Advt

Advt

Halloween - Dr. Tushar Ray, Rajar Voot - Rekha Nath, Havelir sei Raat by Krishnamishra Bhattacharya, Griha Sanskar by Prakash Adhikary, Tatkhanik Bangla/ Bengali e magazine Online Reading Free

 আজ লিখেছেন -  ড. তুষার রায়, রেখা নাথ, কৃষ্ণা মিশ্র ভট্টাচার্য এবং প্রকাশ অধিকারী ।

Rajar Voot - Dr. Tushar Ray, Rekha Nath, Havelir sei Raat by Krishnamishra Bhattacharya, Griha Sanskar by Prakash Adhikary, Tatkhanik Bangla/ Bengali e magazine Online Reading Free


জকাল আমাদের দেশেও হ্যালোউইন উৎসব বা রীতি মানাবার প্রথা বেশ চালু হয়ে গেছে দেখা যায়। আসলে এটি একটি খ্রিস্ট-ধর্মের সংগে যুক্ত অনেক পুরানো প্রথা।  মধ্য  ইউরোপের   সেন্টিকঅঞ্চলে (এখনকার আয়ারল্যান্ড অঞ্চল) প্রাচীন কাল থেকেই এই প্রথাটি চালু ছিল।

হ্যালোউইন কথাটা এসেছে হ্যালোবা হোলি পারশন থেকে।এই হোলি পারশন আবার এসেছে অল সেইণ্টস ডেমানে ১লা নভেম্বর এর লোকগাথা থেকে। তাই হ্যালোউইন হচ্ছে অল সেইণ্টস ডের আগের রাত-অর্থাৎ ৩১শে অক্টোবর। এই রাতে নাকি জীবিতদের জগত আর মৃতদের জগতের সীমারেখা অতি ক্ষীণ হয়ে যায়। অর্থাৎ মৃতদের আত্মা জীবিতদের খুব কাছে আসতে পারে। দেখুন সুদূর মধ্য-ইয়োরোপের লোকগাথা আমাদের দেশের ভূত-চতুর্দশীর সঙ্গে কত মিল। ওদের লোকগাথার মতে ওই রাতে মৃতদের আর জীবিতদের জগতের সীমা খুব ক্ষীণ হয়ে যায়। তাই জীবিত মানুষেরা এই রাতে মৃত-আত্মাদের কোনক্রমে দূরে রাখারই প্রচেষ্টা মাত্র। বিজ্ঞানের চোখ দিয়ে দেখলে এটা আসলে সূর্যের দক্ষিণায়নের সঙ্গেও জড়িত-গ্রীষ্মের আলোকিত দিনগুলোর অবসানে শীতের অন্ধকার আর কষ্টকর দিনগুলির আগমনের শঙ্কা আর ভয় জড়িত অভিজ্ঞতারই বাহ্যিক অভিব্যক্তি এই হ্যালোউইন।

Halloween - Dr. Tushar Ray, Rajar Voot -  Rekha Nath, Havelir sei Raat by Krishnamishra Bhattacharya, Griha Sanskar by Prakash Adhikary, Tatkhanik Bangla/ Bengali e magazine Online Reading Free
জানা যায়, মধ্য-ইরোপের আয়ারল্যান্ড,স্কটল্যান্ড ইত্যাদি অঞ্চল থেকে এই প্রথাটি উত্তর আমেরিকাতে (আমেরিকা আর ক্যানাডা) ১৯১১ সাল নাগাদ প্রবাসীদের মারফত চলে আসে। এখন প্রথাটি বেশ জোরদার চালু হয়ে গেছে আমেরিকা আর ক্যনাডা-তে। অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকেই লোকজন বাড়ির সামনে বিশাল বিশাল কুমড়ো কিনে এনে তার ওপরে নানা রকম মূর্তি বা ফাঁপা ভেতরটাতে ফুটো করে ভিতরে বাতি জ্বালিয়ে জ্যাক-ও-ল্যান্টার্নসবানিয়ে বাড়ির সামনে বসিয়ে রাখে। এইসময় দোকানে দোকানে বড় বড় ফাঁপা কুমড়ো বিক্রি শুরু হয়ে যায়। কুমড়ো’-র গায়ে রং করার জন্য আলাদা পেইন্টও ওই সঙ্গে বিক্রি হয়। তৈরি-করা জ্যাক-ও-ল্যান্টার্নও কিনতে পাওয়া যায়। এই রঙ-করা খানিকটা ভীতিপ্রদ কুমড়ো গুলিকে বাড়ির প্রধান দরজায় বসিয়ে রাখা হয়। ফাঁপা কুমড়োগুলির ভেতরে লাইট লাগান হয় এর নাম জ্যাক ও ল্যান্টার্ন্স’(Jack-O-Lanterns)এই রীতিটা পুরোপুরি আয়ারল্যান্ডের লোকগাথার অন্তর্গত। র পিছনে একটি সুন্দর লোক-গল্পও আছে: এক ভীষণ কৃপণ ব্যাক্তি ছিলেন;তাকে সবাই কিপ্টে জ্যাকবলে সম্বোধন করতো। জ্যাককে কয়েকবার দানোতে ধরে আবার ভালো হয়ে যায়। শেষে জ্যাক যখন মারা যায় তখন ও স্বর্গে স্থান পেলনা,কেননা কৃপণতার কারণে ও নীতিহীন বলেও বিবেচিত হয়েছিল। অন্ধকার নরকেভীত জ্যাককে আলো হিসাবে এক দানো জ্বলন্ত এক টুকরো কয়লা দিলজ্যাক সেই জ্বলন্ত অঙ্গার কে একটি বড়ো শালগম এর মধ্যে পুরে নিয়ে ঘুরতো আর এইভাবেই অন্ধকারের অশুভআত্মাদের কাছ থেকে রক্ষা পেতো। কালক্রমে সম্ভবত সেই প্রথা শালগমের বদলে কুমড়ো হয়ে দাঁড়ালো। তাই ফাঁপা কুমড়োর ভিতরে আলো জ্বেলে জ্যাক-ও-লণ্ঠন বানানোর প্রথা।

