"এই দীঘি বুঝি তোমাদের?"
বালকটি প্রশ্ন করে
"না
তো কার?"
বালিকার আদুরে গলায়
ঝরে পড়ে প্রচ্ছন্ন অহঙ্কার,
ছেলে টির মন কেমন করে।
নীল আকাশে চিলের ঘূর্ণিপাক,
দিঘীর কিনারা ধরে বন কলমির ঝাঁক
কি যেন একটা
রেণু রেণু হয়ে বাতাসে ওড়ে।
মিত্তিরদের হাঁস গুলি
মরালির অহঙ্কারে জলকেলি করে ।
"দীঘি
এখনো তোমাদের?"
কৈশোরের দৃঢ় চোয়াল প্রশ্ন তোলে
" এখন
তখন কি? এতো
বরাবরের"
পদ্মকলি রূপ সবটুকু পায়ে জড়ো করে,
কিশোরী আলতো গোড়ালি ডোবায় জলে,
পায়ের পাতায় নেচে বেড়ায়
হাজার সূর্যের আলো,
তবু ঈশান কোণে
বাদলের মেঘ ঘনায় গাঢ় কালো,
বোঝা না বোঝার দোলাচলে,
কি যেন অভিমানে,
কিশোরীর পা ছোঁয়া ঢেউ গুলোও
কঞ্চি দিয়ে কেটে ফেলে।
এর পরে কবে যেন দিঘীর পাড়ের
নারকেল পাতায় ঝিরিঝিরি কাঁপন,
যুবতীর অলকচূর্ণ কে চুম্বন করে,
কাকে যেন বার্তা পাঠায় কখন,
ওর কোমল ত্বকে দিঘীর শ্যাওলার পেলবতা,
বুকে আদিম ঘ্রাণ,
দীঘল চোখে জলের শান্ত ছায়া,
চিবুকে বিন্দু বিন্দু জমা ঘাম,
কাঁপা গলায় যুবক শুধায়
"বলো না, এ দিঘী তবে কার?"
দু বাহু প্রসারিত করে
মেয়েটি বলে,"আমার
আমার!"
উত্তাল ঢেউকে আটকে নিজেরবুকে
ছেলেটি বলে,"একবার
বলো,
কি ভাবে পাবো তাকে?"
মোহিনী হাসিতে, গালে টোল ফেলে,
দিঘীর অতলে তর্জনী তুলে,
"ঐখানে
যাও,শঙ্খ বুকে
আমার প্রাণ ভোমরা থাকে।"
উদভ্রান্তের মতো যুবক তাকায়,
তখনি সে ঝাঁপ দেবে জলে,
হাঁস গুলো যেন অলৌকিক মায়া,
ওকে ইশারা করে গ্রীবা তুলে,
দেয়াসিনী মেয়ে তির্যক হেসে,
চোখে প্রশ্ন তোলে,
ভোমরার মাঝেই আমার প্রাণ,
ডুব সাঁতার জানো তো ছেলে ?
কবি পরিচিতি –
জন্ম এবং বেড়ে ওঠা কোলকাতায়, বিগত কয়েক বছর ধরে দিল্লীর বাসিন্দা । গান শেখা দক্ষিণী-তে। ভালো লাগার জায়গা কবিতা লেখা,অনুষ্ঠান সঞ্চালনা। বিভিন্ন পত্রিকায় কবিতা প্রকাশিত হয়েছে,২০২৩ সালে কলকাতার রামমোহন লাইব্রেরির পক্ষ থেকে " শ্রেষ্ঠ কবিতা "-র সম্মানে সম্মানিতা।