নাম সংকীর্তন
ভীষ্মলোচন শর্মা
চিড়িয়াখানায়
চিড়িয়া কোথায়?
এ যে দেখি
খন্দ খানা
সপরিবার
বেড়াতে এসে
বলল সেদিন নন্দ জানা।
চিড়িয়াখানা
নাম কে দিল
হিসাবটা
তার করা চাই
‘পশুখামার’
নাম হলে
মানাতো
তাতে সন্দেহ নাই।
বাঘের
খাঁচায় বোঁটকা গন্ধ
চিড়িয়া হল
পগার পার
সিংহের
খাঁচায় এ জীবনে
প্রাণ
থাকতে ঢুকবে না আর।
হাতি আছে,
জিরাফ আছে
আছে
জলহস্তী
চিড়িয়ার
দেখা পেতে হলে
করতে হবে
কুস্তি।
দুনিয়ার
পশুদের
আজব
কারখানা
তবু দেখো
নাম তার
হল যে
চিড়িয়াখানা।
চিড়িয়ারা
প্রতিবাদ
করেছিল
একযোগে
আমাদের
নাম কেন
লাগবে
লোকের ভোগে।
নাম নিয়ে
হানাহানি
চলছে যে
চারদিকে
আকাশী
রঙকে লোকে
আজও বলে
থাকে ফিকে।
লাল সবুজ
হয়
সবুজ হয় গেরুয়া
মুখে তিন
রঙ মাখে
গণপতি
বড়ুয়া।
পৃথিবী
সবুজ নাকি
বলে আজ
রামা শ্যামা
জামাটাকে
বদলালে
সব
পালোয়ান ‘গামা’।
গড়ে
তোলো ভাই সব
চারিদিকে
প্রতিবাদ
ভুল ভাল
নামগুলো
হয়ে যাক
বরবাদ।
‘পশুখামার’
মন্দ নয়
হাসপাতালের
সঠিক নাম
জাবর কাটে
মানুষ সেথায়
চুলোয়
যায় দিনের কাম।
একদিন নয়,
দুদিন নয়
হাজিরা
চাই নিত্যদিন
ডাক্তারবাবু
আজ আসেন তো
আসেন না
আর পরের দিন।
রোগী না
এলে পরের দিন
ডাক্তারের
গাল মন্দ
ডাক্তারবাবু
না এলে পরে
চেম্বারটা
সেদিন বন্ধ।
ডাক্তারবাবু
বিরাট মানুষ
থাকতে
পারে জরুরি কাজ
হয়তো
তিনি কিনতে গেছেন
নিউমার্কেটে
বিয়ের সাজ।
আদালতে
প্রায়ই শুনি
আজকে নাকি
কর্ম ‘নট’
বেড়াল
মরেছে বড় উকিলের
তাই আজকে
ধর্মঘট।
অফিসগুলোয়
শুনি নাকি
একটা বছর
তেইশ মাসে
কর্মীরা
সব অকুতোভয়
ইউনিয়ন
তাদের পাশে।
গোঁফ
গজালে পরীক্ষা দিলে
চাকরি
পাবে চুল পাকলে
তাও আবার
জজসাহেব
বিরাট এক
ধমক দিলে।
নামগুলো
পাল্টানো হোক
মানুষ
এবার তুলুক দাবি।
নইলে যে
আমজনতা
দিন
রাত্তির খাচ্ছে খাবি।
চিড়িয়াখানা
বদলে ফেলে
নাম রাখা
হোক পশুর থানা
চিড়িয়াগুলো
সন্ধ্যে হলে
খাবে এসে ছোলার
দানা।
হাসপাতাল
বদলে যাক
ওটা হোক
ওয়েটিং রুম
ট্রেন
আসলে বাজবে ঘন্টি
ভাঙবে
সবার কাঁচা ঘুম।
লেখক পরিচিতি
ভীষ্মলোচন
শর্মার পোশাকি নাম উৎপল মৈত্র। একদা দৈনিক বসুমতী কাগজে সাংবাদিক ছিলেন। বর্তমানে ‘বইওয়ালা’ নামে একটি
প্রকাশনা সংস্থার সাথে যুক্ত। স্থায়ী নিবাস কলকাতায়।
************************************************
নন্দঘোষ
ড. প্রকাশ অধিকারী
আমাদের অনেক দোষ
আমরা নন্দঘোষ---
ঈশ্বরকে ভগবান নামে
চিনি
সর্বশক্তিমান যিনি
তাঁকেই সর্বরূপে
দেখি...
সর্বভূতে বিরাজমান
ঈশ্বর-প্রেমের কলঙ্ক
স্বেচ্ছায়
গায়ে মাখি ।
আমাদের অনেক দোষ
আমরা নন্দঘোষ---
সন্তান নাম মাতৃভাষায়
রাখি
মাতৃভূমিকেই তীর্থভূমি
বলে মানি...
যত মত তত পথের রথের রশি
আমরণ টানি---
কার কী স্বার্থহানি !
কবি পরিচিতি :
জন্ম দিনাজপুর শহরে (১৩৬০ বঙ্গাব্দে)। অবসরপ্রাপ্ত বাণিজ্য
বিষয়ের অধ্যাপক। উত্তরবঙ্গের লেখক। উল্লেখযোগ্য বই : " ছোট প্রাণ,
ছোট ব্যথা" (
অণু- কাব্য-গ্রন্থ ) , "গল্পের আঁকিবুকি" ( গল্প- গ্রন্থ ), " The
Least Developed SAARC Members : Bangadesh, Bhutan, Nepal & Maldives" (প্রবন্ধ-গ্রন্থ
) ইত্যাদি ।
বঙ্গ ও বর্হিবঙ্গের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখেন ।