লেখিকার গঙ্গোত্রী ভ্রমণ নিয়ে লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
লেখিকার অন্যান্য লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন ।
ছবি - যূথিকা চক্রবর্তী (লেখিকা)
গঙ্গোত্রী ভ্রমণের পরের দিন
সকালে আমরা যাত্রা করেছিলাম যমুনোত্রীর
পথে । উত্তরকাশী হয়ে বারকোট । ছোট পাহাড়ী শহর বারকোট – ব্যবসাই
এখানে প্রধান । এখান থেকেই বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্যসম্ভার পাহাড়ের দিকে দিকে জনপদ
গুলিতে সরবরাহ হয়ে থাকে । সন্ধ্যে ৭ টা নাগাদ আমরা বারকোটের একটা হোটেলে এসে
পৌঁছলাম ।
ঘরে মালপত্র রেখে
লাউঞ্জে বসে আড্ডা চলছে । এ কথা সেকথার পর আবার সেই রান্নার সমালোচনা । অথচ
ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ওরা নানান পদ করে খাওয়াচ্ছে। রান্না অতিশয় সুস্বাদু । আমার খুব ভালো লাগছে । নোয়াখালীর বাঙ্গাল
আমার শ্বশুরবাড়ী । তেল ঝাল নারকেল সরষে পোস্ত আমাদের নিত্যসঙ্গী । তাই এদের
সমালোচনায় আমি , অংশ নিই না –
চুপ করেই থাকি। বললাম , সবাই চল একটু
হেঁটে আসি শহরটায় রান্না না হওয়া পর্যন্ত । সবাই গেলনা । আমি , বিশ্বনাথ , মিনতি , দেবাশিষ,মেঘলা কজনে একটু আশপাশ বেড়িয়ে ঘন্টাখানেকের মধ্যেই ফিরে এলাম । সবাই
খুব ক্লান্ত । বললাম তোমাদের আবার ক্লান্তি কিসের গোমুখ গেলে না – পর পর রাত জাগলে না । অবশ্য বেড়াতে এসেছ বিশ্রাম এবং আনন্দ পাবার জন্য
।
কেউ যেন বলল –
' মাসীমারই যত দুর্ভাগ্য , সঙ্গী জুটেছে
ভাল ।
বললাম –
'তোমাদের ভুল ধারণা – আমি ভাগ্যবতী বলেই
ঐ দুর্গমস্থান ঘুরে এসেছি এবং পথের অঘটনে ভেঙে না পড়ে বুদ্ধি করে লোক জোগাড় করে
সব সামলাতে পেরেছি সেটা ঈশ্বরেরই কৃপা ।
- আড্ডার মধ্যেই বুঝালাম
অনেকেই যমুনোত্রী যাবে না । সে নাকি ভয়ঙ্কর চড়াই । মিনতি যাবে ডান্ডিতে,স্বয়ং বিশ্বনাথ যাবে পাশে পাশে প্রহরায় ঘোড়ায় চড়ে । আমি চুপচাপ
আছি দেখে বললো - 'মাসীমা তো
যাবেনই । '
আমি বললাম '
অবশ্যই '।
পরদিন সকালে যমুনোত্রীর
গাড়ী । জীপে করে আমরা ম্যানেজার সহ হনুমানচটীতে পৌছলাম । মিনতি বলল ,
মাসীমা ডাঙিতে উঠুন । ' আমি বললাম '
একবারই উঠব , তবে এখন নয় । এবার ঘোড়া
। ম্যানেজার বললেন , 'মাসীমা বিশ্বনাথদাদের সঙ্গে থাকবেন
ভয়ঙ্কর চড়াই পথ উৎরাইয়ে বিপদ খুব – একটু সাবধানে
থাকবেন । আমি যাচ্ছিনা । ফিরে এখানেই গাড়ী পাবেন আমি নিতে আসব । 'ওকে আস্বস্ত করে ঘোড়ার পিঠে চড়ে বসলাম । সবাই যমুনা মায়ের জয়ধ্বনি
দিয়ে যাত্রা শুরু করল । প্রথমেই ঘোড়া পাকদণ্ডীর পথ দিয়ে বেশ খানিকটা উপরে উঠে
গেল । চটীর সামনে দিয়ে বাঁধান পথ টিনের ছাউনি দেওয়া । ভাবলাম এত ভালই পথ তবে
সবাই এত ভয়ের কথা বলে কেন ?