এবার এই হ্যালোউইন এর আরেক প্রথা সম্বন্ধে একটু বলি।

ওই দিন সন্ধ্যায় বাচ্চারা মুখে রং মেখে নানারকম ভয়াল পোষাকে সেজে বাড়ি বাড়ি যায় আর দরজায় দাঁড়িয়ে বলে, “ট্রিট অর ট্রিক” (Treat or Trick) ‘ট্রিট অর ট্রিক। অর্থাৎ হয় ট্রিটদাও নয়ত আমরা তোমাকে ট্রিককরবো-অর্থাৎ তোমাকে ভয় দেখাবো বা তোমার বাগানে গাছ নষ্ট করবো বা তোমার বাড়ির কোন ক্ষতি করবো। ওদের সবার হাতে থাকে একটি মাঝারি সাইজের কাপড়ের ব্যাগ বা প্লাস্টিকের বালতি। এটি একটি মজার উৎসব। তাই ওই দিন সবাই প্রচুর পরিমাণে চকোলেট আর খুচরো পয়সা নিয়ে তৈরি থাকে। যখনই বাচ্চারা দরজায় এসে চেঁচাবে-ট্রিট অর ট্রিকতখনই বাড়ির মালিক বা আর কেউ বেরিয়ে এসে এক-দুমুঠো চকলেট আর কয়েনভরে দেবে ওদের থলিতে। বাচ্চারা খুশি হয়ে একটা ভূতের নাচ দেখিয়ে হাসতে হাসতে চলে যায়। সাজার জন্যে নানান ধরণের হ্যালোউইন স্যুটও- যেমন ভ্যাম্পায়ার,ভূত,মানুষের কঙ্কাল ইত্যাদি পাওয়া যায় কিনতে। রাতে বাচ্চারা বাড়ি ফিরে গুনতে থাকে কতগুলো ক্যান্ডিবা চকোলেট আর কত টাকার কয়েনপ্রাপ্তি হল। পরের দিন স্কুলে গিয়ে সে নিয়ে আলোচনা হবে আর চকোলেট বিনিময় করে খাওয়া হবে।

Rajar Voot - Dr. Tushar Ray, Rekha Nath, Havelir sei Raat by Krishnamishra Bhattacharya, Griha Sanskar by Prakash Adhikary, Tatkhanik Bangla/ Bengali e magazine Online Reading Free


জানা যায়
, প্রতি বছর সাড়ে সতেরো কোটি আমেরিকান এই হ্যালোউইন অনুষ্ঠানে ভাগ নেয় আর বছরে যত চকোলেট বিক্রি হয় তার এক চতুর্থাংশ কেবল হ্যালোউইন এর সময়ই বিক্রি হয়। চকোলেট কোম্পানি গুলোর হিসাব মতে বছরে কেবল হ্যালোউইনেই ২৭০ কোটি ডলার মূল্যের চকোলেট বা ক্যাণ্ডি বিক্রি হয়।

এই হল আমেরিকানদের বিশেষত্ব-কোন ছোট খাটো ব্যাপার থেকেই সুযোগ বুঝে পয়সা কামানো।

লেখক পরিচিতি – 

ডঃ তুষার রায় স্কুলে থাকতেই শুরু হয়েছিল গল্প আর মহাকাশের উপর প্রবন্ধ। ওই সময়েই শুকতারাতে অসীমের অন্বেষণে” প্রকাশিত হয়েছিল। সীমাহীন বলেই বুঝি মহাকাশের আকর্ষণ ছিল অসীম। জ্যোতিঃশাস্ত্রের ছোটখাটো বই পড়ে কম দামী বাইনোকুলার চোখে লাগিয়ে চলতে লাগল নক্ষত্রদের সংগে নীরব বার্তালাপ। ইচ্ছা ছিল জ্যোতিঃশাস্ত্র নিয়ে পড়াশুনা করা। কিন্তু “Need to have and Nice to have” এর কলহে সেটা হতে পারেনি। কিন্তু নেশা আর পেশায় দ্বন্দ্ব কখনও হয়নি। তাই এখন এই পরিণত বয়সেও মহাকাশের আর বিজ্ঞানের অনন্ত রহস্য নতুন করে জেনে ও জানিয়ে সহজ  সরল ভাষায় পরিবেষণ করে আনন্দ পান। 

