উল্লোল সরকারি ঠিকাদার। কিছুদিন মনটা
বিক্ষিপ্ত। নতুন অফিসার এসেছেন। সৎ অফিসার হিসাবে পরিচিত। বিল খুঁটিয়ে দেখে
তবেই পাশ করে । বিলে খুত দেখলেই আটকে দেয়। একই কারণে উল্লোলের অনেক বিল আটকে।
চারিদিকে অনেক ধার। পাওনাদারেরা তাগাদা দিচ্ছে। অফিসারের সঙ্গে দেখা করে অপমানিত
হতে হয়েছে। সেদিন অন্যমনস্ক হয়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে একটি চলন্ত গাড়ির সামনে পরে।
পিছনের সিটে বসা সুবেশ ভদ্রলোক বেরিয়ে বলে,” উল্লোল না? আমায় চিনতে পারিস? আমি একাত্মা।”
একাত্মা ছিল ওর কলেজের সহপাঠী ও
প্রিয় বন্ধু। সহজ সরল সাদাসিধে একাত্মাকে দামি সাহেবি পোষাকে দামি গাড়িতে দেখে
অবাক হয়। উল্লোল চিনতে পারে। একাত্মা ওকে জড়িয়ে ধরে। জোর করে গাড়িতে উল্লোলকে
তোলে। বলে,“কতদিন পরে
দেখা। ব্যস্ত নয় তো? চল, একটা হোটেলে দুজনে লাঞ্চ করি।”
দামি হোটেলে খেতে খেতে দুজনের ওদের নান-ধরণের
কথা হয়। অন্য মনস্ক হয়ে রাস্তা কেন পার হচ্ছিল জানতে চায়। উল্লোল নিজের দুঃখের
কথা বলে। একাত্মা অফিসারের সম্বন্ধে খোঁজ খবর নেয়। সব জেনে বলে,“তুই সোমবার ভদ্রলোকের সাথে দেখা
করবি। তোর বিল পাশ হয়ে যাবে।”
“ তোরা চেনা ?”
“আমার ব্যবসার জন্য অনেকেই আমার চেনা।”
আজ
আবার হোটেলে উল্লোল ও একাত্মা মুখোমুখি। উল্লোল বলে, “তোকে কি বলে ধন্যবাদ দেব জানা নেই। বিল পাস না হলে আমাকে
পথে বসতে হতো। অধীরা কে?”
“এই নাম জানলি কি করে?”
“অফিসার
বলেছিল,‘আপনি
অধীরার কাজিন জানতাম না। আপনার সাথে সেদিন খারাপ ব্যবহার করেছি। ভুলে যাবেন।”
হেসে একাত্মা বলে, “অফিসারের বউর নাম অধীরা। আমার
ব্যবসার ক্লায়েন্ট।”
“কিসের ব্যবসা তোর?”
“আদিম ব্যবসা। আমি একজন জিগালো।”