স্বর্গের নদী
গঙ্গা মর্তে নামছেন । গতি তার বিপুলা । আশঙ্কা – তোড়ে
ধ্বংস পাবে পৃথিবী । শিব এলেন জটাজালে গতিরোধ করতে । গঙ্গা তাই ১২ ধারায় বিভক্ত
হলেন যার মধ্যে প্রধান ৪ ধারা – অলকানন্দা , মন্দাকিনী , ভাগীরথী ও যমুনা । অলকানন্দার তীরে
বদরিবিশাল আর মন্দাকিনীর তীরে শিবঠাকুরের বাস । গঙ্গা যেখানে মর্তে নামেন সেখানে
দেবী গঙ্গার মন্দির । আর যমুনার উৎসমুখে সূর্যতনয়া তথা যমরাজের বোন যমুনার বাস ।
স্মরণতীত কাল থেকে হিন্দু পুরাণের এই চার পুণ্যধাম চারধাম নামে খ্যাত ।
মসৃন পথ দিয়ে
কিছুটা আসার পরই স্বপ্নভঙ্গ হল । শুরু হল চড়াই । কোথাও কোথাও পথের ধারে রেলিং আছে
। পথের সৌন্দর্য দেখব কি ডানদিকে তাকালেই হিম হয়ে যাচ্ছে শরীর,তাকিয়ে দেখছে অতল খাদ । পথের দূরত্ব ১৩ কিলোমিটার । গোমুখের উচ্চতা ৪২৫৫ মি .
গঙ্গোত্রী থেকে দূরত্ব ১৯ কিমি । যমুনোত্রীর উচ্চতা ৬৩৫১ মি . হনুমানচটী থেকে
দূরত্ব ১৩ কিমি . তাহলে পথের অবস্থা মইয়ে চড়ার মত । চড়াই উৎরাই দুই - ই আছে পথে
তবে চড়াইয়েরই আধিক্য । অধিকাংশ জায়গাতেই পথের পাশে রেলিং নেই । পাশে সুগভীর খাদ
। গড়ানে রাস্তা , তাতে হুড়মুড়িয়ে উপর থেকে নেমে আসছে
ঘোড়া , খচ্চর , ডাঙি , কাঙি , ডুলি এবং লাঠি হাতে পায়ে হাঁটা পথচারী ।
সবাইকে রাস্তা ছেড়ে দিতে হবে । নিচ থেকে উঠছেও এই একইভাবে সব । কে কাকে রাস্তা ছাড়বে । কোনশৃঙ্খলা নেই । যে যেভাবে পাড়ছে ঘাড়ের উপরে
এসে পড়ছে । কেদারের পথে এবং মন্দিরেও কত সুন্দর শৃঙ্খলা , আর
এখানে ? উপর থেকে নেমে আসা এক ঘোড়ার সাথে আমার ঘোড়া এতটাই
গা ঘসটে নামল যে আমার বাঁ হাটুর পাশে ভয়ঙ্কর রকম ছড়ে গেল – একবারে মাংস বেরিয়ে রক্ত গড়াতে লাগল । তাড়াতাড়ি বোরোলীন লাগালাম তখনই
কোনরকম দেরী না করে ।
এই রকম চূড়ান্ত
অসহযোগিতা এবং বিশৃঙ্খলার কথা এই ভয়ঙ্কর চড়াইপথে কেন যে কারো
মনে হচ্ছে না ভেবে অবাক হলাম । কোন কোন জায়গায় একসময় সিঁড়ি ছিল । এখন তার
চিহ্নও নেই। হেঁটে পার হতে হবে জায়গাটা । যেখানেই লাটি
ঠুকছি,সেখান থেকে ঝুরঝুর করে ঝরে পড়ছে শুড়কি । কী কষ্টে যে
পার হয়েছি বলার নয় । তবে যাই হোকনা কেন,বাঁ দিকের পাথরের
দেওয়াল ছাড়ছিনা । খাদে পড়ার চেয়ে এখানে পড়া অনেক নিরাপদ । যাত্রীও কম নয় ।
এই ভয়ঙ্কর পথে এত যাত্রীর ভীড় আর গোমুখের অত সুন্দরপথ জনহীন , পথের যেন শেষ নেই । আতঙ্কে নিশ্বাস বন্ধ হবার উপক্রম । এ কি পথ রে বাবা ।
