Advt

Advt

santan-sukh-story-by-nityaranjan-debnath-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-সন্তান-সুখ-নিত্যরঞ্জন-দেবনাথ

 

santan-sukh-story-by-nityaranjan-debnath-tatkhanik-digital-bengali-web-bangla-online-e-magazine-সন্তান-সুখ-নিত্যরঞ্জন-দেবনাথ

নিখিলের বিয়ের দিন স্থির হয়ে গেল। বড়লোকের বিদুষী কন্যা। আর মাত্র দশটা দিন হাতে । ভাগ্যিস বিয়ে বাড়িটা এক বন্ধুর দৌলতে পেয়ে গেল। নিখিল কেন্দ্রীয় সরকারের বড় চাকুরে। ফুলশয্যার অনুষ্ঠানটি জাঁকজমক না করলে কি মান থাকে? ক্যাটারিং থেকে শুরু করে জরুরি ব্যাপারগুলো দুদিনের মধ্যে বায়নানামা করে ফেলল। কনের বেনারসি ছাড়াও পাঞ্জাবি,জামা কাপড় যা যা দরকার এক বন্ধুকে নিয়ে মোটামুটি তাও সেরে ফেলেছে। নিজের বাড়ির জন্যেও কিনেছে। বাড়িতে বাবা, মা, ও একজন রান্নার মাসি থাকেন। রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও নিখিলকে কোলেপিঠে করে মানুষ করেছেন ওই মাসি। শুনেছে বিয়ের এক বছরের মধ্যে স্বামী অন্য একটা মেয়েকে বিয়ে করে মাসিকে তাড়িয়ে দেয়। সেই থেকে তাদের বাড়িতেই থাকে।এত কিছু কেনাকাটার পরেও  মা কেন খুশি নয় নিখিল ভেবে পায় না। মায়ের জন্য বারো হাজার টাকা দিয়ে এক জম্পেশ জামদানি শাড়ি কিনেছে। বাবার জন্য কোট প্যান্ট টাই। মাসির জন্য হাজার টাকা দিয়ে ধনেখালি তাঁত। ঠিকে ঝি সবিতার জন্য সাতশো টাকার ছাপা মিনু শাড়ি।

মা একান্তে ছেলেকে ডেকে বললেন,"  মাসি তোকে ছেলের মত কোলেপিঠে করে মানুষ করেছে। বলতে গেলে তোর মায়ের মত। ওঁর জন্য একটি অর্ডিনারী শাড়ি নিয়ে এলি? আরেকটা ভালো দেখে শাড়ি এনে দিস।"

নিখিল বলল," মায়ের মত হলেও তিনি কিন্তু কাজের মহিলা। যা প্রাপ্য তার থেকে বেশি দামের শাড়িই এনেছি। তুমি আর অধিকার বাড়াতে যেও না মা"।

মায়ের বুকটা কেঁপে ওঠে। মাসিই যে খোকার আসল গর্ভধারিনী কোনোদিন মুখে উচ্চারণ করতেও পারবে না। অনেক ডাক্তার-বদ্যি দেখানোর পরেও যখন জানতে পারে তাদের সন্তান হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই তখনই গর্ভবতী অবস্থায় মেয়েটি কাজের সন্ধানে আসে। সেই থেকে শর্তসাপেক্ষে রয়ে গেল। সন্তান জন্মের পর ওরা দিল্লি থেকে বদলি হয়ে কলকাতায় এল। ফলে বাইরের কারো জানার ভয় রইল না। দুঃখ হয় মেয়েটির জন্য। সন্তান থেকেও সন্তান-সুখ থেকে বঞ্চিত। ওর কষ্ট খোকাকে কি করে বোঝাবে?


লেখকের অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন ।

লেখক পরিচিতি: 

জন্ম পৈত্রিক বাড়ি বর্ধমান জেলার কাটোয়া-র পানুহাট-এ। পড়াশুনা কাটোয়া কলেজ। বর্তমান নিবাস হুগলী জেলার চুঁচুড়ায়। পেশায় কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী ছিলেন।

তাঁর প্রথম গল্প---চেতনা। প্রকাশিত হয় ছোটদের পত্রিকা "শুকতারা"য়, ১৯৯৬ এপ্রিল সংখ্যায়। তারপর বড়দের পত্রিকা--দেশ, কালি ও কলম, শিলাদিত্য, শুভমসাময়িকী, তথ্যকেন্দ্র, উৎসব, কথাসাহিত্য, কলেজ স্ট্রিট,  দৈনিক স্টেটসম্যান, যুগশঙ্খ, একদিন,সুখবর, সংবাদ নজর, খবর  ৩৬৫ দিন এবং লিটল ম্যাগাজিন-এ নিয়মিত লেখেন।

তিনটি গল্প সংকলন ও একটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। " শতানীক" (ষাণ্মাসিক) সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক পত্রিকাটি সম্পাদনা করেন। 

Tatkhanik digital bengali online e magazine