*****************

Rajar Voot - Rekha Nath, Havelir sei Raat by Krishnamishra Bhattacharya, Griha Sanskar by Prakash Adhikary, Tatkhanik Bangla/ Bengali e magazine Online Reading Free


রাজার ভূত            

রেখা নাথ

বাড়িটা খুব সুন্দর । দোতলা । সিঁড়ি দিয়ে উঠেই বিশাল এক হল ঘরের মত ড্রইং কাম ডাইনিং রুম। ড্রইং রুমের সঙ্গে লাগোয়া কিচেন । ড্রইং রুমের বাঁ দিকে পর-পর তিনটে বেশ বড়-বড় রুম । রুমের সঙ্গে এ্যাটাচড্ বাথরুম ।  ড্রইং রুমের সামনে টেরাস । পেছনে ব্যালকনিটাও বেশ বড় খুব খোলা-মেলা,প্রচুর আলো বাতাসসাউথ ফেসিং বাড়ি । বাড়িটা আমাদের সকলকারই খুব পছন্দ হয়েছে । শ্বশুরমহাশয় তো টেরাসেই নিজের ডেরা বানিয়ে নিয়েছেন । বললেন এই কার্তিক মাসে সকালের মিঠে রোদে পিঠ পেতে খবরের কাগজ পড়তে খুব ভালো লাগে । আমার দু বছরের মেয়ে, মিঠু এ ঘর ও ঘর ছুটোছুটি করে বেড়াচ্ছে আর তার পিছন-পিছন আমার শাশুড়ি মা

নতুন বাড়িতে এসে খুব ভালো লাগছে । আমার স্বামী অলক এক সপ্তাহ অফিস থেকে ছুটি নিয়েছে । আমরা দুজনে মিলে বাড়ি সাজাতে ব্যস্ত । কোথায় কি রাখলে ভালো লাগবে । এই সব ছোট ছোট ভালো লাগা নিয়ে দিনগুলো তরতর করে কেটে যাচ্ছিল , হঠাৎ একদিন পাশের বাড়ি, প্রতিবেশী মিসেস মিত্র অযাচিত ভাবে এসে আলাপ করলেন এবং কথায় কথায় জানিয়ে গেলেন যে বাড়িটা আমরা খুব কম ভাড়ায় পেয়ে গেছি কারণ মাত্র এক বছর আগে এই বাড়িতে এক নব দম্পতি ভাড়া নেয় । কী ঘটেছিল তাদের মধ্যে কেউ জানে না । বউটি একদিন গলায় দড়ি দিয়ে সুসাইড করেছিল। আমাদের আগে আরো দু তিনজন ভাড়াটে এসেছে কিন্তু বেশীদিন টিকতে পারেনি । টেরাসে নাকি বৌটার আত্মা ঘুরে বেড়ায় !

কত কষ্ট করে একটা মনের মত বাড়ি পাওয়া গেল, দেখছি এটাও ছাড়তে হবে ! কথাটা অলককে বলতেই সে হেসেই উড়িয়ে দিল । বলল - ভূত-টুত ওসব কিছু হয় না । মানুষের অলীক কল্পনা । এক সপ্তাহ না জেনেই তো বাড়িতে ছিলাম, কই কিছু তো হয়নি ।

-- হয়নি কিছু ঠিকই কিন্তু হতেও তো পারে! শোনার পর থেকে টেরাসে একলা যেতে ভয় পাচ্ছি ।  ও  আমার কথায় একটুও গুরুত্ব দিল না ।

বাড়িটা আমার ছোরদা ঠিক করে দিয়েছিল । বাড়িওয়ালার সঙ্গে তার জানাশোনা ছিল । সেই সুবাদেই বাড়িটি পাওয়া । ছোরদাকে বললাম ভুতের কথা ।

ছোরদা হাসতে-হাসতে বলে উঠল - - তুই আবার কবে থেকে ভূতকে ভয় পেতে শুরু করলি ?

-- কী বলছো ছোরদা! ছোটবেলায় বেনারসে যে রাজার বাড়িতে আমরা ভাড়া থাকতাম, সেখানে ভূত ছিল না ? অন্ধকার রাত্রে বাগানে আমগাছে,জামগাছে লাল-নীল আলো জ্বলত । দিদি তো একদিন রাতে ভূত দেখে দাঁতে দাঁত লেগে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল তারপরই আমরা অন্য এক ভাড়া  বাড়িতে চলে গেলাম, তাই না ?

