কবিতার পাতা
লিখেছেন – আশীষ কুন্ডু, ভীষ্মলোচন শর্মা
ছলনা
আশীষ কুন্ডু
মানুষ
হবার ছল করে
মানবতাই
গেছো ভুলে,
আমির হবার
নেশায় টলে
বিবেকটা
রেখেছো তুলে!
পথের দাবি
যাদের সাথে
হবার ছিলো
এক মিছিলে
করছো
তাদের স্লোগান চুরি
গাছের
তলায় নকল ঝুরি!
অন্ধরাজার
অন্ধকানুন
পান্তা
ফুরোয় আনতে লবণ
বুক
বাজিয়ে তোমরা বলো
গরীবের
বোঝা কাঁধে তোলো!
বুদ্ধি
ভাঙাও বুদ্ধি করে
বোকা
প্রজা ভেবে মরে
সাদাপাতায়
ছবি আঁকি
মনের সাথে
দিয়ে ফাঁকি।
পেশায় স্বনিয়োজিত সংস্থায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। পরিবেশবিদ, আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা Health Climate Initiatives এর সঙ্গে যুক্ত ।
ভীষ্মলোচন শর্মা
সবুজ দেশের রাজা
নতুন কেউ মন্ত্রী হলে
দেখান ভারি মজা।
জোব্বাখানা গায়ে দিয়ে
সিংহাসনে বসে,
আন রে আমার পুজোর থালি
হাঁকটি লাগান কষে।
বাগানের এক উড়ে মালি
দৌড়ে আনে পুজোর থালি।
রঙিন এক সেলোটেপ
পুজোর থালি পর
রাজা বলেন, ওরে মালি
মন্ত্র এবার ধর।
মন্ত্র পড়ে উড়ে মালি
মুখে সেলোটেপ লাগায় খালি
নতুন মন্ত্রী চুপ করে রয়
কথাটি না কয়।
শুধু বলে দেখিস বাপু
গোঁফটা যেন রয়।
কাঁসর ঘন্টা ওই যে বাজে
রাজপুরোহিত ব্যস্ত কাজে,
সেলোটেপের আচ্ছাদনে মন্ত্রীর মুখ
ঢাকা।
বলেন, মুখটি যদি বন্ধ রাখো মন্ত্রীত্ব
পাকা।
শপথ পড়ান রাজপুরোহিত
দেশের যেন কোরো না অহিত,
রাজামশাই যা বলবেন, বলবে সবই ঠিক
টিকটিকিটা বলে ওঠে টিক টিক টিক।
আইন হেথায় বেজায় কড়া
মুখটি খুলে পড়লে ধরা
রাজামশাই নিজের হাতে কান মুলে দেন
কষে,
মন্ত্রীত্ব কেড়ে বলেন, খাওগে এবার চষে।
রাজা হেথায় বাসন মাজেন
বারান্দা দেন ঝাঁট
সুযোগ পেলেই ঝেঁটিয়ে দেন পাড়ার
রাস্তাঘাট।
শিঙা ফোঁকেন, চোঙা ফোঁকেন, চড়ে জুড়িগাড়ি,
পিছনে তবে ভিড় করা চাই
ক্যামেরামানের সারি।
মন্ত্রিরা সব দেখেন শোনেন, দেখাতে গেলেই মুখ,
খেঁকিয়ে ওঠেন রাজামশাই, যত সব উজবুক।
আমার কথাই শেষ কথা, আমিই দেশের আইন,
অন্যথা হয় যদি এর করবো সবার ফাইন।
সবুজ চশমা পরিয়ে চোখে ঘোরাবো
তেইশবার
সেলোটেপ লাগাবো এমন গোঁফ পাবে
না আর।
তাই চুপটি করে রও।
মন্ত্রী হয়ে থাকতে গেলে স্পিকটি নট
হও।
আমলারা সব চুপ, মন্ত্রীরা সব বোবা,
অকারণে এ বাজারে কে পেতে চায় সাজা।
তাই
একলা একলা দেশটি চালান
সবুজ দেশের রাজা!
লেখক পরিচিতি
ভীষ্মলোচন শর্মার পোশাকি নাম উৎপল মৈত্র। একদা দৈনিক বসুমতী কাগজে সাংবাদিক ছিলেন। বর্তমানে ‘বইওয়ালা’ নামে একটি প্রকাশনা সংস্থার সাথে যুক্ত। বর্তমানে নিয়মিত তাৎক্ষণিক emagazine এ নিয়মিত লেখেন। স্থায়ী নিবাস কলকাতায়।