প্রণাম জানাই
মনীষা কর বাগচী
কমলা ভট্টাচার্য ভাষার জন্য প্রথম মহিলা শহিদ
ফুলের মতো একটি মেয়ে
বাংলার আকাশে তেজদীপ্ত নক্ষত্র
বিশ্ব দেখছে চেয়ে।
সুনীল, কানাইলাল,
সুকোমল, হে মৃত্যুহীন প্রাণ
১৯ শে মে দিনটি বিশ্বের ইতিহাসে রইবে
তোমাদের স্মৃতিও থাকবে অম্লান।
শচীন্দ্র, বীরেন্দ্র,
সত্যেন্দ্র, তরণী দেবনাথ
তোমাদের রক্ত বলেছিল কথা
মানুষ দিয়েছিল সত্যের সাথ।
চন্ডীচরণ, কুমুদ রঞ্জন,
হীতেশ বিশ্বাস
তোমাদের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়েছে
বাঁচাতে মায়ের শ্বাস।
তরতাজা জ্বলজ্যান্ত সদ্য প্রস্ফুটিত
গোলাপ
দিকে দিকে ছড়িয়েছ সুগন্ধ
প্রতিটি প্রাণে কাঁদে ব্যথার সংলাপ।
তোমাদের রক্ত এখনও মানুষের হৃদয়ে বিদ্যমান
হে বীর যোদ্ধা অসীম বলবান
গ্রহণ কর কোটি কোটি বাঙালির শ্রদ্ধা সুমন।
অনন্ত সত্য
মনীষা কর বাগচী
মা মাটি মাতৃভাষা
জীবনের চরমতম উপলদ্ধি প্রেম
অনন্ত সত্য...
যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে হয়
তাঁর সম্মান!
কী দুধ খেয়েছিলে?
কী প্রেম ধরেছিলে বুকে ?
কতটা সাহস পুষেছিলে প্রাণে?
মাতৃভাষার অপমান
তুলেছিল তুফান
স্বার্থলোভীদের স্বার্থে
বাংলা ভেঙ্গে খানখান
থেকে থেকে বাংলা ভাষার
কেন এতো অপমান?
বুঝিয়ে দিয়েছ
বেঁচে আছে বাংলা বেঁচে আছে মায়ের সন্তান
আসাম সরকারকে জানিয়ে দিয়েছ
বাঙালি হার মানেনা
মায়ের পদতলে
উৎসর্গিত তাদের প্রাণ।
হে মৃত্যুহীন প্রাণ
শতশত প্রণাম
বিফল হয়নি বলিদান...
বিফল হয়নি তোমাদের বলিদান।।
ঝড় উঠেছে
মনীষা কর বাগচী
ঝড় উঠেছে
আগুন জ্বলেছে
দেশভক্তদের বুকে উঠেছে তুফান...
চেয়ারলোভী দেশদ্রোহীদের চক্ষু চড়কগাছ।
বুঝিয়ে দিয়েছ বাঙালির রক্তে মিশে দেশপ্রেম
বাঙালির শরীরে ভাসে বাংলার ঘ্রাণ
দেশ ভাষা পূজ্য মায়ের সমান।
তাদের সঙ্গীতে ঝরে সুখ
নৃত্যে হাটে দুখ
তাদের ভাষা ফুল ফোটায়
এমন জাতির ভাষা কেড়ে নেওয়া যায়?
১৯ মে
রক্তে ভেসে গেছে রেল স্টেশন
রাজপথ
মানুষের মন
বুঝিয়ে দিয়েছে কমলারা
বাঙালিদের ছোট ভেবনা
হাসতে হাসতে তাঁরা দিতে জানে প্রাণ।
তাঁদের অবজ্ঞা করার করোনা দুঃসাহস
ঝাঁকে ঝাঁকে
প্রাণ লাফিয়ে পড়ে
ভয়হীন, শঙ্কাহীন
পতঙ্গ যেমন...!
কবির পরিচিতি -
কৈশোর কেটেছে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার একটি গ্রামে। বৈবাহিক সূত্রে দিল্লিতে আসা । ছোটবেলা থেকেই লেখালিখি শুরু। স্কুলের ম্যাগাজিনে লেখা প্রকাশিত হত।
এ পর্যন্ত ছয়টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। দিল্লি, কলকাতা এবং ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লেখা প্রকাশিত হয় । প্রতিদিনই কিছু না কিছু লেখেন। লেখার মধ্যেই আনন্দ খুঁজে পান ।