ছোরদা হাসতে-হাসতে বলে উঠলছোটবেলায় তুই যা দস্যি ও ডানপিটে ছিলিস, পেয়ারাগাছ বেয়ে তুই রাজার বাংলো বাড়িতে হরদম চলে যেতিস তোকে ভয় দেখানোর জন্যই ভূতের আবির্ভাব হত

-- মানে? সেই ভূত কি তুমি ছিলে? আমি জিজ্ঞেস করলাম ছোরদা মিটমিট করে হাসতে থাকে

ছোটবেলায় আমরা যখন বেনারসে ছিলাম এক রাজার বাড়িতে ভাড়া থাকতাম উত্তরপ্রদেশের কোনও এক রাজার বাড়ি বিশাল বড় বাংলো বাড়ি বাড়িটা ছিল ঠিক মধ্যিখানে বাঁ দিকে ছিল আউট হাউস রাজার কর্মচারীদের জন্য আবাস  । ডান দিকে ছিল লন, আর লনের পাশেই ছিল খুব সুন্দর একটা ফাউন্টেন । বাংলোর সামনে দুটো পাল্লার বিরাট এক লোহার গেট ছিল । গেট থেকে সোজা মোরাম বিছানো পথটা পোর্টিকো অবধি চলে গেছে । গেটের দু পাশে দুটি সুন্দর কেয়ারি করা, মেহেন্দি গাছের বেড়া দিয়ে ঘেরা বাগান ছিল । বাংলোর পিছনে অনেক খানি জমি ছিল সেখানে আম,জাম,কাঁঠাল,পেয়ারা ইত্যাদির গাছ ছিল । রাজা ও তাঁর রাজত্ব তো কবেই ইতিহাসের পাতায় চলে গেছে । কিন্তু রাজার বাড়ি বংশ পরম্পরায় রাজার উত্তরসূরীর হাতে ছিল  । নৈনিতাল না রানীক্ষেত কোথায় যেন থাকতেন তাঁরা । মাঝে মধ্যে আসতেন । তখন অন্দরমহলে নাচ গানের আসর বসত তখন বাংলোর দিকে যাওয়া আমাদের নিষেধ থাকত । এমনিতে সারা বছর বাংলো বাড়িটা তালা বন্ধ থাকত ।  একজন কেয়ারটেকার ছিল সেই দেখাশোনা করত । আমরা ওই  আউট হাউসে ভাড়া থাকতাম । আরো কয়েক ঘর ওখানে ভাড়া থাকত । ভাই-বোনেদের মধ্যে আমি সবচেয়ে ছোট ছিলাম । তখন আমি ক্লাস টু কিংবা থ্রীতে পড়তাম ।  আমার বারোটায় স্কুল ছুটি হয়ে যেত । দাদারা ও দিদি স্কুল কলেজে পড়ত আর ওরা ফিরত বিকেলে । বাবা মা দুজনেই চাকরী করতেন । অতএব সারা দুপুর আমার একার রাজত্ব, যা খুশী করার । বাংলোর পিছনে আম,জাম,কাঁঠাল,পেয়ারা ইত্যাদির গাছ ছিল ।  পেয়ারা গাছের একটা ডাল বাংলো বাড়ির কার্ণিশে গিয়ে ঠেকত । আমি পেয়ারা গাছের ডাল বেয়ে ছাদে নামতাম তারপর সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে যেতাম । সারা দুপুর ওই নির্জন বাড়ির অন্দরমহল ঘুরে-ঘুরে কাটাতাম । যথারীতি বাবা ও মা ফিরলে ভাড়াটেরা আমার নালিশ করতেন । কারণ দুপুরবেলা আমার দেখাশোনার ভার ভাড়াটেদের দায়িত্বে থাকত । মা বলতেন পেয়ারা গাছের ডাল খুব পলকা হয় কোনও দিন ডাল ভেঙ্গে পড়ে হাত পা ভাঙ্গবি । ছোরদা আমায় সব সময় ভয় দেখাতো । বলত একলা একলা ওই বাংলো বাড়িতে ঢুকিস, দেখিস্ একদিন ঠিক তোকে রাজার ভূত ধরবে । তবু আমি ভয় পেতাম না । প্রতিদিন ( ছুটির দিন ছাড়া ) পেয়ারা গাছের ডাল বেয়ে ওই বাংলো বাড়িতে ঢুকতাম । নিঝুম,নিস্তব্ধ বাড়িতে একাকী ঘুরে বেড়াতাম, রাজার ভূত দেখার আশায় । দিনের বেলায় কোনও দিন রাজার ভূতের সাক্ষাৎ হয়নি । কিন্তু রাত্রে বেলা আম,জাম গাছে লাল,নীল আলো জ্বলত । ছোরদা বলত ভূতের চোখ । ঝড় নেই,বাতাস নেই তবু মাঝে মধ্যে আম গাছের ডাল খুব নড়ত । বাংলোর পেছনে আম,জাম বাগানে সন্ধের সময় আমরা বাচ্চারা কেউ যেতাম না । বাগানে ইলেক্ট্রিক লাইট ছিল না তাই সূর্য ডুবে গেলেই নিঝুম নিস্তব্ধ বাগানে ঘুটঘুটে অন্ধকার নেমে আসত । সেই অন্ধকার বাগানে ঝিঁ ঝিঁ পোকার একটানা তান, নিশাচর পাখীদের চিৎকার, পাখীদের  ডানা ঝাপটানো , মাঝে মধ্যে বেড়ালের ডাক ও কান্না সব মিলে মিশে এক ভয়াবহ পরিবেশ করে তুলত।  তাছাড়া জ্যোৎস্না রাতে গাছেদের ছায়া ও আবছায়ায় মনে হত অশরীরী রাজার ভূত হেঁটে বেড়াচ্ছে বুঝি! আমাদের ঘরের বাগানের দিকে জানলাটা মা সন্ধের সময় বন্ধ করে দিতেন মশা ও পোকামাকড়ের জন্য । সন্ধের সময় একদিন দিদি জানলা বন্ধ করতে গিয়ে, জানলার সামনে রাজার ভূত দেখে দাঁতে দাঁত লেগে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিল । তারপর খুব বেশীদিন আমরা ওই বাড়িতে থাকেনি ।

