ক্ষমতা থাকলে
থামিয়ে দিও
স্বাতীলেখা
ভেঙে-চুরে-ধ্বংস করেই ---
নতুন করে করবো শুরু--
ক্ষমতা থাকলে - থামিয়ে দিও।।
হাতের তালুতে মৃত্যু দেখেও--
নতুন আশেই হাত মেলাবো,
ক্ষমতা থাকলে - মৃত্যু দিও।।
প্রতিবাদের আগুন জ্বেলেই--
আত্মাহুতির যজ্ঞ করবো--
ক্ষমতা থাকলে - নিভিয়ে দিও।।
শিরদাঁড়া কে সোজা রেখেই--
লক্ষ্যভেদে এগিয়ে যাবো--
ক্ষমতা থাকলে - মরীচিকা দিও।।
কবি পরিচিতি –
বিগত প্রায় ১৪ বছর ধরে লেখালিখি-র সাথে যুক্ত আছেন।
------------------------------------------------------------------------------------
রম্য কবিতা
কুমার আশীষ রায়
খগেনবাবু লোকটা ভাল, বেজায়
গোবেচারা
সকাল সন্ধে খেটেই মরেন দুঃখ বুঝবে কারা
বিয়ের আগে ছিলেন তিনি সবার চেয়ে সুখী
বৌ আনলেন বিয়ে করে যেন ন্যাকা খুকী
লেখাপড়া জানা মেয়ে, নিরেট
গৃহবধূ
প্রথম থেকেই স্বামীটাকে করলো এমন জাদু
যখন তখন খগেনবাবু করেন অফিস কামাই
শ্বশুরবাড়ীর আদর খান সদ্য নতুন জামাই
একটা বছর পরে তাঁর রইলো না আর কদর
আরাম করে প্রিয় বধূ খাটায় না তার গতর
ক'দিন পরে যখন বৌ
হলেন গর্ভবতী
খগেনবাবুর অবস্থারও হ'ল
অবনতি
অফিস যাওয়া একেবারেই দিলেন তিনি ছেড়ে
বৌ'এর কাছেই থাকেন
বসে গৃহকর্ম সেরে
কন্যা এসে জন্ম নিল, খগেনবাবুর
ঘরে
স্বামী-স্ত্রী'র
মনে যেন আনন্দ না ধরে
সারাটা রাত থাকেন বসে শিশুকন্যা পাশে
ঘুমায়, জাগে, ছটপটিয়ে কাঁদে কিংবা হাসে
সময় মতো চলতে থাকে পালটানো তার কাঁথা
যতই আসুক ঘুম দু'চোখে
ঢুলতে থাকে মাথা
সারা রাত জেগে কি আর পারেন যেতে কাজে
ঘরের কাজেই ব্যস্ত তিনি বলেন না তা লাজে
দিবা-নিশি কন্যা-বৌ'এর
সেবায় গেলেন মেতে
ঘরের কাজের চাপে তিনি যেতেন ভুলে খেতে
একটু বড় হলে মেয়ে যখন যেত স্কুলে
ঢোকেন তিনি রান্নাঘরে নিত্যকর্ম ভুলে
পিছন থেকে হুকুম চলে, ধমক
সাথে সাথে
স্ত্রী-র গলা আসে ভেসে
"পেলাম না চা হাতে"
চা এর পরে চলতে থাকে জলখাবারের পালা
পত্নীদেবীর চীৎকারেতে কানে লাগে তালা
পাড়া পড়শী বলে "খগেন ছিল না তো এমন
কোন কাজই বিয়ের আগে করতো না সে তেমন
কাজে কর্মে ছিল অলস, ফুটতো
মুখে খই
বিয়ের পরে কথা তাকে বলতে দেখি কই
খগেন নাকি বৌ'কে
করে যমের মতো ভয়
তাইতো তার আঁচল ধরে অনেক কিছু সয়"
বৌকে খুশী করতে গিয়ে করে অনেক কিছু
ল্যাজ ফুলিয়ে বেড়াল হয়ে ঘোরে পিছু পিছু
তাঁর সঙ্গে হল দেখা, বাজার
যাবার পথে
শুধাই তাঁকে, দেখা
পাওয়া যায় না কোনমতে
বাষ্পরুদ্ধ কন্ঠে আমায় নিয়ে গেলেন কোণে
নিজের ব্যথা বলেন, যা
ছিল জমা মনে
"সারাটা দিন ঘরেই খেটে ক্লান্ত
হয়ে মরি
তুমিই বলো এছাড়া আর আমিই কিবা করি
লাগিনি তো বিয়ের আগে মা-এর
কোন কাজে
স্ত্রৈণ হয়ে এখন আমার অন্তরে তা বাজে
আমার মতো লাখে লাখে কত স্বামী পাবে
ছড়িয়ে আছে সারা দেশে যে বাড়ীতে যাবে
স্বপ্ন ছিল বিয়ে করে পাবো পরমানন্দ
দীক্ষা নিয়ে হলাম বৌ'এর
স্বামী ভৃত্যানন্দ"
কবি পরিচিতি :-
জন্ম মুর্শিদাবাদ, পশ্চিমবঙ্গ । সেখানে কিছুটা পড়াশোনা, পরে পাটনা ও শেষে দিল্লী থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক । কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক থেকে অবসরপ্রাপ্ত । সাহিত্য, সঙ্গীত, বই-পড়া, দর্শন, মনোবিজ্ঞান, যোগ-ব্যায়াম, আধ্যাত্মিকতা ও প্রেত-তত্ত্ব ইত্যাদিতে চর্চা । মুক্ত-চিন্তাবিলাসী ও কুসংস্কার বিরোধী । বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি।