ছাব্বিশে জানুয়ারি
ড.প্রকাশ অধিকারী
পরাধীন ভারতে পালিত
আমাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা দিবস।
এখন , পনেরোই আগস্ট---
যেদিন কলমের এক খোঁচায়
দেশভাগ হয়েছিল ,
ভিটেছাড়া মানুষ সীমান্তের
এ'পাড়ে ও'পাড়ে আশ্রয় খুঁজেছিল !
এহ বাহ্য !
এখন , ছাব্বিশে জানুয়ারি
আমাদের প্রজাতন্ত্র দিবস---
রাজপথে শৌর্য-বীর্য প্রদর্শনের
বর্ণাঢ্য আয়োজন , সাহস...
বিদেশী আক্রমণ তাই আর
নয় আজ বরদাস্ত---
অসহ্য।
কবি পরিচিতি :
জন্ম দিনাজপুর শহরে (১৩৬০ বঙ্গাব্দে)। অবসরপ্রাপ্ত বাণিজ্য বিষয়ের অধ্যাপক। উত্তরবঙ্গের লেখক। উল্লেখযোগ্য বই : " ছোট প্রাণ, ছোট ব্যথা" ( অণু- কাব্য-গ্রন্থ ) , "গল্পের আঁকিবুকি" ( গল্প- গ্রন্থ), " The Least Developed SAARC Members : Bangadesh, Bhutan, Nepal & Maldives" ( প্রবন্ধ-গ্রন্থ ) ইত্যাদি ।
বঙ্গ ও বর্হিবঙ্গের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখেন ।
*************************
নেতাজি সুভাষ
চির তারুণ্যের প্রতীক
সম্পা পাল
২৩শে জানুয়ারি ছিল আমাদের সবার প্রিয় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন। এক
সামরিক নেতার দরাজ কন্ঠ আজও চারিদিকে ভেসে বেড়ায়। ভারতবর্ষ
যতদিন নিঃশ্বাস নেবে এই আওয়াজও ততদিন থেকে যাবে। ইতিহাসের ছাত্রী হিসেবে চোখের
সামনে দেখতে পাই তার অদম্য তেজ ও যোদ্ধা মনকে। আজকের এই স্বাধীন পতাকার নিচে
দাঁড়ালে প্রত্যেক মুহূর্তে মনে হয় এই বীর সন্তানের আত্মবলীদান। ছোট্ট একটা জীবন ,
বিরাট বড়ো অবদান। যার সামনে দাঁড়ালে মাথা নত হয় এবং নিজেকে ভারতীয়
বলে পরিচয় দিতে গর্ব হয় । আত্মবিসর্জনের এমন নজির সেদিনও সব ভারতবাসী দেখাতে পারেনি। যারা পেরেছিল তারা অমরত্ব
নিয়ে আমাদের হৃদয়ে বসে আছেন। ভারতীয় জাতীয়তাবাদ জানে সে দিনের গুরুত্ব।
প্রভাবতি দেবী
নিজেও জানতেন না কাকে জন্ম দিলেন কিংবা যাকে জন্ম দিলেন সে শুধু তার একার নয় একদিন
দেশের সন্তান হয়ে দাঁড়াবে । নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস ,যার নাম উচ্চারণের মধ্যে আজও এক অদ্ভুত
তারুণ্য খেলে যায়। যুগ ,সময় অনেকতো পার হলো। প্রজন্মও পার
হয়ে গেছে কয়েকটা। পেছনে তাকালে দেখা যাবে কয়েক দশক। যারা সেদিন জন্ম নিয়েছিলেন তাদের অনেকেই আজ আর বেঁচে নেই। অথচ সময়টা কখনো কখনো থেমে যায় সেই ১৯৪৫ এ। তারপর ইতিহাসের এই নায়ককে আর দেখা গেল না। যাকে আজও আমরা নিখোঁজ বলি । অথচ নিখোঁজ মানুষেরও একদিন মৃত্যু হয়। বেঁচে
থাকলে আজ তার বয়স হতো ১২৫ বছর।
সুভাষ জানতেন
ভারতীয় মনস্তত্ত্ব। তারচেয়েও বেশি জানতেন সেদিনের ভারতবাসীর প্রয়োজন। তাই রক্তের
দাবি করে বসেছিলেন,বিনিময়ে
স্বাধীনতা জাতীয়তাবাদের সেই অধ্যায় ভাবতে গেলে সেই বাণী আজও অদ্ভুতভাবে শিরায়
শিরায় আন্দোলন তোলে । ভেতর থেকে অগনিত উচ্চারণ হয়- হ্যাঁ,এ
দাবি সার্থক , আমাদের আরও আরও অনেক রক্ত চাই , দেশের জন্য স্বাধীনতার জন্য । এ বিসর্জন খুব সামান্য। বিনিময়ে আমার পরিবার , আমার সমাজ , আমার দেশ মুক্তি পাবে। এ রকম অগনিত
মানুষের আত্মবলীদানের বিনিময়ে আমাদের এই মাঝরাতের স্বাধীনতা।
শুধু দেশ নয়
একদিন পৃথিবী চিনেছিল সুভাষচন্দ্র বোসকে। বিনা ইন্টারনেটেই পৃথিবীর তাবর তাবর দেশ
তাকে চিনেছিল , স্বীকৃতি
দিয়েছিল আজদ হিন্দ বাহিনীকে। অদম্য চেষ্টায় যাবতীয় সীমানা
পার করে দেশের স্বাধীনতাকে এগিয়ে দিয়েছিলেন কয়েক ধাপ।
অথচ শর্ত কিছুই ছিল না । এই মহামানবেরা
এভাবেই পৃথিবীতে এসেছেন, আবার
চলেও গেছেন, ব্যক্তি জীবনের চাওয়া পাওয়ায় যারা নিজেদের বেধে
রাখতে পারেননি।
এমন একজন
মানুষ এলেন আমাদের মাঝে দেশকে নেতৃত্ব দিলেন। কিন্তু তার কোনো মৃত্যু দিন ইতিহাস
লিখতে পারেনি। বিমান দূর্ঘটনাটা শুধু একটি অনুমান।
যার সত্যতা এখনও প্রমাণিত নয়। তবে
ভারতবাসীর মন ও মননে সুভাষচন্দ্র বোস থেকে যাবেন চির তারুণ্যের প্রতিক হিসেবে ...
লেখক পরিচিতি –
শিলিগুড়িতে জন্ম ও বড়ো হওয়া। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে M.a , B.ed.
তরাই , ডুয়ার্স লেখার অনুপ্রেরণা । লেখালেখির শুরু স্কুল জীবন থেকেই কিন্তু সেদিন এগুলো ডাইরিতেই আবদ্ধ ছিল । পরবর্তীকালে দেশ ও বিদেশ থেকে লেখা প্রকাশিত হতে শুরু করে।
লেখার মধ্যে দিয়ে মানুষের কথা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া এটাই লেখার উদ্দ্যেশ্য।
প্রথম কাব্যগ্ৰন্থ 'বিশ্বায়নে বনলতা'বনলতাকে আজও জীবিত সত্তা বলে মনে হয়। যাকে সামনে রেখে আজও বেঁচে ওঠা যায়।