ছোড়দাকে হাসতে দেখে আমি ধন্ধে পড়ে গেলাম । ছোটবেলার আমার জানা সত্যি ঘটনা তাহলে কি একেবারে মিথ্যের ভিতের ওপর ন্যস্ত ছিল ?

লেখিকার পরিচিতি - যদিও জন্ম পলাশীপাড়ানদীয়া জেলা পশ্চিমবঙ্গকিন্তু তার শৈশব বেড়ে ওঠাশিক্ষা-দীক্ষা সব এলাহাবাদেই। এলাহাবাদ ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থশাস্ত্রে এম.এ.। ১৯৮১ সালে এলাহাবাদ থেকে একটি ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা তৃণীর’ প্রকাশ করতেন।

বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় (দেশে ও বিদেশে) লেখা প্রকাশিত হয়। হিন্দি ও ইংরাজিতেও লেখা প্রকাশিত হয়েছে। পানামার কবি রাখোলিও সিনান-এর দশটি স্প্যানিশ কবিতা বাংলাতে অনুবাদ করেছেন। অনুশীলন পত্রিকাসুইডেন থেকে রাইটার্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৩ সালে প্রাপ্তি। ২০১০ সালে প্রকাশিত হয়েছে ঈশ্বর ও মানুষ’ (অণুগল্প ও ছোট গল্প সংকলন)।


****************************************************

Havelir sei Raat by Krishnamishra Bhattacharya, Griha Sanskar by Prakash Adhikary, Tatkhanik Bangla/ Bengali e magazine Online Reading Free


সোনার আকাশে রুপো চাঁদ যেনো স্বর্গের তোরণ।একটু আগেও উজ্জ্বল সূর্যের আভা লেগেছিল গাছগুলির মাথায়,হীরক মুকুটের মতো।প্রজ্ঞার দক্ষিণে পাখিরা উড়ছে,উত্তরের জানালায় বরফ---নীরব হেসে উঠল নীরবতা ভেঙে,বুলবুলি গান থামিয়ে উড়ে গেলো ।প্রজ্ঞা ঘাড় ঘুরিয়ে পাখির কন্ঠে প্রশ্ন -
--হাসলে যে?
---ম্যাডাম, এই রাজস্থানের হাভেলিতে তুমি বরফ ভাবছো?
---পাখির বাসার মতো চোখ পশ্চিম আকাশের দিকে রেখে প্রজ্ঞা
---ভাবতে হয়---ভাবনাই তো আসল--
---তোমাকে কেমন অন‍্যমনস্ক
  লাগছে প্রজ্ঞা
আচ্ছা ঐ চিতাবাঘ টাকে দেখো---
হোটেলের বারান্দায় বিশাল চিতাবাঘের ছবিটির দিকে আঙ্গুল তুলে দেখায় প্রজ্ঞা।
---ম‍্যাডাম জী এই ছবির চিতাটি রণথম্বরের মহারাজার পালতু চিতা ছিল---এই হাভেলির যিনি মালিক তাকে মহারাজা এই চিতাটি উপহার দিয়েছিলেন--
বলতে বলতে হাভেলি কাম হোটেলের ওয়েটার দুটি চায়ের কাপ,আর বড় একপট চায়ের ট্রে সামনের শ্বেতপাথরের টেবিলে সাজিয়ে রাখলো--সঙ্গে কিছু ভেজিটেবল পকোড়া।
প্রজ্ঞা ওয়েটার এর দিকে একনজর তাকালো--বয়স হয়েছে---মাথায় সুন্দর পাগড়ি-র নিচে গ্রে হেয়ার---গোঁফ এও বরফের ছোঁয়া--চোখের তারায় জীবনযাত্রার হরফনামা।