কতখানি উপরে উঠে একটা চটীতে নামলাম । জল খেলাম -চা খেলাম । শুনলাম পাশে দু-পা নিচের দিকে গেলে মানে যে পথে এলাম সেদিকে সরকারী
টয়লেট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন । শুনে চটী থেকে বেরিয়ে দু’পা
হাঁটতে গেছি একেবারে হুমড়ি খেয়ে রাস্তায় পরে গেলাম । হাত কনুই কপাল ছড়ে গেল ।
কেন পড়লাম ? মুহূর্তের ভুলে ? ভুলটা
কি ? না আমি সমতলে হাটছি মনে করে পদক্ষেপ করেছি তাই । যদি
নীচের দিকে নামছি খেয়াল রেখে একটু ঝুঁকে হাটতাম বা লাঠিটা হাতে নিতাম তাহলে হয়ত পরতাম না । ঝেড়ে ঝুড়ে উঠে টয়লেট সেরে
এসে বোৱলীন ব্যান্ডেড লাগালাম – ওষুধ ও
খেলাম । ব্যান্ডেজ ছিল সংগে বা হাটুটা ভাল করে বাঁধলাম তারপর আর একটু বিশ্রাম
নিয়ে ঘোড়ায় উঠলাম । মনে মনে যমুনাজীকে স্মরণ করলাম ।
শেষ চড়াই
অকল্পনীয় । ভয়ে আতঙ্কে ঘোড়ার পিঠে সিঁটিয়ে ছিলাম কখন যে পথ শেষ হয়েছে জানিনা
হুস ফিরল সহিসের ডাকে উৎরাইয়ে ,পহুছ গয়া ।
নামলাম । পায়ে
পায়ে অন্যযাত্রীদের অনুসরণ করে চলতে লাগলাম ।প্রথমেই
চোখে পড়ল কত উঁচু থেকে যমুনা ঝাঁপিয়ে পরে জলপ্রপাতের সৃষ্টি করেছে । তারপর গেলাম
মন্দির প্রাঙ্গনে । ছোট্ট মন্দির । পাশাপাশি গরমজলের তিনটি
কুন্ড । অল্পগরম জলের কুন্ডের পাশে বসে অল্প কিছুক্ষণ
বসেই উঠে পড়লাম একেবারে যমুনার পাড়ে কিনারায় । হাত দিয়ে ছুঁলাম
জল । হিমশীতল। কাঁচের মত স্বচ্ছ - মনে হল হাত ডুবালেই বুঝি তলার পাথরগুলি ছুঁতে
পারব । আসলে কিন্তু তা নয় । অনেকটাই গভীর অসম্ভব স্বচ্ছতার জন্যই এরকম মনে হচ্ছে
। অনেক উপর থেকে খাড়াই এবং তীব্রগতিতে জল নেমে আসছে মন্দিরের সামনে দিয়ে ।
প্রচন্ড খাড়াই যমুনার উৎস আরও ১১ কিমি . উঁচুতে । সেখানে সাধারণের অগম্য ।
অতঠান্ডা সত্বেও যমুনার জল হাত দিয়ে তুলে থাবড়ে থাবড়ে মাথা ভিজালাম ।
কার্ডিগানের ভিতর দিয়ে শরীরে জল দিয়ে দিয়ে ভিজালাম । আর মনে মনে প্রার্থনা করতে
লাগলাম – হে মা যমুনা , আমার সব শক্তি
এখন উধাও – এবার তুমি কৃপা করে অক্ষত নামিয়ে না দিলে আমার পক্ষে নীচে নামা সম্ভব নয়
। এইভাবে স্নান ( এ ছাড়া উপায় ও কিছু ছিল না ) ও প্রার্থনা
সেরে দিব্যশিলায় পুজা দিয়ে মন্দিরে ঢুকলাম । তখন বিশ্বনাথ,
মিনতির সঙ্গে দেখা । আলোর অভাব মন্দিরে । পূজা দিলাম যমুনা মায়ের কালো পাথরের
