চিকিৎসক। লাফরফে ইউনিভার্সিটির পি রিসার্চ সেন্টারের (ঘুম গবেষণা কেন্দ্র) প্রফেসর জিম হর্ণের মতে,সমীক্ষাটি গুরুত্বপূর্ণ তাতে সন্দেহ নেই। তবে স্মৃতি বা স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে এটিই একমাত্র কারণ তেমনটি তিনি মনে করেন না। এ ব্যাপারে আরো নিবিড় গবেষণা দরকার। তবে গবেষক দলের প্রধান ড. ওল্যাফ লাহল বলেন, সংক্ষিপ্ত ঘুম বা তন্দ্রাচ্ছন্নভাব ব্রেণের কোষগুলো সজাগ করে তোলে। একই কারণে তন্দ্রালুভাব কেটে যাবার পর স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়। গবেষণায় তেমন ফলই পাওয়া গেছে। প্রথমবার এ নিয়ে যেহেতু গবেষণা হয়েছে তাই বিস্তারিত জানার জন্য আরো সময় প্রয়োজন।

 

-------------------------------------------------------------------------------------------   

 বিষ যাদের জীবন বাঁচায়

যে কোন বিষই প্রাণীর অবধারিত মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তবে এ বিষ কখনও কখনও প্রণীর জীবন ধারণের সহায়ক হিসেবে কাজ করে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্রমোন্নতির ধারাবাহিকতায় সাপের বিষ থেকে তৈরি করা হয়েছে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ। আর এ ওষুধ মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনিজুয়েলার জনগণ গরুর দুধের বিকল্প হিসেবে 'কাউ ট্রি' গাছের রসকে ব্যবহার করে। গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম ব্রসিয়াম ইউটাইল। গরুর দুধের মতো পুষ্টিকর উপাদানের প্রায়গুলোই এ রসে বিদ্যমান। শুধু ভেনিজুয়েলার কাউ ট্রি নয়, আমাদের দেশের বট অশ্বথ কিংবা খেজুর গাছ থেকেও তরুক্ষীর বের হয়। তবে এমন কিছু গাছও রয়েছে যেগুলো থেকে নির্গত হয় বিষাক্ত তরুক্ষীর, যা প্রাণীদের জন্য নিরাপদ নয়। কিন্তু এমনও কিছু প্রাণী রয়েছে যেগুলোর বিষাক্ত রস তাদের জীবনধারণে সহায়তা করে। আকন্দ গাছ থেকে যে মিল্ক উইড বা তরুক্ষীর বের হয় তা কিন্তু বেশ বিষাক্ত। গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরনের গাছের চাষ করে প্রতি একরে প্রায় এক হাজার গ্যালন অপরিশোধিত জ্বালানি তৈরি করা সম্ভব। আকন্দসহ এ প্রজাতির বেশ কিছু উদ্ভিদের তরুক্ষীরই বেশ বিষাক্ত। আকন্দ ছাড়াও করবী,কচ্চ ও ইউফোরবিয়া গোষ্ঠীর গাছ থেকে বের হয় বিষাক্ত রস। যেসব উদ্ভিদ থেকে বিষাক্ত তরুক্ষীর নির্গত হয় কিংবা যেসব গাছের মধ্যে বিষাক্ত তরুক্ষীর থাকে সেসব উদ্ভিদকে শাক আহারি প্রাণীরা খাদ্য হিসেবে গণ্য করে না কিংবা ছোঁয়ও না। কারণ এসব উদ্ভিদের বিষাক্ত বিষ ওইসব প্রাণীর প্রাণনাশের কারণ হতে পারে। শুধু কিছু প্রজাপতির লার্ভা এবং বড় প্রজাপতি এসব বিষাক্ত