আপকা নাম ক‍্যায়া হ‍্যাঁয়?
-জী সুন্দর।
বহুত দিনসে কাম কর রহেঁহ‍্যাঁয়??
চোখের মণি ঝলসে উঠেই স্থির
জী মেমসাব।
হু।
সুন্দর চলে যেতে যেতে বলে
--আগর কোঈ জরুরত হো তো বঁতানা--
জরুর।
--সুন্দর বোন চায়নার কাপে চুমুক দিয়ে প্রজ্ঞা
--আচ্ছা নীরব,ঐ সুন্দর লোকটা কে কেমন একটা ঐতিহাসিক ঐতিহাসিক চরিত্র মনে হয়--তাই না?
নীরব ফুলকপির পকোড়া চিবুতে চিবুতে
--তোমার না কল্পনা শক্তি--অসীম।কাল সকালে আমাদের সাফারি আছে---আজ তাড়াতাড়ি খেয়ে শুয়ে পড়বো।
চলো না--এখনতো সবে সন্ধ্যা --এই হাভেলির চারপাশে একটু ঘুরে আসি--খুব সুন্দর--
--হ‍্যাঁ অনেক পুরোনো---সিপাহী বিদ্রোহ এর সময় এই হাভেলির মালিকানা চেন্জ হয়।
প্রজ্ঞা একটু ভেবে বলে---ঠিক তখন অনেক মুসলিম আমীর ওমরাহ বৃটিশ দের ভয়ে জলের দামে হাভেলি হিন্দু বিজনেস ম‍্যানদের কাছে বেচে দিয়ে পালিয়ে যায়--লাহোর--করাচীর দিকে।
নীরব পশ্চিম আকাশে অন্ধকারে র উড়ান দেখতে দেখতে বলে---হু---বৃটিশ রা তখন থেকেই ডিভাইড এন্ড রুল পলিসি এপ্লাই করতে শুরু করে--
হাভেলির চারপাশে অন্ধকারে র মধ্যে হঠাৎই হাভেলির সমস্ত আলো জ্বলে উঠলো---প্রজ্ঞা নীরবের হাত ধরে টানলো
চলো না--হাভেলি টা ভালো করে ঘুরে দেখি--লাল,নীল আলোয় কী দারুণ লাগছে।
দুজনে শ্বেতপাথরের বাঁধানো সিঁড়ি ধরে নীচে --
গ্রাউন্ড ফ্লোরে মহাতপ বাগিচায় তখন রঙিন ফোয়ারার বুদবুদ কাহিনী লিখছে---

রাত যখন গভীর

নীরব উঠে চলে গেছে অনেক ক্ষণ। প্রজ্ঞা র ঘুম আসছে না--প্রজ্ঞা র চোখের সামনে রঙিন ফোয়ারা র ভেতর থেকে উঠে এলো একটি অজন্তা গুহার নর্তকী --পায়ে র ঘুঙুর বেজে উঠলো যেনো কথ্বক এর মুদ্রা--চোখের গভীরে সুর্মার ঘন আলিঙ্গন। প্রজ্ঞা ফোয়ারার পাশে একটি শ্বেতমর্মরের বেদীর উপর বসেছিল--ফোয়ারার রঙিন জল ছিটকে এসে ওর শরীর ভিজিয়ে দিচ্ছিল---প্রজ্ঞা র মুখোমুখি সেই অজন্তা নর্তকী। ফোয়ারার জলে নক্ষত্র মন্ডলীর ছায়া---প্রজ্ঞা জলের প্রতিভাসে নিজের মুখ দেখে--অজন্তা গুহা নর্তকী র মুখের ওড়না সরে গেলে প্রজ্ঞা চমকে ওঠে---নর্তকী খিলখিল করে হেসে ওঠে---প্রজ্ঞা র সমস্ত শরীরে ফোয়ারা র জল নতুন কাহিনী লিখে---নর্তকী  পায়ের ঘুঙুর খুলে নেয়---হাতের ঈশারায় ওকে কাছে ডাকে-----কোথায়?নর্তকী গাঢ় লালঠোঁঠে চাঁপাকলির আঙ্গুল ছুঁই য়ে বলে--চুপ।কথা বলো না---সুন্দর জেগে যাবে-
প্রজ্ঞা আর নর্তকী পায়ে পায়ে হাভেলির পেছনের দরজা খুলে বেরিয়ে আসে--প্রজ্ঞা অবাক হয়ে দেখে পেছনের দরজায় কোনো তালাচাবি নেই---নর্তকীর ঈশারায় প্রজ্ঞা গভীর অরণ্যের দিকে---অন্ধকারে র আড়ালে  চাঁদ---ঝিলের জলে হরিণেরা জলপানরত--নর্তকী র ইঙ্গিতে প্রজ্ঞা ঝিলের পাশে একটি অশ্বথ্ব বটের নীচে বসে পড়ে---হরিণেরা জলছেড়ে নর্তকীর কোলে মুখ রেখে বলে---এতোদিন কোথায় ছিলে?
জলজ শ‍্যাওলা নর্তকীর পায়ে ঘুঙুর হয়ে জিজ্ঞেস করে--এতোদিন কোথায় ছিলে?--প্রজ্ঞার কেমন শীত শীত করে--প্রজ্ঞা বিস্ময়ে গলে যেতে যেতে দেখে প্রজ্ঞার শরীর ক্রমশই বদলে যাচ্ছে--প্রজ্ঞা দেখতে দেখতে একটি নর্তকী হয়ে যায়--আর তখুনি চাঁদ একটি গাছের আড়ালে চলে গেলে গভীর জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসে একটি পুরুষ চিতা---প্রজ্ঞা কিছু বুঝে ওঠার আগেই চিতাটি প্রজ্ঞার ঘাড়ে লাফিয়ে পড়ে---প্রজ্ঞা চীৎকার করার আগেই চিতা ওর গলার নলি ছিঁড়ে ফেলে---

