ওরা তিন ভাই। অনিল সুনীল এবং শংকর। তিন জনেই অত্যন্ত মেধাবী। হলে কি হবে, ছোট ছেলে শংকরের পড়ালেখায় এতটুকু মন নেই। শুধু আড্ডা আর আড্ডা।
বড় দাদা অনিল নামি কলেজের অধ্যাপক, মেজ ইনকাম ট্যাক্স অফিসার আর ছোটটা কোনওরকমে
কলেজের গন্ডি পেরিয়ে সারাদিন চায়ের দোকানে গুলতানি করা কাজ। ওকে নিয়েই বাবা-মায়ের
যত দুশ্চিন্তা। বাবা ডিস্ট্রিক্ট জাজ। সেই পরিবারের ছেলে এমন বাউন্ডেলে হয় কি করে?
এর মধ্যেই শংকর বাড়ির অমতে হঠাৎ রাজনীতিতে নাম লেখাল। স্মার্ট, বলিয়ে কইয়ে আছে এবং
পরিবারের ঐতিহ্যের ফলে প্রথম চান্সেই একেবারে
এম.এল.এ-র টিকিট । বিপুল ভোটে জয়ীও হল। বাবা, বড়দা, মেজদা পছন্দ
না করলে কি হবে দশ বছরের মধ্যে রাজ্যের জনপ্রিয় নেতা হয়ে উঠল শংকর। এক বাক্যে রাজ্যের সকলে তাকে চেনে, ভালোবাসে।
সে যদি কলেজের লেকচারার হত কজন ওর নাম জানতো। ইতিমধ্যে আলাদা ওয়েল ফার্নিসড দোতলা
বাড়ি করেছে। পুরীতে বিশাল এক বিল্ডিং বানিয়ে হোটেল রেস্টুরেন্টের ব্যবসা শুরু
করেছে। একাধিক দামি গাড়ি যে থাকবে তা বলাই বাহুল্য।
কথা প্রসঙ্গে বড়দা একদিন বললেন, তুই তো দেখছি
চাকরি-বাকরি না করেও আমাদের থেকে অনেক বেশি
ভালো আছিস।
শংকর বলল, সবই বড়দা জনগনের ভালোবাসা। আশীর্বাদ করো বড়দা
আমি যেন এইভাবেই সারা জীবন মানুষের সেবা করে যেতে পারি। কখনোই যেন লোভের মোহে
লক্ষ্যচুত না হই।
বড়দা হাঁ করে তাকিয়ে রইলেন ! মুখে কোনও কথা নেই।
লেখকের অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন ।
লেখক পরিচিতি:
জন্ম পৈত্রিক বাড়ি বর্ধমান জেলার কাটোয়া-র পানুহাট-এ। পড়াশুনা কাটোয়া কলেজ। বর্তমান নিবাস হুগলী জেলার চুঁচুড়ায়। পেশায় কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী ছিলেন।
তাঁর প্রথম গল্প---চেতনা। প্রকাশিত হয় ছোটদের পত্রিকা "শুকতারা"য়, ১৯৯৬ এপ্রিল সংখ্যায়। তারপর বড়দের পত্রিকা--দেশ, কালি ও কলম, শিলাদিত্য, শুভমসাময়িকী, তথ্যকেন্দ্র, উৎসব, কথাসাহিত্য, কলেজ স্ট্রিট, দৈনিক স্টেটসম্যান, যুগশঙ্খ, একদিন,সুখবর, সংবাদ নজর, খবর ৩৬৫ দিন এবং লিটল ম্যাগাজিন-এ নিয়মিত লেখেন।
তিনটি গল্প সংকলন ও একটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। " শতানীক" (ষাণ্মাসিক) সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক পত্রিকাটি সম্পাদনা করেন।
Tatkhanik digital bengali online e magazine