Advt

Advt

নদী - দীনেশ চন্দ্র দাস, Nadi by Dinesh Chandra Das, Tatkhanik Bangla / Bengali Free Web / Online Magazine

নদী

দীনেশ চন্দ্র দাস, নতুন দিল্লি


আমি বাধাহীন গতি, আমি চঞ্চল দিশাহারা
পথকেটে চলে দিই।
নিত্য নতুন সৃষ্টিকে সাড়া।
ফুটেছে আম্র মুকুল গন্ধ ঢেলেছে বকুল
উড়ায়ে স্খলিত নীল আঁচল
নাচি আদিম উদ্যমে
আমি উজ্জ্বল শুকতারা।


আমি লাবণ্যে ষোড়শী আমি তন্বী চপলা,
অশনি ভীষণ বিদ্যুৎ অধরা
আমি দুর্দৰ্ম সবলা।
যবে যৌবন পরশে অন্তর জাগে হরষে
বিস্মিতা আমি নতুন প্রকাশে
অধীর কামনা বিবশে
আমি হই নবীন জীবনের আশা।


উচ্ছলিত আমি পাহাড়ে সমতলে আনি প্রাণ বন্যা,
আমি প্রমত্ত ভরা যৌবনে
অঝরে ঝরা শুভ্র তুষার কন্যা।
মুষল বারি বরষণে মাটির অধর চুম্বনে।
আমি ভুলেছি শ্রান্তি
হয়েছি প্রশান্ত সার্থক সুখী ধন্যা।


আমি আকাশের বান্ধবী - লাবণ্য সুরভিতে পূর্ণ
শাশ্বত যুবতী উর্বশীর
অহঙ্কারে করি চূর্ণ।
কাজল কেশ উড়ায়ে মেঘে মেখলা এলায়ে
মাদল মায়াবী হাসি ছড়ায়ে

প্রকৃতির কণ্ঠ জড়ায়ে
আমি অজেয়, গৌরবে পূর্ণ।


আমি চিরন্তন কল্যাণী মানুষের নন্দিতা বরাভয়
প্রেরণা উপাদান ফলদায়ী
সকল কাজে সদাশয়।
বন্যা বিদ্ধস্ত কুটিরে কিম্বা শুষ্ক বালুচরে
যারা বুভুক্ষু রুগ্ন কাঁদে ভয়ে
আমি তাদের বুকে ঢালি
সাহস ভরসা এবং অভয়।


যখন আমি রুদ্র বিভীষিকা তখন বিনাশ হয় ধর্ম
গতি ত্রিশূলের আঘাতে
চূর্ণ করি মাথা বক্ষ বর্ম।
প্রলয় যজ্ঞের আগুনে
করি নটরাজের আরতি নৃত্য
খরস্রোতে হয় সকলে নিবৃত্ত,
ভৈরবী প্রচন্ড আমি
ধ্বংসই হয় একমাত্র কর্ম।


আমি স্বাধীন খেয়ালি মানি না প্রবাহে বাধা বা ক্ষান্তি
ভাসিয়ে নিয়ে চলি।
যা আসে পথে নেই তাতে ক্লান্তি।
আঁধার বা জোছনা রাতে
মুখর অথবা নীরব প্রাতে।
আমি সেই তরঙ্গিত প্রবাহ
চিরন্তন যাত্রী চলি দেশে বিদেশে
জানি না বিরাম বা শ্রান্তি।

কবি পরিচিতি -

স্কুল-কলেজ পেরিয়ে উচ্চশিক্ষা পান আই টি খরগপুর, নেডারল্যান্ডস্‌ ও জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ইউ এস এ -তে । কর্মক্ষেত্র উত্তর প্রদেশ-এর তরাই অঞ্চলের গ্রাম, ভারত সরকার-এর অধীনে অরুণাচল-এ, (শিলং-এ থেকে), উটি (তামিলনাড়ু), দেরাদুন-এ (উত্তরাখণ্ড) , কৃষি এবং পরিবেশ মন্ত্রালয়, দিল্লি-তে।

দিল্লির ৩৪ পল্লীর কালীবাড়ির সাথে যুক্ত আছে বিগত ৩০ বছর ধরে। ১৯৪৮ সাল থেকেই লেখেন কিন্তু প্রথম প্রকাশন ২০১৫-তে। কবিতা , গল্প, ভ্রমণ কাহিনী ও প্রবন্ধ ছাপতে থাকে দিল্লির পত্র-পত্রিকাগুলোতে। কলকাতা এবং ভারতবর্ষের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লেখেন। প্রথম বই ' অনুভূতি বহুরূপে'। অনেক বই প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে দিল্লিথেকে প্রকাশিত ম্যাগাজিন ' কলমের সাথ রঙ' পত্রিকার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত এবং উচ্চপদে আছেন।