রস খেয়ে বেঁচে থাকে। শুধু বেঁচে থাকা নয় তাদের জীবনধারণের ক্ষেত্রে এসব বিষ সহায়তা করে থাকে। যেমন-এসব প্রজাপতি এবং এদের লার্ভাদের প্রধান শত্রু হচ্ছে বিভিন্ন পাখি ও গিরগিটি। কিন্তু বিষাক্ত গাছের রস খাওয়ায় প্রজাপতিদের শরীরে কিছু বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে, যা তাদের শত্রুরা বুঝতে পারে। ফলে প্রজাপতি কিংবা এদের লার্ভা শত্রুর আক্রমণ থেকে বেঁচে যায়। সাধারণত এ জাতীয় প্রজাপতির গায়ের রঙ হয় বেশ রঙচঙা এবং ঝলমলে আর ওড়ার গতি হয় ধীর। বিভিন্ন ধরনের আকন্দ গাছের রস খেয়ে জীবনধারণ করে মিঞ্চউড প্রজাপতিগুলো। বিশেষ করে উত্তর আমেরিকায় প্রচুর পরিমাণে মিল্কউড গাছ থাকায় এ প্রজাপতিগুলো সেখানেই বেশি ভিড় জমায়। তাছাড়া মনার্ক প্রজাপতিও এ গাছের রস খায় । আমাদের দেশে যেসব প্রজাপতি বেশি দেখা যায় সেগুলোকে বলা হয় 'বামন ক্রো'। এগুলোও বেশি বিষাক্ত প্রজাপতি। এদের গায়ের রঙ হয় উজ্জ্বল চকলেট ও বাদামি রঙের। তবে নিচের দিক ওপরের মতো এতো উজ্জ্বল থাকে না। অনেক সময় এদের ডানার ওপরের দিকে সাদা ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়। বট, অশ্বথ, আকন্দ কিংবা করবীর বিষাক্ত রসই এদের প্রিয় খাবার। শরীরে বিষাক্ত রস থাকায় এরা ২৪ ঘণ্টাই নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ায়। আরও দুই জাতের প্রজাপতি আছে, সেগুলোর নাম বামন রোজ ও বামন মামন। এরা অবশ্য সোয়ালোটেল গোষ্ঠীর প্রজাপতি। এদের এমন নামকরণের কারণ হল প্রজাপতিগুলোর পেছনের ডানা জোড়া ক্রমশ সরু হয়ে সোয়ালো পাখির মতো আকৃতি ধারণ করে। বামন রোজ প্রজাপতিগুলোর প্রিয় খাবার হচ্ছে বনতুলসী, কসমস কিংবা জিনিয়া ফুলের মধু। অন্যদিকে বামন রোজের শূককীটগুলোর প্রিয় খাবার অ্যারিস্টলবিয়া গাছের পাতা। উলেখ্য অ্যারিস্টলবিয়া গাছের ফুলে থাকে ঝাঁঝালো ও বিস্বাদযুক্ত এরিস্টলবিক এসিড এবং বিষাক্ত কয়েক পদ অ্যালডিহাইড। যেসব শূককীট এসব রস পান করে তাদের দেহ থাকে টকটকে লাল রঙে ভরা। শিকারি প্রাণীরা অবশ্য দেখলেই বুঝতে পারে এ শূককীট তাদের জন্য কতটা ক্ষতিকর। এ জাতীয় আরেক জাতের প্রজাপতি কমন মারমার প্রিয় খাবার হচ্ছে কামিনী ফুলের রস। এদের শূককীট খায় বেল ও বিভিন্ন লেবু গাছের কচি পাতা। যদিও এগুলোতে তেমন বিষাক্ত পদার্থ থাকে না। কিন্তু তারা একই প্রজাতির বিধায় শিকারিরা ধাঁধায় পড়ে শেষ পর্যন্ত এদের খায় না। তবে এমন কিছু উদ্ভিদ আছে যেগুলোর পাতায় থাকে মান্ত্রক বিষাক্ত রস। কিন্তু ওইসব পাতাই অনেক কীটপতঙ্গের প্রিয় খাবার। তারপর পাতায় বিষাক্ত রাসায়নিকের প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে ওই অংশটুকু নির্বিঘ্নে খেয়ে ফেলে।