বুক মহলের সবকটি দরজা বন্ধ।
ফুসফুস আর অক্সিজেন চাইছে না
এখন।
ধীরে ধীরে বরফ শীতল হাত পা।
শত সহস্র স্নিগ্ধ সুগন্ধি
বেলী ফুলে ঢাকা
আমার অনিন্দ্য সুন্দর নিখুঁত
দেহবল্লরী।
চারিদিকে প্রিয়জনের ভীড়।
দু এক জোড়া চোখ ভিজেও উঠেছে
কখন যেন।
কেউ বলছে আহা মানুষটি বড্ড
ভালো ছিল!
কেউ আবার বলছে সে মন্দ লিখতো
না কিন্তু!
কেউ বলছে আহা বড় অসময়ে চলে
গেল!
ইচ্ছে না থাকলেও এসময় একটু
বলতে হয়
তাই ভালো বলছে সবাই।
কেউ অনিচ্ছা সত্ত্বেও দুমুঠো
ফুল ছড়িয়ে দিল
নিথর অকেজো ব্রাত্য শরীরের
উপর।
কারো কারো ব্যস্ততা খুব বেশি।
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শ্মশান
ঘাটের কাজটি
চুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা এই আর কি।
কে যে আপন ছিল,আর কে যে
আপন হওয়ার
ভান করেছে চিরটাকাল সব বুঝতে
পারছি এখন।
দেখছি সব। কষ্ট হচ্ছে খুব
।ছেড়ে যেতে মন চাইছে না।
একান্তই নিজস্ব,নিজে হাতে
গড়া
চির আপন অতুল ঐশ্বর্য পড়ে
রইলো এক পাশে।
ধীরে ধীরে কমে গেল ভীড়।
একে একে চলে গেল
প্রিয় মুখোশধারী অপ্রিয়জন।
আমি অপেক্ষায় রইলাম তোমার।
ভেবেছিলাম আজ শেষ বারের মতো
শেষ দেখা দেখতে একবার অন্তত
আসবে।
দুফোঁটা অশ্রুনীরের সাথে
দুটো উজ্জ্বল নক্ষত্র রঙের
জিনিয়া
বড় আদরের সঙ্গে রাখবে
আমার নিস্তব্ধ বুকের উপর।
তাহলে আমার গ্যালাক্সিতে
পুষ্পবৃষ্টি হতো।
চলে যাওয়াটা মুখর হতো
উল্লাসে।
অপেক্ষায় ছিলাম আমি শেষ
অবধি।
আমার সে ইচ্ছেটুকুও পূর্ণ
হলো না গো।
তুমি কি একেই প্রেম বলো ?
সত্যি করে বলতো অখিলেশ
আমি কি খুব বেশি আশা করে
ফেলেছিলাম?
সত্যিই কি খুব বেশি?
অসম্ভব কিছু?
কবির অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
কবি পরিচিতি –
মনীষা কর বাগচী বিয়ের পর দিল্লিতে আসেন। শৈশব এবং কৈশোর কেটেছে সবুজে শ্যামলে ঘেরা নদীয়া জেলার মাঝেরগ্রাম নামক একটি গ্রামে।
স্কুল থেকেই লেখা লিখি শুরু । নিজের মনেই লিখে যেতেন কত কিছু। আজ সে সব লেখাগুলোও হারিয়ে গেছে। লেখার অনুপ্রেরণা জোগান সেজোকাকা কবি নিশিকান্ত বাগচী।
দেশে এবং বিদেশে অসংখ্য লিটিল ম্যাগাজিনে লেখা প্রকাশিত হয়। প্রতিদিন কিছু না কিছু লেখেন। শ্রদ্ধেয় কাকু বিরাট বৈরাগ্যের সহায়তায় হরিচাঁদ ঠাকুরের গান লিখেছেন।
এ পর্যন্ত লেখিকার নিচের আটটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
১ নীল দিগন্ত
২ চোখের কোণে জল
৩ নূতন ভোর
৪ বসন্তরেণু
৫ শিউলি বেলার সুর
৬ বিবর্ণ বনলতা
৭ তপন বাগচী গভীর অনুধ্যান
৮ স্বপ্ন সফর (গল্প বই)
দু’টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের পথে।
১ শিমুলরঙা সূর্য