সোনালী সকাল


সুন্দর-এর চোখের দিকে তাকিয়ে শিউরে ওঠে প্রজ্ঞা।ও নীরবে-র হাতে হাত রেখে বলে--তাড়াতাড়ি চলো।
ট‍্যাক্সি হাভেলির জঙ্গল ঘন রাস্তা পেরিয়ে সোয়াই মাধোপুর এর দিকে এগিয়ে যায়।প্রজ্ঞা নীরবে-র দিকে তাকিয়ে বলে ---আমি জানি না আমি কেন ঐ গভীর জঙ্গলে ঢুকে গেলাম-
ভাগ‍্যিস বনকর্মীরা তোমাকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখে ফেলে--খবর দেয়--
প্রজ্ঞা-ই কী তাহলে ওই অজন্তা নর্তকী--নাকি প্রজ্ঞা একটি দুঃস্বপ্ন দেখেছে মাত্র
ট‍্যাক্সি অরণ্য রাস্তা পেরিয়ে সোয়াই মাধোপুর এর বড় রাস্তা ধরে।

নীরব আর প্রজ্ঞা ওদের সাফারি বাতিল করে রণথম্বরের হাভেলি থেকে দিল্লি ফিরে যাচ্ছে---সোয়াই মাধোপুর যাবার ট‍্যাক্সিতে ওদের জিনিস তুলে দিতে দিতে সুন্দর সিং মৃদু গলায় বলে---মেমসাব আপ বাঁচগিয়া---নর্তকী শবনম কে এই হাভেলির মহারাজ পোষা চিতা র খাঁচায় ছেড়ে দিয়েছিল---
নীরব আর প্রজ্ঞা চোখ তুলে বলে---কেন?
শবনম-এর সঙ্গে বৃটিশ এক কর্মচারী-র ঈশক্ হয়ে যায়।চার্লস আর শবনম পালিয়ে যাবার চেষ্টা করলে এই হাভেলি তে চার্লস কে গুলি করে মেরে বডি গুম করে দেওয়া হয় আর শবনম কে চিতা টুকরো টুকরো করে ফেলে----

সুন্দর এর চোখের দিকে তাকিয়ে শিউরে ওঠে প্রজ্ঞা।ও নীরবে র হাতে হাত রেখে বলে--তাড়াতাড়ি চলো।
ট‍্যাক্সি হাভেলির জঙ্গল ঘন রাস্তা পেরিয়ে সোয়াই মাধোপুর এর দিকে এগিয়ে যায়।

লেখক পরিচিতি –

জন্ম-কলকাতা য়আসামের বরাক উপত্যকায় বড় হয়ে ওঠা

প্রকাশিত গ্রন্থ

১--সাপ শিশির খায় (গল্প গ্রন্থ)
২--দেবী দহন--(কবিতা গ্রন্থ)

ভারতবর্ষ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত

প্রকাশিত অডিও ভিডিও সিডি--দিল্লি হাটার্স তিন কবি

******************************

Rajar Voot - Rekha Nath, Havelir sei Raat by Krishnamishra Bhattacharya, Griha Sanskar by Prakash Adhikary, Tatkhanik Bangla/ Bengali e magazine Online Reading Free

গৃহ-সংস্কার

প্রকাশ অধিকারী

স্বাধীনতার অনেক পরে প্রবাস বাবুর জন্ম। স্কুল-জীবন শেষ করেই তিনি ভারতে পালিয়ে আসেন। এখানেই তাঁর কলেজ , বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি জীবন সেরে চাকুরি জীবন। তখনও তিনি ভাড়া বাড়িতেই থাকতেন। ভীষণ বিব্রতকর এবং কষ্টের সেই সব দিন। তেমন দিনেই তাঁর বিয়ে। পরে দুই সন্তান লাভ। স্ত্রীর পীড়া-পীড়িতে ব্যাঙ্ক-ঋণ নিয়ে শহরের প্রত্যন্ত উপকণ্ঠে একটি ছোট্ট বাড়ি বানান। সেখানেই দিন কাটে। আবসরের আগেই ছেলে-মেয়ে দুটিকে পড়াশুনো শিখিয়ে দাঁড় করাতে পেরেছেন। ছেলে চাকুরি সূত্রে এখন বিদেশে। মেয়েও চাকুরি পেয়ে স্বপছন্দে বিয়ে করে পাশের শহরেই সুপ্রতিষ্ঠিতা। দাদা বিদেশ থেকে সব সময় আসতে পারেনা বলে মেয়ে জামাই মাঝে মাঝেই আসে। দেখাশোনা করে। খেয়াল রাখে।