কল্পিত মূর্তিতে । মন্দিরটি নাকি বহুবার ধ্বংস হয়েছে আবার তৈরীও হয়েছে নবরূপে ।
মন্দিরের বাইরে যে কুন্ডের জল টগবগ করে ফুটছে সেখানে প্রসাদী চাল পুটলী করে বেঁধে ডোবানো হল । তারপর সেই প্রসাদী সিদ্ধচাল সকলে পাথরের
উপর শুকিয়ে নিয়ে যাবে ঘরে । আমারটা আমি ভক্তিভরে ওখানেই খেয়ে নিলাম । বাঁচি না
মরি , না হাত পা ভেঙ্গে অতলখাদে তলিয়ে যাই তার ঠিক নাই ।
খুব সুন্দর এবং
ভয়ঙ্কর জায়গা । বিশেষ করে অনেক উঁচু থেকে তীব্র গতিতে যমুনার নেমে আসাটা দেখবার
মত । আমার তো চিরদিনের মত মনে গাঁথা হয়ে গেল
বুঝি এই ভয়ঙ্কর সুন্দরের মর্তে আগমন দৃশ্য ।
ঘণ্টাখানেক পর
ঘোড়ায় উঠলাম ইষ্টদেবীকে স্মরণ করে । সারাটা পথ ঠাকুরের নাম জপতে জপতে এসেছি । আকাশের দিকে মুখ করে । যেখানে অসম্ভব গড়ানে পথ মাটিও
ঝুরঝুরে সেখানে হেঁটে নামতে হবে । লাঠি ঠুকে ঠুকে অতি সাবধানে নামতে গিয়েও
গড়িয়ে পড়ে ঠেকলাম গিয়ে ডানদিকে পাথরের দেওয়ালে । বাঁ দিকে গড়ালে ? আসলে পড়াটা আমার ভবিতব্য ছিল । হয়ত সেই কারণেই মন আমার এমন ব্যাকুল
হয়েছিল যাতে সত্যি সত্যি বিপদে পরে না যাই । কিন্তু কথায় আছে না কর্মের ফল
ভুগতেই হয় , তবে ঈশ্বর কৃপা করলে বেলের কাঁটা কুলের কাঁটা
হয়ে যায় । আমার ক্ষেত্রেও তাই কি ? একজনে হাতধরে টেনে
তুললেন আর হাত ছাড়লেন না । কিছুটা এইভাবে নেমে ঘোড়ায় উঠলাম । আকাশে মুখ করে জপ
করে চলেছি । ক্রমাগত নীচের দিকে নামছে ঘোড়া স্বভাবতঃই শরীরের ভারসাম্য বজায়
রাখতে একহাতে সামনের আংটা আরেক হাতে পেছনের আংটা ধরতে হচ্ছে ফলে চিৎ হতেই হচ্ছে ।
এক সময়ে পথ শেষ হল । ঘোড়া থেকে নেমে পথের উপর ঢিপ করে একটা প্রনাম করে জয় যমুনা
মায়ের জয় বলে অন্যদের দিকে তাকাবার অবকাশ পেলাম । ততক্ষণে বিশ্বনাথ,মিনতিরাও নেমে এল । হনুমান চটী থেকে বারকোটের হোটেলে ফিরে এলাম । তখনও
আমার মনে স্বাভাবিকতা ফিরে আসেনি । চুপচাপ লাউঞ্জে বসেছিলাম । চা খেলাম । তারপর
ঘরে গিয়ে পোষাক চেঞ্জকরে শুয়ে পড়লাম । পরদিন সকালে সবারই
মন হরিস বিষাদে ভরা । এই ক'দিনের সঙ্গীদের সাথে কত অন্তরঙ্গ মুহূর্তে কেটেছে একসঙ্গে । তবু ওরা কোলকাতা পর্যন্ত যাবে
আড্ডা দিতে দিতে । আমি তো হরিদ্বারে পৌঁছে পরদিন দিল্লীর
গাড়ী ধরব । সবারই সবার Contact No. দিতে
ও নিতে ব্যস্ত । সবার মুখেই এককথা আমরা মাসীমার থেকে ছোট হয়েও পিছিয়ে থাকলাম ।
ধন্য মাসীমা । '
আমি হেসে বললাম ‘ দুঃখ