ভীষণ করোনা-কাল প্রায় অতিক্রান্ত হয়ে এসেছে। ভ্যাকসিনের দুটো ডোজ নিয়ে প্রবাস বাবুরা বুড়ো-বুড়িতে বেশ ভালোই আছেন। তবে সম্প্রতি সমস্যা হয়েছে অন্য। বসত বাড়িটি পুরোনো হয়ে জীর্ণ হয়ে পড়ছে। এখানে সেখানে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ছাতের একটা কোণে ভূমিকম্পের ফলে সম্ভবত চিড় ধরে বৃষ্টির জল গড়াচ্ছে, তো অন্য কোণে চাঙর খসে পড়ছে। অনেক দিন রঙ করানোও হয়নি। বাইরের দেয়ালে শ্যাওলাও জমেছে। জল-কলগুলো দিয়ে জল কম পড়ছে ইত্যাদি, ইত্যাদি। এরই মধ্যে এবার পুজোর সময় বাংলাদেশে ভূতের গণ্ডগোল! ভীষণ আকার। বাংলাদেশ ছেড়ে দিদিরা চলে আসতে পারে।

বৃদ্ধ প্রবাস বাবু এখন আর তেমন দৌড়-ঝাঁপ করতে পারেন না। প্রবাসী ছেলেকে ফোনে সব জানান। ছেলে পাড়ার ওর এক কন্ট্রাক্টার বন্ধুকে জানিয়ে ব্যবস্থা করে ফেলে। সময় মতো বাবার অ্যাকাউন্টে প্রয়োজনীয় টাকাও পাঠিয়ে দেয়। ধমাধম কাজ শুরু হয়ে যায়। প্রথম দশ দিন আর্ণড্ লিভ নিয়ে জামাই এসে তদারকি করে যায়। পরে মেয়েও দশ দিনের ছুটি নিয়ে আসে। পরে আরও পাঁচ দিন বাড়িয়ে নেয়।

বাড়ি মেরামতি, সংস্কারের কাজ শেষ হলে সবকিছু গুছিয়ে দিয়ে মেয়ে চলে গেলে পুরো বাড়িটা ফুরফুরে আলো-হাওয়ায় ভরে ওঠে। খাওয়ার টেবিলে বৃদ্ধ প্রবাস বাবু বলেন---  বুঝলে গো বুড়ি , যে বাড়িতে বাস করো , তা প্রয়োজনে সংস্কার করতে হয়। নইলে সাপ-খোপের বাসা , ভূতের বাড়ির দুর্গন্ধ, চোর-ডাকাতের নিত্য হানা , নয় তো ছাত ধসে চাপা পড়ে মরার ভয়। তোমার ঠাকুর ঘরটা দেখো তো , এখন কী সুন্দর হয়েছে! আরও কিছু বলতে, নাকি, হাসতে যাচ্ছিলেন বড় করে মুখ হা করে। ওমনি তাঁর উপরের পাটির বাঁধানো দুটো দাঁত কী করে যেন টপ্ করে খসে পড়ে গেল। তিনি অপ্রস্তুত হলেন।

তোমার বাঁধানো দাঁতেরও সময়ে সংস্কারের প্রয়োজন ছিল। করোনি তো ? খাও , সময়-ভূতের থাপ্পড় খাও !

--শেষ কথাটি বলে বুড়ি সোচ্চারে হেসে উঠলেন।

কবি পরিচিতি : 

জন্ম দিনাজপুর শহরে (১৩৬০ বঙ্গাব্দে)। অবসরপ্রাপ্ত বাণিজ্য বিষয়ের অধ্যাপক। উত্তরবঙ্গের লেখক। উল্লেখযোগ্য বই : " ছোট প্রাণ,  ছোট ব্যথা" ( অণু- কাব্য-গ্রন্থ ) , "গল্পের আঁকিবুকি" ( গল্প- গ্রন্থ )" The Least Developed SAARC Members : Bangadesh, Bhutan, Nepal & Maldives" ( প্রবন্ধ-গ্রন্থ ) ইত্যাদি ।

বঙ্গ ও বর্হিবঙ্গের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখেন ।

Iswar-Aniswar-Niriswar (Probondho/Feature) by Dr. Prakash Adhikari, Tatkhanik Bangla/Bengali e magazine Online Reading Free