করার কিছু নেই তোমরা যে আমার থেকে কত পিছিয়ে জন্মেছ ! হরিদ্বারে পৌঁছলাম সন্ধের পর । যে যার ঘরে চলে গেলাম ।
পরের দিন সকালে
দেবশিস,মেঘলা, ওদের মেয়ে , বিশ্বনাথ মিনতি আর আমি অটোরিক্সা করে রামদেবজীর আশ্রম দেখতে যাব । সেইমতো
সকালটা কাটালাম । বিকালে গেলাম গঙ্গা আরতি দেখতে হৃষীকেশে ।
দেবতা হৃষীকেশের
আবির্ভাবে জায়গার নাম । স্বৰ্গলোকের তোরণদ্বার হল
হৃষীকেশ । উচ্চতা ৩৫৬ মি . তিনদিক পাহাড়ে ঘেরা , আজাতি আসম
ও মাধুসন্তদের বাস । শান্ত সুমধুর বাতাস বয় আজও , কেননা
হরিদ্বারের মত লোকারণ্য নয় । মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে স্বচ্ছ
সলিলা গঙ্গা স্বৰ্গছেড়ে নেমে আসছে । ঘুরে চলে এলাম গঙ্গাতীরে আরতি দেখব বলে ।
অল্প অল্প তীর্থযাত্রী কিছু স্থানীয় লোক সারিবেঁধে
দাঁড়িয়ে রয়েছে গঙ্গারতীরে, আমরাও দাঁড়ালাম । বিশাল বিশাল পাঁচটা
প্রদীপ জ্বালিয়ে মন্ত্রোচ্চারণের সাথে সাথে পান্ডারা গঙ্গার
আরতি করলেন । খুব উপভোগ করলাম।মন ভক্তিতে ভরে গেল । আরতির সময়ে উজান বেয়ে একটা হাতি এল আরতি শেষে একবার শুড়
তুলে আবার যে পথে এসেছিল সেপথেই ফিরে গেল । কি ব্যাপার জানিনা ।
হোটেলে ঢোকার আগে গঙ্গার ঘাটের দোকান থেকে দুটো ঝোলা ব্যাগ কিনে মিনতি ও মেঘলাকে দিয়ে বললাম – ‘বৌমাদের মাসীমার শুভেচ্ছা ।‘ ওরা খুশী হয়ে নিল । বিশ্বনাথ
বলে উঠল তোমরাও মাসীমাকে কিছু কিনে দাও। বাধা দিয়ে বললাম – বিশ্বনাথ , তাহলে শোধবোধ হয়ে যাবে । তার চেয়ে স্মৃতিটুকু থাক।
লেখিকার পরিচিতি –
যুথিকা চক্রবর্তীর জন্ম ১৯৪২-এ । মালদায় বেড়ে ওঠেন। সেখানে তার পড়াশোনা শুরু হয়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও বাংলায় স্নাতকোত্তর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে। ১৯৬২-তে মালদহ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পবিত্র কর্মযজ্ঞে প্রবেশ করে পরবর্তীতে ১৯৭১ থেকে ২০০২ পর্যন্ত সেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার গুরুদায়িত্ব পালন করে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছেন। শুধু তাই নয়, লেখালেখিতেও তার সহজাত অধিকার। তিনি সেতার বাদন ও বই পড়তে ভালোবাসেন। বর্তমান ভ্রমণকাহিনীটি তার অন্যান্য পরিচয়কে সমুন্নত করে তুলেছে।
বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত বই একটি।